বারহাট্টার কৃতি সন্তান সৈয়দ আরিফ আজাদ এক উজ্জ্বল নক্ষত্র

১৮০

ওমর ফারুক আহম্মদ,জেলা প্রতিনিধি(নেত্রকোণা বারহাট্টা):
বারহাট্টা উপজেলা একজন আলোকিত বাবার স্বপ্ননায়ক, মানবতার ফেরিওয়ালা, মৎস্য অধিদপ্তরের স্বর্ণজয়ী সাবেক মহাপরিচালক, লেখক, প্রকাশক, ঔপন্যাসিক, দানশীল ব্যক্তিত্ব, মেধাবী ও রত্নভান্ডারের অভিভাবক, শ্রদ্ধেয় সৈয়দ আরিফ আজাদ সম্রাট ১৯৫৯ সালের ১৮ মার্চ রত্নগর্ভা মায়ের জ‍্যেষ্ঠ সন্তান হিসেবে পৃথিবীতে আগমন করে মায়ের কোল আলোকিত করেছিলেন। তার বাবা সৈয়দ আনোয়ারুল হক এবং মাতা আনোয়ারা বেগম।

স্কুলজীবনের শুরু থেকেই একজন মেধাবী ছাত্র হিসেবে পথযাত্রা শুরু করেছিলেন। যিনি শিক্ষা জীবন বাউসী থেকে শুরু করে, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ময়মনসিংহ
এর মৎস্য বিজ্ঞান অনুষদ থেকে ১ম শ্রেণীতে ১৯৮১-৮২ শিক্ষাবর্ষে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন এবং কানাডার ডালহৌসি
বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ম‍্যারিন ম্যানেজমেন্ট বিষয়ে কৃতিত্বের সাথে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। পরবর্তীকালে তিনি জেন্ডার রিলেশনস টু একোয়াকালচার বিষয়ে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। কর্মজীবনে ১৯৮২ সালের বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে তিনি বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা হিসেবে কর্ম জীবন শুরু করেন। সুদীর্ঘ চাকুরী জীবনে সততা, দক্ষতা ও সুনামের সাথে মৎস্য অধিদপ্তরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে সফলভাবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ইতালির রোমে অনুষ্ঠিত জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা কর্তৃক আয়োজিত কমিটি অন ফিশারিজ এর সম্মেলনে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের সদস্য হিসেবে একাধিক বার যোগদান করে, বিশেষ কৃতিত্বের স্বাক্ষর রাখেন।

জনাব সৈয়দ আরিফ আজাদ ২৫ আগস্ট ২০১১ খ্রি. তারিখে মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক নিযুক্ত হন। অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলে অভ‍্যন্তরীন মৎস্য উৎপাদনে বিশ্বে বাংলাদেশ ৩য় স্থান অর্জন করে। বাংলাদেশে ইলিশ উৎপাদন ও উন্নয়নে তার অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে। এ ছাড়া মৎস‍্য রপ্তানির বাঁধা দূরীকরন, সামুদ্রিক মৎস‍্য ব‍্যবস্থাপনায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন সহ দেশের মৎস্য সম্পদ উন্নয়নে তিনি অসামান্য অবদান রাখেন। যার স্বীকৃতি স্বরূপ তার নেতৃত্বে মৎস্য অধিদপ্তর ২০১৮ সালের ১ মার্চ জাতীয় বঙ্গবন্ধু কৃষি পুরস্কার (স্বর্ণপদক) লাভ করে।

তিনি রাষ্ট্রীয় ও দাপ্তরিক কাজে আমেরিকা, ইংল‍্যান্ড, জার্মানি, ইতালি , ডেনমার্ক, নরওয়ে, বেলজিয়াম, ফ্রান্স, অষ্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকা, ব্রাজিল, মিশর, সেনেগাল, চীন, ফিলিপাইন, সিংগাপুর, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম, হংকং, ভারত সহ বহুদেশ সফর করেন। বিভিন্ন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক জার্ণালে জনাব আজাদের উল্লেখযোগ্য সংখ্যক প্রকাশনা রয়েছে।

তিনি ছাত্র জীবন থেকে সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কার্যক্রমের সাথে সক্রিয়ভাবে জড়িত ছিলেন। কৃষি বিশবিদ‍্যালয়ে টিএসসি নাট‍্য সংসদ শাপলা এর সাধারণ সম্পাদক (৭৯-৮১), শহীদ শামসুল হক হল শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি (১৯৮০-৮১), বিটিভি আন্তহল বিশ্ববিদ্যালয় বিতর্ক প্রতিযোগিতায় হল এর সদস‍্য (৭৯-৮১) এবং পরবর্তীতে দল নেতার দায়িত্ব পালন করেন (৮১-৮২)। তার নেতৃত্বে শহীদ শামসুল হক হল আন্তহল বিতর্ক প্রতিযোগিতায় ১৯৮২ সালে চ‍্যম্পিয়ন হয়। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট‍্যদলের অন‍্যতম সদস‍্য ছিলেন।
চাকুরী জীবনে তিনি বিসিএস মৎস্য ক্যাডারের মহাসচিব হিসেবে দীর্ঘদিন দায়িত্ব পালন করেন। তিনি বাংলাদেশ জুয়োলজিক্যাল সোসাইটির আজীবন সদস্য। তিনি কৃষিবিদ ইনস্টিটউশন, বাংলাদেশ এবং বাংলাদেশ সাহিত্য পরিষদেরও কার্যকরি পরিষদ সদস্য। তিনি বঙ্গবন্ধু কৃষি পরিষদের সদস্য। তিনি ছাত্র জীবন থেকে শুরু করে কর্মমযজীবন যখন যেখানে পা রেখেছেন সেই জায়গাতেই নিজের মেধা, প্রজ্ঞাকে কাজে লাগিয়ে উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে সক্ষম হয়েছেন এবং তারই ফসল বর্তমানে শ্রদ্ধেয় সৈয়দ আরিফ আজাদ ওয়ার্ল্ড ব্যাংক গ্রুপ, (World Bank, HO, Washington DC) ওয়া‌শিংটন ডি‌সি এর কনসালট্যান্ট হি‌সে‌বে বাংলা‌দেশ থে‌কে দা‌য়িত্ব পালন করছেন। তিনি আন্তর্জাতিক সংস্থা ওয়াইল্ড লাইফ কনজার্ভেশন সোসাইটির বাংলাদেশ প্রোগ্রামে সিনিয়র ম‍্যারিন এডভাইজার। তার দুই ছেলে মেয়ে ডা. সৈয়দা রামনুমা আরিফ ও ডা. সৈয়দ রিফাত বিন আরিফ উভয়ই চিকিৎসক। স্ত্রী রাবেয়া আক্তার অবসরপ্রাপ্ত ব‍্যাংকার।

ছোটভাই সৈয়দ সারোয়ার জাহান বিএডিসির উপপরিচালক। ছোটবোন ময়মনসিংহ জেলা নারী নির্যাতন প্রতিরোধ কমিটির সম্পাদিকা, গোধূলি সিবিপি এর প্রধান, নারী উদ‍্যোক্তা সৈয়দা সেলিমা আজাদ। মেধা কাকে বলে জানি না, শুধু এইটুকু নিজের কাছে নিজেই জিজ্ঞেস করি, কি করলে, কোন পথ অবলম্বন করলে একজন সৈয়দ আরিফ আজাদ হওয়া যায়।

100% LikesVS
0% Dislikes
Leave A Reply

Your email address will not be published.