মাউথ টেপিং কী? ঘুমানোর আগে মুখে টেপ লাগানো উপকার নাকি ক্ষতি

লাইফস্টাইল স্পেশাল

কয়েকদিন ধরে সামাজিক মাধ্যমে ঘুম সংক্রান্ত একটি নতুন ট্রেন্ড খুব জনপ্রিয় হয়েছে। যার নাম মাউথ টেপিং। অনেকের দাবি, রাতে ঘুমানোর সময় মুখে টেপ লাগিয়ে রাখলে ঘুম ভালো হয়, নাক ডাকা কমে এবং শরীর আরো সুস্থ থাকে। কিন্তু এই পদ্ধতি কি সত্যিই নিরাপদ? নাকি এর মধ্যে লুকিয়ে আছে বড় ঝুঁকি? আর তা জানুন আজকের প্রতিবেদনে।

মাউথ টেপিং কী

মাউথ টেপিং হলো, ঘুমানোর আগে ঠোঁটের ওপর হালকা আঠালো টেপ লাগিয়ে মুখ বন্ধ করে রাখা। এর ফলে ঘুমের সময় মুখ দিয়ে শ্বাস না নিয়ে নাক দিয়ে শ্বাস নেওয়া হয়। এর পেছনে যুক্তি হলো, নাক দিয়ে শ্বাস নিলে বাতাস পরিষ্কার হয়, ফুসফুস ভালোভাবে কাজ করে এবং ঘুমের মান উন্নত হয়।

এতে কী উপকার

মাউথ টেপিং-য়ের পক্ষে যুক্তি হলো, এর ফলে রাতে মুখ শুকিয়ে যাওয়ার সমস্যা কমে।

অনেকের আবার সকালে গলা শুকনা বা বাজে স্বাদ নিয়ে ওঠার সমস্যা থাকে, সেটাও কমতে পারে। কিছু ক্ষেত্রে হালকা নাক ডাকা কমতে পারে বলেও দাবি করা হয়। আবার কেউ কেউ মনে করেন, নাক দিয়ে শ্বাস নেওয়ার অভ্যাস তৈরি হলে ঘুমের মান উন্নত হয় এবং শরীর বেশি আরাম পায়।

ঝুঁকি কোথায়

চিকিৎসকদের মতে, এই পদ্ধতির পক্ষে জোরালো বৈজ্ঞানিক প্রমাণ নেই।

বরং এর বেশ কিছু ঝুঁকি রয়েছে। যদি কারো নাক বন্ধ থাকে, সাইনাসের সমস্যা থাকে, অ্যালার্জি বা ঠাণ্ডাজনিত সমস্যা থাকে, তাহলে মুখ বন্ধ করে রাখলে শ্বাস নিতে কষ্ট হতে পারে। এতে হঠাৎ শ্বাসকষ্ট বা অস্বস্তি তৈরি হওয়ার আশঙ্কা থাকবে।

অনেকের ক্ষেত্রে টেপ লাগানোর ফলে ঠোঁট ও আশপাশের ত্বকে জ্বালা, লালচে ভাব বা র‍্যাশ হতে পারে। আবার কেউ কেউ টেপ লাগানো অবস্থায় মানসিক অস্বস্তি বা ভয় অনুভব করেন, যার ফলে ঘুমের সমস্যা আরো বাড়ে।

সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, যারা নিয়মিত জোরে নাক ডাকেন বা ঘুমের সময় শ্বাস বন্ধ হয়ে যায় (যাকে স্লিপ অ্যাপনিয়া বলা হয়), তাদের জন্য মাউথ টেপিং বিপজ্জনক হতে পারে। এতে আসল সমস্যা ঢাকা পড়তে পারে এবং সময়মতো চিকিৎসা না হলে বড় ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা থাকে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শুধু ট্রেন্ড দেখে এই ধরনের পদ্ধতি অনুসরণ করা উচিত নয়। ঘুমের সমস্যা থাকলে বা নাক ডাকার প্রবণতা থাকলে আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।

মাউথ টেপিং কিছু মানুষের ক্ষেত্রে সাময়িকভাবে ভালো লাগতে পারে, কিন্তু এটি সবার জন্য নিরাপদ নয়। এর ফলে উপকারের চেয়ে ঝুঁকি বেশি হতে পারে। তাই নিজের শরীরের কথা ভেবে চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া এই পদ্ধতি ব্যবহার করা উচিত নয়।

সূত্র : আজকাল

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *