শৈলকুপায় একই ব্যক্তি দুই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, এলাকাজুড়ে তোলপাড়।

 

সাইফুল ইসলাম,স্টাফ রিপোর্টার।ঝিনাইদহের শৈলকুপায় সাখাওয়াত হোসেন বিশ্বাস নামে এক শিক্ষকের দুই ইনডেক্স ও একটি বিদ্যালয়ে সহকারী প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ নিয়ে এমপিও ভুক্তি হওয়ার পায়তারা করার অভিযোগ উঠেছে। তথ্য অনুসন্ধানে জানা গেছে, শৈলকুপা উপজেলার নাগিরাট মকরমপুর দাখিল মাদ্রাসার ক্রীড়া শিক্ষক সাখাওয়াত হোসেন বিশ্বাস (ইনডেক্স ক ৩৭৪২৬১)। অথচ তথ্য গোঁপন করে একই উপজেলার ধাওড়া মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সাত্তার শিকদার কলেজে নিয়োগ প্রাপ্ত হয়ে এমপিও ভুক্ত হন (ইনডেক্স ঘ ৫৬৭৯৬০১৯) ইনডোর এখনও বহাল। এর পরও উপজেলার মৌবন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে সহকারী প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগ প্রাপ্ত হয়ে যোগদান করে এমপিও ভুক্তির জন্য দৌড়ঝাপ শুরু করেছেন। আরো জানা গেছে, সাখাওয়াত হোসেন বিশ্বাস মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সাত্তার সিকদার কলেজে ক্রীড়া শিক্ষক হিসাবে কর্মরত আছেন। তার এমপিও ইনডেক্স ঘ৫৬৭৯৬০১৯। তিনি নিয়মিত বেতন ভাতা ভোগ করছেন যা তার ব্যাংক হিসাব দেখলেই প্রমাণ মেলবে। অভিযোগ আছে, মৌবন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের যোগসাজশে মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে গত ০১.০৩.২০২৩ তারিখ থেকে সহকারী প্রধান শিক্ষক হিসাবে যোগদান করেন এবং স্কুল কর্তৃপক্ষ থেকে বেতন ভাতাদি গ্রহণ করে আসছেন। পাশাপাশি একাধিকবার এমপিও আবেদন করেছেন। তবে তা বাতিল হয়েছে। বাতিল হচ্ছে তার কারণ স্পস্ট যে তিনি শিক্ষাগত যোগ্যতা অর্জন করার পূর্বেই শিক্ষক হিসাবে যোগদান করেন। যে অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে তিনি সহকারী প্রধান শিক্ষক হিসাবে যোগদান করেন। তিনি নাগিরাট-মকরমপুর দাখিল মাদ্রাসায় (প্রতিষ্ঠান নাম্বার: ৫৬০৬১৬২১০১) প্রতিষ্ঠাকালীন ক্রীড়া শিক্ষক হিসাবে ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারী মাস পর্যন্ত কর্মরত ছিলেন ও বেতন ভাতা ভোগ করেছেন। মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তর এর অধীনে থেকে তিনি বেতন ভাতা ভোগ করে এসেছেন, একই সাথে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের অধীনে থেকে মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সাত্তার সিকদার কলেজ এ ২০১৬ সালে যোগদান করে ২০১৯ সালের জুন মাস থেকে ক্রীড়া শিক্ষক হিসাবে নবম গ্রেডে (১০ম গ্রেড) বেতন ভাতাদি ভোগ করছেন, যা নীতির চরম লংঘন। মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সাত্তার সিকদার কলেজে চাকরীর তথ্য গোপন করে মৌবন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে চাকরীতে যোগদান চাকরী আইন অনুসারে বৈধ নয়। অর্থাৎ মৌবন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে (ইআইএন- ১১৬৭৯৪) সহকারী শিক্ষক হিসাবে চাকরির কোন আইনগত বৈধতা নেই। বর্তমান মৌবন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তার নিকটতম আত্মীয় হওয়ায় তার এই তথ্য গোপন করে চাকরির সুযোগ করে দেন।

ধাওড়া মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সাত্তার সিকদার কলেজের অধ্যক্ষ আবু বকর বলেন, ‘সাখাওয়াত হোসেন বিশ্বাস খুব চতুরতার সাথে সবসময় দুটি চাকরীর বেতন ভাতা ভোগ করে আসছেন। তিনি তথ্য গোপন করে মৌবন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে সহকারী প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন। বিষয়টি জানার পরে আমরা তার বেতন ভাতা রেজুলেশন করে বন্ধ করেছি। এছাড়া প্রতিষ্ঠানের সভাপতির সাথে আলোচনা করে তাকে দ্রুতই চাকরি থেকে অব্যাহতি প্রসঙ্গে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

এ বিষয়ে মৌবন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দিদার হোসেন বলেন, ‘তিনি কলেজ থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন তবে ইনডেক্স ডিলিট হয়নি। ইনডেক্স ডিলিট করা ওই প্রতিষ্ঠান প্রধানের দায়িত্ব। বিষয়টি জানার পর আমি তাকে বলেছি আমার প্রতিষ্ঠানে থাকতে হলে আগের ইনডেক্স ডিলিট করে আবার নতুন করে ফাইল জমা দিতে হবে।’ নিজের নিকটতম আত্মীয় হওয়ায় মোটা অঙ্কের ঘুষ বাণিজ্যের মাধ্যমে নিয়োগের বিষয়টি তিনি অস্বীকার করে বলেন, ‘নিজের আত্মীয়ের জন্য মৌখিক সুপারিশ করতেই পারি।

এসব নিয়ে অভিযুক্ত শিক্ষক সাখাওয়াত হোসেন বিশ্বাস বলেন, ‘আমি চাকরি থেকে অব্যাহতি দিয়েছিলাম। কিন্তু প্রতিষ্ঠান থেকে ডিলিট করেনি। আমার এটাই অপরাধ তাছাড়া কোনোই ক্রুটি নেই।’ নিয়মিত বেতন ভাতা গ্রহণ নিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি একটা টাকাও তুলিনি।’
শৈলকুপা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার সুলতান আলী বলেন, বিষয়টি সম্পর্কে তিনি অবগত হয়েছেন। শীঘ্রই যথাযথ ব্যবস্থা নেবেন।

50% LikesVS
50% Dislikes
Leave A Reply

Your email address will not be published.