বাংলাদেশ বনাম পাকিস্থানের মধ্যকার খেলার সমীকরণ।

৭৬

প্রতিবেদক ও বিশ্লেষক,মোঃ নূর আলম-ঢাকা।

গত ৬ই সেপ্টেম্বর ২০২৩ সদ্য হয়ে গেল বাংলাদেশ বনাম পাকিস্থান এর মধ্যকার সুপার ফোর এর খেলাটি। এটি পাকিস্থান, লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হয়। এশিয়া কাপে ৫০ ওভারের ডে-নাইট এই ম্যাচে টস জিতে বাংলাদেশ ব্যাটিং এর সিদ্ধান্ত নেয়। ৩৮.৪ ওভার ব্যাটিং করে সবকটি উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশ সংগ্রহ করে ১৯৩ রান। জবাবে ব্যাট করতে নেমে পাকিস্থান ৩ উইকেট হারিয়ে ৩৯.৩ ওভার ব্যাট করে ১৯৪ রান করে জয়ের লক্ষে পৌছে যায়।

সমীকরণ দাঁড়ায় ৭ উইকেটে পাকিস্থানের জয়।

এবার আসি বিশ্লেষণে,এ ম্যাচে বাংলাদেশের পক্ষে সর্বোচ্চ রান করেন উইকেট কিপার ও ব্যাটসম্যান মুসফিকুর রহিম, ৬৪ (৮৭ বলে) এবং দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান করেন অধিনায়ক সাকিব আল হাসান ৫৩ (৫৭ বলে)। এছাড়া ওপেনার নাইম শেখ ২০ রান, এই এশিয়া কাপের প্রথম ম্যাচ খেলা লিটন কুমার দাস ওয়ান ডাউন ব্যাটিং করে ১৬ রান করেন এবং সেভেন ডাউন ব্যাটার আফিফ হোসেন এর ১২ রান ছাড়া উল্লেখযোগ্য কোন স্কোর নেই।

অপরদিকে, পাকিস্থানের পক্ষে হারিস রউফ মাত্র ৬ ওভার বোলিং করে মাত্র ১৯ রান দিয়ে ৪টি উইকেট দখল করে নেন। এবং নাসিম সাহ ৫.৪ ওভার বোলিং করে তুলে নেন ৩ উইকেট।

ব্যাটিং এ পাকিস্থান এর পক্ষে সর্বোচ্চ রান করেন ইমাম উল হক ৭৮ (৮৪ বলে), এবং দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান করেন মোহাম্মদ রিজোয়ান, তিনি করেন ৬৩ (৭৯ বলে)।

কিভাবে হারলো বাংলাদেশ? সমীকরণ কি বলে?

লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামের এই রকম উইকেটে, যেখানে এর আগের ম্যাচেই বাংলাদেশ আফগানিস্থান এর বিপক্ষে করেছিলো ৩৩৪ রান ৫ উইকেট হারিয়ে। এবং সেই ম্যাচে বাংলাদেশ জিতেছিলো ৮৯ রানে। তাহলে পাকিস্থানের সাথে একই ভ্যানুতে বাংলাদেশের কি হলো? কেন এই ব্যাটিং বিপর্যয়?

অপরদিকে, পাকিস্থানের পক্ষে হারিস রউফ মাত্র ৬ ওভার বোলিং করে মাত্র ১৯ রান দিয়ে ৪টি উইকেট দখল করে নেন। এবং নাসিম সাহ ৫.৪ ওভার বোলিং করে তুলে নেন ৩ উইকেট।

ব্যাটিং এ পাকিস্থান এর পক্ষে সর্বোচ্চ রান করেন ইমাম উল হক ৭৮ (৮৪ বলে), এবং দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান করেন মোহাম্মদ রিজোয়ান, তিনি করেন ৬৩ (৭৯ বলে)।

কিভাবে হারলো বাংলাদেশ? সমীকরণ কি বলে?

লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামের এই রকম উইকেটে, যেখানে এর আগের ম্যাচেই বাংলাদেশ আফগানিস্থান এর বিপক্ষে করেছিলো ৩৩৪ রান ৫ উইকেট হারিয়ে। এবং সেই ম্যাচে বাংলাদেশ জিতেছিলো ৮৯ রানে। তাহলে পাকিস্থানের সাথে একই ভ্যানুতে বাংলাদেশের কি হলো? কেন এই ব্যাটিং বিপর্যয়?

মিরাজকে দিয়ে ওপেন করানো ছিলো প্রথম ভূল সিদ্ধান্ত। আপনি বলতে পারেন, মিরাজ তো আগের ম্যাচে (আফগানিস্থান এর বিপক্ষেই) ওপেন নেমে সেঞ্চুরি করেছিলেন (১১২ রান)। তাহলে এই ম্যাচে কেন পারেনি?
কিন্তু ভুলে গেলে চলবে না যে আফগানিস্থান আর পাকিস্থান এক সমগোত্রীয় দল নয়। পাকিস্থানের বোলিং লাইন, বিশেষ করে পেস বোলিং বিশ্ব সেরা নিঃসন্দেহে। এই টুর্নামেন্টে আরেক বড় দল ইন্ডিয়াকে ২৬৬ রানে অল-আউট করেছিলো পাকিস্থান। বৃষ্টি বিঘ্নিন্ত সেই ম্যাচে পাকিস্থান আর ব্যটিং এর সুয়োগ পায়নি। ম্যাচটি পরিত্যাক্ত হয়। বৃষ্টি না হলে ম্যাচের ফলাফল কি হতো সেটা নিয়ে তর্ক হয়তো থাকতে পারে, কিন্তু পাকিস্থান শক্তিশালী ইন্ডিয়ার ব্যটিং লাইনকে তাদের পেস বোলিং দিয়ে রীতিমত ভেঙ্গে দিয়েছিল। ইন্ডিয়ার বাঘা-বাঘা ব্যাটার’রা যেখানে পাকিস্থানের পেস বোলিং মোকাবেলায় হিমসিম খায়, সেখানে কিভাবে মিরাজকে দিয়ে ওপেন করানোর কথা ভাভা হল, যেখানে সে প্রকৃতপক্ষে ওপেনার ব্যাটসম্যান নয়।

ওপেনারদের ব্যার্থতা ছল কোথায়?
এই ম্যাচে ওপেন ব্যাট করেছেন নাইম সেখ এবং মেহেদি হাসান মিরাজ। মিরাজ মাত্র ১টি বল ফেস করে ০ (শুন্য) রানে অউট হন। নাইম শেখ করেন ২০ রান। পাকিস্থানের মত একটা শক্তিশালি দলের বিপক্ষে ওপেনারদের স্কোর যদি হয় ০ এবং ২০ তাহলে বড় স্কোর কি আদৌ সম্ভব? এই টুর্নামেন্টে নাইম শেখ এর স্কোর তিন ম্যাচে ৬৪ রান। স্রীলংকার বিপক্ষে-১৬, আফগানিস্থান এর বিপক্ষে-২৮ এবং পাকিস্থান এর বিপক্ষে-২০ রান। যেই ম্যাচে বাংলাদেশের রান হয়েছে ৩৩৪/৫, দুইটা শতক, সেই ম্যাচে নাইম শেখ এর রান ২৮। এখন ভাবুন, একজন রেগুলার ওপেনারের স্কোর যদি এমন হয় তাহলে কোন বড় দলের বিপক্ষে বড় স্কোর কি আশা করা যায়?

এবার আসি অন্য দৃষ্টিকোণ থেকে, ৫০ না পেরুতেই ৪ উইকেটের পতন। পাকিস্থান যে শুধু বোলিং এ শক্তিশালি দল তা কিন্তু না, ব্যটিং-এও শক্তিশালি। সেই দলের বিপক্ষে যেখানে ম্যাচে নুন্যতম ফাইট দিতে হলেও ২৮০+ রান করা দরকার এবং এই উইকেটে সেটা সম্ভব। সেই ম্যাচে যদি ৫০ রান করার আগেই (৪৭ রানে) ৪ উইকেটের পতন হয় তাহলে অন্তত আমাদের জন্য ঘুরে দাঁড়ানো অতিব কষ্টকর।

এখন পার্টনাসশিপ এর দিকে তাকালে দেখারে যায় ৪৭ রানে ৪ উইকেট হারানোর পর দুই সিনিয়র, ক্যাপ্টেন এবং উইকেট কিপার মিলে ১০০ রানের দারুন এক পার্টনারশিপ গড়ে তুলেন। তৌহিদ হৃদয় আউট হন ৪ নাম্বার ব্যাটার হিসেবে। তখন দলিয় রান ৪৭, ওভার ৯.১। সেখান থেকে ১০০ রানের জুটি করেন শাকিব-মুশফিল জুটি। ৫ নাম্বার ব্যাটার হিসেবে সাকিব আউট হন ৫৩ রান করে প্রায় ৯৩ স্ট্রাইক রেটে ব্যাট করেন তিনি। ৩৭.২ ওভারে আউট হন মুশফিকুর রহিম, ৭ নাম্বার ব্যাটার হিসেবে, ব্যাক্তিগত ৬৪ রান করে প্রায় ৭৪ স্ট্রাইক রেটে ব্যাট করেন তিনি। এই দুই সিনিয়র এবং সেট ব্যাটার ব্যক্তিগত ৫০ করার পরেও ইনিংস বড় করতে না পারাটা ম্যাচ থেকে ছিটকে পরার অন্যতম একটা কারন।

তৌহিদ হৃদয়, আফিফ হোসেন এবং শামীম পাটোয়ারির ব্যাটিং ব্যার্থতা দৃষ্টি কেড়েছেন সকলের। তৌহিদ হ্রদয়-২ রান, শামীম পাটোয়ারি-১৬ রান এবং আফিফ হোসেন-১২ রান। এই তিনজনের রান স্পস্ট বলে দেয় মিডল অর্ডার এবং লোয়ার মিডল অর্ডার এর ব্যাটিং ব্যার্থতা।

এক ম্যাচে এতগুলো ব্যার্থতা নিয়ে, বড় কোন দলের বিপক্ষে ম্যাচ জেতার আশা নিতান্তই জেগে থেকে স্বপ্ন দেখা ছাড়া আর কিছু নয়। এমনকি সন্মানজনক একটা স্কোর বা ম্যাচে টিকে থাকার যে একটা ব্যাপার থাকে সেটাও সম্ভব হওয়ার কথা না।

100% LikesVS
0% Dislikes
Leave A Reply

Your email address will not be published.