বারহাট্টায় শ্রেষ্ঠ প্রধান শিক্ষক মামুন মিয়ার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ

২০১

ওমর ফারুক আহম্মদ, জেলা প্রতিনিধি নেত্রকোণা :

বারহাট্টা উপজেলা শ্রেষ্ঠ শিক্ষক নির্বাচিত হয়েছেন কুমারপাড়া হিলোচিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মামুন মিয়া।তার বিরুদ্ধে স্কুল ফাঁকি দেওয়া, স্কুলে গিয়েও নানা অজুহাতে চলে যাওয়াসহ ইত্যাদি অভিযোগ রয়েছে।
বিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, অভিযুক্ত শিক্ষক যোগদান করেন ২০১৭ সালের নভেম্বরে। দুই মাস চাকরি করার পর বিপিএড করতে চলে যান ময়মনসিংহে। দেড় বছর পর বিপিএড শেষে ২০১৯ সালের জুলাইয়ে তিনি স্কুলে যোগ দেন। এরপর প্রায় দুই বছর করোনার কারণে স্কুল বন্ধ থাকে। করোনার বন্ধ শেষে ২০২১ সালের শেষের দিকে ফের তিনি অন্য একটি প্রশিক্ষণে চলে যান তিন মাসের জন্য। এই প্রশিক্ষণ শেষে চলতি বছরের মার্চে তিনি স্কুলে যোগদান করেন।
অভিভাবকরা সম্প্রতি তার বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসকের কাছে অভিযোগ দিয়েছেন।
এ বিষয়ে জানতে বারহাট্টা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বিনয় চন্দ্র শর্মাকে দৈনিক তৃতীয় মাত্রা প্রতিনিধি একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি কল রিসিভ করেননি। দৈনিক তৃতীয় মাত্রা প্রতিনিধি কথা বললে বারহাট্টা উপজেলা সহকারি প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা রহুল আমিন বলেন, যথাযথভাবেই শ্রেষ্ঠ শিক্ষক নির্বাচন করা হয়েছে। এখানে কোনো অনিয়ম হয়নি। ইউএনও স্যার এ যাচাই বাছাইয়ে উপস্থিত ছিলেন। তবে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আছে তা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে তদন্তাধীন আছে। এতে দোষী প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষক মামুন মিয়া বলেন দৈনিক তৃতীয় মাত্রা কে আমার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ মিথ্যা, বানোয়াট ও জালিয়াতি। কোন গ্রামবাসী আমার বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ করেনি। সহকারী শিক্ষক মোবাশশিরা ও তার নামধারী সাংবাদিক স্বামী মেহেদী হাসান আকন্দ ( মুক্ত খবর) গ্রামবাসীদের নিকট থেকে জালিয়াতি করে সিগনেচার এনেছে। সে গ্রামবাসীদের বলেছে যে বিদ্যালয়ের জন্য দুই তলা ভবন ও বাউন্ডারি আনবে। তাই তাদের সিগনেচার লাগবে। এতে গ্রামের ১ নং ওয়ার্ডের মেম্বার ও অন্যান্যরা সিগনেচার করে। এমন কি একেক জন দুতলা ভবন ও বাউন্ডারির কথা শুনে একাধিক সিগনেচার করে। এই দরখাস্ত নিয়ে শরিফুল নামক একজন গ্রামবাসীকে প্ররোচিত করে অভিযোগ করে।পরবর্তীতে গ্রামবাসীরা যখন জানতে পারে যে প্রধান শিক্ষক মোঃ মামুন মিয়ার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে, তখন তিন গ্রামের মানুষ এক সাথে সালিশ করে তাদের অভিযোগ রেজুলেশনে মোবাইল নম্বর সহ সিগনেচার দিয়ে প্রত্যাহার করে যার অডিও এবং ভিডিও প্রমাণ রয়েছে।
এমনকি প্রধান অভিযোগকারী শরিফুল তিন গ্রামের সালিসে তার কর্মের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে যার ভিডিও প্রমাণ রয়েছে।
মূল গঠনা হলো মোঃ মামুন মিয়া প্রধান শিক্ষক হিসাবে যোগদান করায় সহকারী শিক্ষক মোবাশশিরা হিংসা করত। মোবাশশিরা এবং তার স্বামী বিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিষয়ে প্রধান শিক্ষকের উপর খবর দারি করত। মোবাশশিরার জামাই সারাদিন এসে অফিস রুমে বসে থাকতো। মোবাশশিরা ঠিক সময়ে বিদ্যালয়ে আসত না। শ্রেণি কক্ষে পাঠদান করতো না। শুধু প্রধান শিক্ষের উপর খবরদারী করত।
প্রধান শিক্ষক মোবাশশিরাকে পাঠপরিকল্পনা ও উপকরণ নিয়ে পাঠদান পরিচালনা করতে বললে সে তা কখনই করে না।এমনকি মোবাশশিরা তার সাংবাদিক জামাইয়ের ভয় দেখিয়ে অন্যান্য সহকারী শিক্ষকেদর কুক্ষিগত করে রাখে।

প্রধান শিক্ষক বলেন যে উনি যখন তিন মাসের TMTE প্রশিক্ষণে ছিলেন তখন ভারপ্রাপ্ত হেডটিচারের দায়িত্ব ছিলেন মোবাশশিরা। নাম প্রকাশ না করা শর্তে একাধিক সহকারী শিক্ষক জানায় তখন মোবাশশিরা প্রতিদিন ১০ টার পরে বিদ্যালযে আসত। তার স্বামী সারাদিন অফিস রুমে বসে থাকতো। সে কোন ক্লাস নিত না।প্রধান শিক্ষক আরো জানায় উনি নিয়ম মাফিক মুভমেন্ট খাতায় লিখে অফিসিয়াল কাজের জন্য অফিসে যান, হোম ভিজিটে যান এবং শিক্ষার্থীদের জরে পড়া রোধে বাড়ি বাড়ি যান।নাম প্রকাশ না করা শর্তে একাধিক সহকারী শিক্ষক তা জানিয়েছে।আমার বিরুদ্ধে অভিযোগগুলো সত্য নয়। এলাকার একটা মহল ইচ্ছা করে এর আগেও আমার বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ করেছেন; যার কোনো সত্যতা মেলেনি। এসব আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র। এ বিষয়ে বারহাট্টা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এস. এম. মাজহারুল ইসলাম বলেন, শ্রেষ্ঠ শিক্ষক নির্বাচিত করার ক্ষেত্রে লিখিত পরীক্ষা, ভাইভাসহ বেশ কিছু নিয়ম আছে। এসব কিছুতে উত্তীর্ণ হয়েছেন তিনি। নিয়মগুলো যথাযথভাবে মেনেই তাকে শ্রেষ্ঠ শিক্ষক নির্বাচন করা হয়েছে। শিক্ষক মামুন মিয়ার বিরুদ্ধে যদি স্কুল ফাঁকি দেওয়া বা আরও অন্য কোনো অভিযোগ থাকে সে বিষয়ে কর্তৃপক্ষ যথাযথ ব্যবস্থা নেবেন।

100% LikesVS
0% Dislikes
Leave A Reply

Your email address will not be published.