ডেস্ক রিপোর্টঃ ভোলার কৃতি সন্তান ও আধুনিক ভোলার উন্নয়নের রুপকার মরহুম নাজিউর রহমান মঞ্জুর আজ ১৩তম মৃত্যুবার্ষিকী। যিনি শুধু ভোলা বাসীর জন্য গৌরবের ছিলেন না, ছিলেন অবিভক্ত ঢাকার মেয়রও। নাজিউর রহমান মঞ্জুর ১৯৪৯ সালের ১৯ মার্চ ভোলা জেলার উত্তর দিঘলদী ইউনিয়নের বালিয়া গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। ০৬ই এপ্রিল ২০০৮ তারিখে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। তিনি ভোলা বাসীর জন্য রেখে গেছেন বড় ছেলে পরিচ্ছন্ন মেধাবী রাজনীতিবিদ আন্দালিভ রহমান পার্থ কে। যিনি বর্তমানে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান। আর মেঝো ছেলে অর্থনীতিবিদ আশিকুর রহমান শান্ত। ছোট ছেলে ওয়াশিকুর রহমান অঞ্জন। যিনি বাবার ব্যবসা বানিজ্য দেখাশোনা করেন। আজ তার ১৩তম মৃত্যুবার্ষিকী পালিত হচ্ছে।
জনাব নাজির রহমান মঞ্জুর ব্যক্তিগত জীবনে একজন বিশিষ্ট শিল্পপতি। ব্যাক্তি জীবনে সফলতার সাথে যুক্ত ছিলেন বিভিন্ন ধরনের সংঘঠনের সাথে, যথাযথ নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করেছেন অসংখ্য সংগঠনের। জনাব মঞ্জুর বাংলাদেশ বাণিজ্য সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি ছিলেন এবং তার নেতৃত্বে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কমার্স ফ্যাক্যাল্টি প্রতিষ্ঠিত হয়। মুক্তিযুদ্ধের সময় ৯নং সেক্টরে তিনি সক্রিয় অংশগ্রহণ করেন এবং ভোলাতে পাক হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রত্যক্ষ যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। নাজিউর রহমান ১৯৬৯ সালের গণ-আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন। তিনি বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যকরী সংসদের সদস্য ও হুসাইন মুহাম্মদ এরশাদের ১৮ দফা বাস্তবায়ন পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। তৎকালীন সময়ে জাতীয় পার্টি (জাপা)’র মহাসচিবের দায়িত্ব পালন করেন। তিনি চারদলীয় ঐক্য জোটের বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি (বিজেপি) শরীক দল ছিলেন। তাছাড়াও ১৯৮৬ সালে তিনি জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের পূর্বে নাম ছিল ঢাকা মিনিসিপাল কর্পোরেশন তা পরিবর্তন করে তার নাম দেন ঢাকা সিটি কর্পোরেশন। তিনি ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র হিসেবে দক্ষতার পরিচয় দেন। এরশাদের আমলে তিনি ছিলেন পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় দফতরের মন্ত্রী।
আধুনিক ভোলার অন্যতম ও রুপকার হলেন এই নাজিউর রহমান মঞ্জু। যার হাত ধরেই ভোলার শিক্ষা, চিকিৎসা, রাস্তা-ঘাট, বিভিন্ন সরকারি অফিস, আদালত, বিদ্যুৎ,গ্যাস হতে শুরু করে প্রতিটা সেক্টরে অগণিত উন্নয়ন হয়। নাজিউর রহমান নিজের উদ্যোগে ভোলাতে ১টি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, ৫০টির মত হাই স্কুল, ৮টি মাদ্রাসা এবং ৪টি কলেজ প্রতিষ্ঠা করেছেন। স্বাস্থ্য সেবার মান উন্নয়ন স্বাস্থ্য সেবা জনগনের দোড় গোড়ায় পৌছে দেয়ার জন্য তিনি গ্রাম পর্যায়ে কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপন করেন। এর পাশাপাশি তিনি বিভিন্ন সময়ে অসহায় দুস্থ দের সেবা দেয়ার জন্য বিনা মূল্যে মেডিকেল ক্যাম্প স্থাপন করতেন। এবং বিনা মূল্যে ঔষধ প্রদান করতেন। তিনি জেলার চিকিৎসা সেবার জন্য ভোলা সদর হাসপাতাল নির্মান করেন। সদর হাসপাতালে তিনি প্রথম রক্ত দান করে একটি ব্লাড ব্যাংক স্থাপন করেছিলেন।
যোগাযোগ ব্যাবস্থা ভোলা জেলার সর্বস্তরের জনগনের যোগাযোগের সুবিধার জন্য তিনি রাস্তা-ঘাট , ব্রিজ , কালবার্ট নির্মান করেন। তিনি প্রথম ভোলা চরফ্যাশন সড়ক নির্মান করেন। গ্যাস উত্তোলনের ব্যবস্থা ও বিদ্যুৎ প্ল্যান্ট স্থাপন সহ তাঁর আমল থেকেই শাহবাজপুর গ্যাস উত্তোলন শুরু হয়। এবং ভোলাকে বিদ্যুের চাহিদা মেটানোর জন্য ৬ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ প্ল্যান্ট স্থাপন করেন। তিনি জেলা প্রশাসক ভবন ,এসপি অফিস, উপজেলা ভবন, জজকোর্ট ,পার্ক সহ অসংখ্য স্থাপনা স্থাপন করেন। তিনি ঢাকার সাথে ভোলার যোগাযোগের জন্য লঞ্চ টার্মিনাল নির্মান ও লঞ্চ যাতায়াতের ব্যবস্থার সুযোগ করে দেন।