দেশ-বিদেশের চিকিৎসকদের সব প্রচেষ্টা ব্যর্থ করে অবশেষে না ফেরার দেশে পাড়ি জমালেন জুলাই বিপ্লবের সম্মুখসারির যোদ্ধা ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদি। সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ সময় রাত সাড়ে ৯টায় তিনি মারা যান (ইন্নালিল্লাহি … রাজিউন)। তার বয়স হয়েছিল ৩২ বছর। ওসমান হাদির মৃত্যুর খবরটি প্রথমে জানানো হয় ইনকিলাব মঞ্চের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে। যেখানে বলা হয়, ‘ভারতীয় আধিপত্যবাদের মোকাবিলায় মহান বিপ্লবী ওসমান হাদিকে আল্লাহ শহীদ হিসাবে কবুল করেছেন।’
শরিফ ওসমান হাদি ছিলেন আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী। তার মতো একজন খাঁটি দেশপ্রেমিক ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে সোচ্চার জুলাই যোদ্ধার মৃত্যুতে শোকে স্তব্ধ পুরো জাতি। এমন মর্মন্তুদ খবর শুনে শোকবিহ্বল হয়ে পড়েন পুরো দেশবাসী। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এই তথ্য ছড়িয়ে পড়লে শোকের ছায়া নেমে আসে। প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের পাশাপাশি বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও এনসিপিসহ ফ্যাসিবাদবিরোধী সব রাজনৈতিক দল শোক প্রকাশ করে বিবৃতি দেয়। বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের পক্ষ থেকেও শোক জানানো হয়। গুলিবিদ্ধ শরিফ ওসমান হাদির শারীরিক অবস্থা অত্যন্ত সংকটাপন্ন বলে বুধবার রাতে জানানো হয় প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে। ওই বার্তার পর থেকেই হাদির বেঁচে থাকা নিয়ে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা বাড়তে থাকে। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পক্ষে থাকা প্রতিটি মানুষ হাদির সুস্থতার জন্য মহান আল্লাহর কাছে দোয়া করেছেন।
রাতে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস জাতির উদ্দেশে তাৎক্ষণিক ভাষণ দেন। ভাষণে তিনি সবাইকে ধৈর্য ধারণ করার আহ্বান জানান। একইসঙ্গে তিনি আশ্বাস দিয়ে বলেন, হাদি হত্যায় জড়িত সবার সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করা হবে। তিনি হাদির রুহের মাগফিরাত কামনায় আজ (শুক্রবার) প্রতিটি মসজিদে বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত করা এবং আগামীকাল শনিবার একদিনের রাষ্ট্রীয় শোক পালনের ঘোষণা দেন।
হাদির মৃত্যুর খবর শুনে তাৎক্ষণিকভাবে রাজধানীর শাহবাগে জড়ো হন সহযোদ্ধা ও বিপুলসংখ্যক বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা। ক্ষোভ-বিক্ষোভে ফেটে পড়েন তারা। হাদি হত্যার বিচার চেয়ে ‘তুমি কে, আমি কে, হাদি-হাদি’; ‘আমার ভাই কবরে, খুনি কেন বাইরে’সহ নানা স্লোগান দেন। উত্তাল হয়ে ওঠে শাহবাগসহ আশপাশের এলাকা। এ সময় শাহবাগে সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত (রাত ২টা) শাহবাগে হাজার হাজার জনতা অবস্থান করছিলেন। এর আগে মৃত্যুর খবর শোনার পর রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে সাধারণ মানুষের ঢল নামতে থাকে শাহবাগে। একইভাবে দেশের বিভিন্ন স্থানে সড়ক অবরোধ করে আগুন জ্বালিয়ে জুলাই যোদ্ধারা বিক্ষোভ শুরু করেন। এক কথায়, ওসমান হাদির মৃত্যুর খবরে পুরো দেশ যেন হঠাৎ থমকে দাঁড়ায়। রাত যত বাড়তে থাকে, বিক্ষোভে উত্তাল হতে থাকে চারিদিক। এভাবে বৃহস্পতিবারের রাত দেশজুড়ে ছাত্র-জনতার গগণবিদারী স্লোগানে প্রকম্পিত হতে থাকে।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিউরো সার্জারি বিভাগের চিকিৎসক ও ন্যাশনাল হেলথ অ্যালায়েন্সের (এনএইচএ) সদস্য সচিব ডা. মো. আব্দুল আহাদ রাত ১২টায় জানান, হাদির লাশ শুক্রবার বাংলাদেশ বিমানের একটি বাণিজ্যিক ফ্লাইটে সিঙ্গাপুরের স্থানীয় সময় বিকাল ৩টা ৫০ মিনিটে ছাড়বে। ঢাকায় পৌঁছাবে সম্ভাব্য সময় সন্ধ্যা ৬টা ৫ মিনিটে।
এর আগে ওসমান হাদির লাশ দেশে ফেরত আনা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে স্বাস্থ্য সচিব সাইদুর রহমান বৃহস্পতিবার রাতে জানান, বিষয়টি এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের জানানো হয়নি। তবে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে নির্দেশ পাওয়ামাত্রই সব ধরনের আনুষ্ঠানিকতা শুরু করা হবে।
জীবন-মৃত্যু লড়াইয়ের সাত দিন : গত ১২ ডিসেম্বর দুপুরে জুমার নামাজের পর নির্বাচনি গণসংযোগের জন্য অটোরিকশাযোগে রাজধানীর বিজয়নগর এলাকায় যাওয়ার সময় ওসমান হাদি কুখ্যাত সন্ত্রাসী ও আওয়ামী লীগের অন্যতম দোসর ফয়সাল করিম মাসুদের গুলিতে গুরুতর আহত হন।
মোটরসাইকেলে আসা এই সন্ত্রাসী হাদির মাথা লক্ষ্য করে খুব কাছ থেকে গুলি করে। এরপর গুরুতর আহত হাদিকে দ্রুত ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে অস্ত্রোপচার করার পর রাতেই তাকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সোমবার দুপুরে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে হাদিকে সিঙ্গাপুরে নিয়ে যাওয়া হয়। সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালেই হাদির জরুরি অস্ত্রোপচার করতে পরিবারের পক্ষ থেকে অনুমতি দেওয়া হয়। বৃহস্পতিবার ইনকিলাব মঞ্চের এক ফেসবুক পোস্টে এ কথা জানানো হয়।
এর আগে এভারকেয়ার হাসপাতালে জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে থাকা এই জুলাই যোদ্ধার চিকিৎসায় বিভিন্ন বিভাগের ১২ জন চিকিৎসকের সমন্বয়ে একটি মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়। বোর্ডের নেতৃত্বে ছিলেন ক্রিটিক্যাল কেয়ার মেডিসিনের সিনিয়র কনসালটেন্ট ও বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. মো. জাফর ইকবাল। এর আগে ঢাকা মেডিকেলে প্রথমে তার মাথায় অস্ত্রোপচার করেন ডা. জাহিদ রায়হানসহ তার টিম।
এদিকে সবশেষ গতকাল রাতে মৃত্যুর খবরের মধ্য দিয়ে ওসমান হাদির সাত দিনের জীবনমৃত্যু লড়াইয়ের সমাপ্তি ঘটে। যদিও গুলিবিদ্ধ হওয়ার প্রথম দিন থেকে চিকিৎসকরা আশঙ্কা প্রকাশ করে আসছিলেন, তাকে হয়তো শেষ পর্যন্ত বাঁচানো যাবে না। কারণ বুলেট তার কানের ওপর দিয়ে মাথার একপাশ থেকে ঢুকে অন্য পাশ থেকে বের হয়ে গিয়েছে। যদিও সবাই তার জন্য দোয়া করছে। আল্লাহ যদি রহমত করে তাকে বাঁচিয়ে রাখে, তবে তা হবে মিরাকল।
ঝালকাঠির সন্তান ওসমান হাদি : রাতে নলছিটি (ঝালকাঠি) প্রতিনিধি জানান, ঝালকাঠি জেলার নলছিটি উপজেলার হাড়ড়িখালী গ্রামের মুন্সি বাড়ির মরহুম মাওলানা আব্দুল হাদির ছোট ছেলে শরিফ ওসমান হাদি। একসময় নলছিটি শহরের খাসমহল এলাকায় বাড়ি করেন হাদির বাবা। তাও প্রায় ৪০ বছর আগে। এখন তারা জেলা শহরেরই স্থায়ী বাসিন্দা।
নলছিটি ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার উপাধ্যক্ষ ছিলেন মাওলানা শরিফ আব্দুল হাদি। তার তিন ছেলে ও তিন মেয়ে। তিন ছেলের মধ্যে বড় ছেলে বরিশালের বাঘিয়া আল আমিন কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা আবু বক্কর ছিদ্দিক। যিনি গুঠিয়ার ঐতিহ্যবাহী শরফুদ্দীন আহম্মেদ সেন্টু প্রতিষ্ঠিত জামে মসজিদের খতিব। মেজো ছেলে ওমর ফারুক ঢাকায় ব্যবসা করেন। আর ছোট ছেলে ছিলেন ওসমান হাদি। তিন বোনের মধ্যে তার বড় বোন ফাতেমা বেগম এবং আরেক বোনের নাম মাসুমা সুলতানা। (অন্য এক বোনের নাম জানা যায়নি)।
ওসমান হাদির তিন বোনের মধ্যে বড় বোনের স্বামী নলছিটি ফুলহরি আব্দুল আজিজ দাখিল মাদ্রাসার সুপার ও বাইপাস সড়কে আশ্রাফ আলী হাওলাদার জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা আমির হোসেন। মেজো বোনের স্বামী মাওলানা আমিরুল ইসলাম ঢাকায় ব্যবসা করেন। ছোট মেয়ে নলছিটি ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসায় শিক্ষক, তার স্বামী মাওলানা আমির হোসেন।
নলছিটি থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় : ওসমান হাদি তার বাবার মাদ্রাসা নলছিটি ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসায় কিছু দিন পড়াশোনার পর ঝালকাঠির ঐতিহ্যবাহী নেছারাবাদ কামিল মাদ্রাসায় পড়াশোনা করেন। তিনি ছোটবেলা থেকেই মেধাবী ও বক্তৃতায় পারদর্শী। মাদ্রাসার শিক্ষক বাবার সন্তান হাদি নেছারাবাদ কামিল মাদ্রাসায় পড়াশুনা শেষ করার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হন। এখান থেকে স্নাতকোত্তর শেষ করে তিনি বেসরকারি একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করছিলেন।
জনতার বিপ্লবী মুখ : ২০২৪ সালের জুলাই বিপ্লবে সরকার পতনের আন্দোলন এবং ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ওসমান হাদির কর্মকাণ্ড দেশ-বিদেশে ব্যাপকভাবে প্রশংসিত হয়। অল্পদিনের মধ্যেই ওসমান হাদি দেশের মানুষের কাছে একজন পরিচিত মুখ হয়ে ওঠেন। যদিও হাদিকে কখনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত হতে দেখা যায়নি। মূলত জুলাই আন্দোলন সামনে রেখে হাদির নামটি জনতার সামনে ধীরে ধীরে পরিচিতি পায়। এছাড়া তার প্রতিষ্ঠিত ইনকিলাব মঞ্চের বিভিন্ন কর্মসূচি এবং মাঠে ময়দানে ও টিভি টকশোতে আগুনঝরা বক্তব্য দিয়ে তিনি একসময় জনতার কাছে বড় এক তরুণ বিপ্লবী হয়ে ওঠেন। প্রথমে তিনি ইনকিলাম মঞ্চের মুখপাত্র ছিলেন। এরপর সামাজিক সাংস্কৃতিক এ সংগঠনের আহ্বায়কের দায়িত্বে আসেন। হাদির বক্তব্য শুনে তরুণদের মধ্যে অনেকে তার অনুসারীতে পরিণত হন। এভাবে ওসমান হাদি হয়ে ওঠেন জনতার বিপ্লবী মুখ।
ওসমান হাদি বরিশালের রহমতপুরে বিয়ে করেন। স্ত্রী রাবেয়া শম্পা ছাড়াও তার দশ মাস বয়সি ছেলে সন্তান রয়েছে। ওসমান হাদির ভাড়া বাসা রাজধানীর রামপুরা মহানগর প্রজেক্টে। তার বৃদ্ধা মাও এখন ঢাকার বাসায় অবস্থান করছেন। গত বছর ৫ আগস্ট পরবর্তী ফ্যাসিবাদবিরোধী প্রতিটি কর্মসূচিতে ওসমান হাদি এবং তার ইনকিলাব মঞ্চ ছিল একেবারে সামনের সারিতে। নানা কারণে তিনি অনেকের রোষানলে পড়েন। তাকে হত্যা করার পেছনে ফ্যাসিবাদের সব শক্তির ভূমিকা সক্রিয় ছিল।
হাদির ভিন্নরকম নির্বাচনি প্রচারণা : জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পর ওসমান হাদি জাতীয় নাগরিক কমিটিতে যোগ দিলেও নতুন দল এনসিপিতে যোগ দেননি। নিজেকে ঢাকা-৮ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ঘোষণা দিয়ে নতুন করে আলোচনায় আসেন। বিশেষ করে তার নির্বাচনি প্রচারণা ছিল সম্পূর্ণ ভিন্নরকম। তাকে নির্বাচনি প্রচারণা চালানোর জন্য পকেট থেকে কোনো টাকা খরচ করতে হতো না। সাধারণ মানুষ স্বপ্রণোদিত হয়ে তাকে অনুদান দিচ্ছিলেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তিনি জনগণের দেওয়া এসব টাকার হিসাব লাইভে এসে বলে দিতেন। এর ফলে জনগণের কাছে তিনি আরও জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন।
ফিরে দেখা ঘাতকের কিলিং মিশন : রাজধানীর বিজয়নগর পুরানা পল্টনের বক্স কালভার্ট এলাকায় গত শুক্রবার বেলা ২টা ২০ মিনিটের দিকে চলন্ত অটোরিকশায় থাকা অবস্থায় শরিফ ওসমান হাদিকে গুলি করে মোটরাসাইকেলে পালিয়ে যায় দুই দুর্বৃত্ত। এর কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই হামলাকারী দুই যুবকের পরিচয় প্রকাশ পায়। তারা হলেন শুটার সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ফয়সাল করিম মাসুদ এবং মোটরসাইকেল চালক মো. আলমগীর শেখ। এর আগে তারা ছদ্মবেশে ওসমান হাদির নির্বাচনি প্রচারণায় ছিলেন। এমনকি ঘটনার রাতেই তারা ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট সীমান্ত পাড়ি দিয়ে নির্বিঘ্নে ভারতে চলে যেতে সক্ষম হয়।
এ ঘটনায় ডিএমপির পল্টন থানায় একটি হত্যাচেষ্টা মামলা হয়েছে। মামলাটি বর্তমানে তদন্ত করছে ডিএমপির গোয়েন্দা বিভাগ। মামলায় এখন এখন পর্যন্ত ১০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এরা হলেন ফয়সালের স্ত্রী সাহেদা পারভীন সামিয়া, শ্যালক ওয়াহিদ আহমেদ শিপু, ঘনিষ্ঠ বান্ধবী মারিয়া আক্তার লিমা, হামলায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেলের কথিত মালিক আবদুল হান্নান, সীমান্ত এলাকায় মানবপাচারে জড়িত সন্দেহে সঞ্জয় চিসিম ও সিবিয়ন দিও এবং ফয়সালের ঘনিষ্ঠ সহযোগী ও মোটরসাইকেলের মূল মালিক মো. কবির, ফয়সালের বাবা হুমায়ুন কবির ও মা মোসা. হাসি বেগম এবং প্রাইভেটকার ভাড়া করে দেওয়া রেন্ট-এ কারের গাড়িচালক নুরুজ্জামান।
সর্বশেষ বৃহস্পতিবার গ্রেফতার দেখিয়ে তিন দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে সীমান্ত থেকে আটক দুই ব্যক্তিকে। এছাড়া গ্রেফতার ফয়সালের বাবা হুমায়ুন কবির ও মা মোসা. হাসি বেগম বুধবার আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন। তারা হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত অস্ত্র লুকাতে ও ফয়সালকে পালাতে সহায়তা করার বিষয়টি স্বীকার করেছেন। এছাড়া নরসিংদীর একটি লেক থেকে উদ্ধার করা হয়েছে হামলায় ব্যবহৃত অস্ত্রসহ মোট তিনটি আগ্নেয়াস্ত্র। এর আগে রাজধানীর আগারগাঁও থেকে উদ্ধার হয় হামলায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটি।
ওসমান হাদিকে হত্যার পরিকল্পনা এবং এর ছক কষা হয়েছিল আরও অন্তত দুই মাস আগেই। কখন কোথায় কিভাবে গুলি করে কোন কোন রুট ধরে পালিয়ে যাবে এর সবই ছিল পূর্বনির্ধারিত। এ ঘটনায় নানা পর্যায়ে জড়িত আরও অনেকে। হামলাকারীদের সেফ এক্সিটের জন্য এদিন বেলা ১১টা থেকে ঘটনাস্থলের কাছাকাছি অপেক্ষমাণ ছিল একটি প্রাইভেটকার। তবে সেটিতে না উঠে হাদিকে গুলি করার পর ভাড়া করা অন্য একটি প্রাইভেটকারে রাজধানী ছাড়ে হামলাকারীরা। সূত্র বলছে, দেশি-বিদেশি চক্র পরিকল্পিতভাবে ওসমান হাদিকে হত্যার সূক্ষ্ম পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনা অনুযায়ী ঘাতকসহ সহযোগীকে দেশ থেকে দ্রুত সীমান্ত পার করে নিরাপদে ভারতে নিয়ে যাওয়া হয়।

