কক্সবাজারে শুরু হচ্ছে তিনদিন ব্যাপী ইজতেমা ।

৩৩

মোহাম্মদ নূরুন্নবী, কক্সবাজার প্রতিনিধি ।বিশ্ব ইজতেমা ও তাবলিগকে ধর্মীয় পর্যটন ঘোষণা এবং কক্সবাজার ঈদগাঁও মাঠ সরকারি প্রশাসক নিয়োগের দাবিতে লিগ্যাল নোটিশ দেয়া হয়েছে।

গত শুক্রবার বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশনের চেয়ারম্যান ও কক্সবাজার ঈদগাঁও মাঠে মসজিদে তাবলিগের প্রধানকে নোটিশের প্রাপক করা হয়েছে।

কক্সবাজারে বিশ্ব ইজতেমা আয়োজন করার কথা বলা হয়েছে। কক্সবাজার এমপি মহোদয় সাইমন সরোয়ার কমল বলেন এক্ষেত্রে বিদেশীরা যাতে সরাসরি বা ট্রানজিট ফ্লাইটে কক্সবাজারে সহজেই আসতে পারেন সে ব্যবস্থাপনা করতে হবে। আর ইজতেমায় আগত মুসল্লিদের পর্যটনের সুবিধা দিয়ে তাদের ব্যাপক নিরাপত্তা দেয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। ১২ দিনের মধ্যে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। অন্যথায় সংশ্লিষ্টদের বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের হুঁশিয়ারি দেয়া হয়েছে। ঈদগাঁও ময়দানে আমার প্রতি বছর এই আয়োজনটি করে থাকি ‌‌মুসলিমের সমাগম উপস্থিতি সমাবেশ বিশ্ব ইজতেমা কক্সবাজারের জন্য শুভকামনা রইল ‌।

তিনি আরো বলেন,সারাবিশ্বে মুসলমানদের সবচেয়ে বড় মহাসমাবেশ হলো পবিত্র হজ। প্রতিবছর হজের নির্ধারিত সময় ছাড়াও সারাবছর বিশ্বের মুসলিমরা ওমরাহ পালন করেন। হজ ও ওমরাহ থেকে সৌদি আরব বিপুল পরিমাণ অর্থ আয় করে। রয়টার্সের রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০১৯ সালে এক বছরেই সউদী আরব হজ ও ওমরাহ থেকে ১২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার আয় করেছ।

যা বাংলাদেশী টাকায় প্রায় ১ লাখ ৩২ হাজার কোটি টাকা (প্রতি ডলার ১১০ টাকা হিসাবে)।বিশ্বে বৃহৎ মুসলিম জমায়েত হচ্ছে বিশ্ব ইজতেমা। এছাড়া সারাবছর তাবলিগ কার্যক্রমের নিয়ম রয়েছে। বিশ্ব ইজতেমা ও তাবলিগের কার্যক্রমে বিপুল সংখ্যায় বিদেশী মুসলিম পর্যটককে আকৃষ্ট করে বাংলাদেশে আনতে পারলে বাংলাদেশ প্রতিবছর কয়েক বিলিয়ন ডলার বৈদেশিক মুদ্রা আয় করতে পারবে। বাংলাদেশের সামষ্টিক অর্থনীতির ব্যাপক উন্নয়ন হবে।

কিন্তু অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় এই যে, বাংলাদেশ সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যর্থতা, উপমহাদেশীয় ষড়যন্ত্র এবং কিছু ধর্মীয় নেতার পারস্পরিক হিংসাত্মক দ্বন্দ্বের কারণে বাংলাদেশে তাবলীগের কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। এ কারণে বিশ্ব ইজতেমা দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েছে। এতে সারাবিশ্বের মুসলিমদের কাছে বাংলাদেশ সম্পর্কে নেতিবাচক বার্তা যাচ্ছে।

এছাড়া বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশের দূতাবাসগুলোর ব্যর্থতার কারণে বাংলাদেশ এ অপার সম্ভাবনাময় ধর্মীয় পর্যটনের অর্থনৈতিক সুযোগ কাজে লাগাতে পারছে না। ফলে বাংলাদেশ প্রতিবছর কয়েক বিলিয়ন ডলারের আয় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। মুসলিম বিশ্বে শক্তিশালী প্রভাব অর্জন করতে ব্যর্থ হচ্ছে। বাংলাদেশ একটি মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ। বাংলাদেশের পক্ষে পাশ্চাত্যের দেশগুলোর মতো অবাধ যৌনতা বিকিনি অ্যালকোহল ক্যাসিনোভিত্তিক পর্যটন খাত তৈরি করা সম্ভব নয়। এক্ষেত্রে ধর্মীয় পর্যটন বাংলাদেশের একটি ব্যাপক সম্ভাবনাময় খাত। বাংলাদেশ যদি প্রতিবছর বিশ্ব ইজতেমা উপলক্ষে কমপক্ষে ১০ লাখ বিদেশী মুসলিম পর্যটক বাংলাদেশে আনতে পারে তাহলে এর মাধ্যমে প্রতিবছর বাংলাদেশ কয়েক বিলিয়ন ডলার আয় করতে পারবে।

এছাড়া এসব মুসলিম পর্যটক বাংলাদেশের বিভিন্ন পণ্য ক্রয় করবেন; যার মাধ্যমে বাংলাদেশের অর্থনীতির ব্যাপক উন্নয়ন হবে । সারা মুসলিম বিশ্বে বাংলাদেশী পণ্যের প্রচার, প্রসার ও চাহিদা তৈরি হবে। এর মাধ্যমে বাংলাদেশের অর্থনীতির উন্নয়নের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের প্রভাব-প্রতিপত্তি বাড়বে। এছাড়া তাবলিগের কার্যক্রম যেহেতু সারাবছর চলমান থাকে তাই বিপুল সংখ্যক বিদেশি মুসলিম পর্যটকের আগমনে বাংলাদেশের অর্থনীতি সারাবছর উপকৃত হবে।

100% LikesVS
0% Dislikes
Leave A Reply

Your email address will not be published.