বগুড়ায় বিভিন্ন ভাবে হচ্ছে ছিনতাই বিপদে সাধারণ মানুষ!

২৬

বগুড়ার প্রতিনিধি :ছাবরিনা আকতারঃ
ত্যেক মাস বগুড়া জেলাতেই ছিনতাইয়ের ঘটনা সর্বোচ্চ স্হানে অবস্থান নিয়েছেন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতা লক্ষ্যণীয় হলেও এদের থামানো যাচ্ছে না।
শহরের বিভিন্ন এলাকার বিভিন্ন স্থানে প্রতিনিয়ত ছিনতাইয়ের শিকার হচ্ছে সকল শ্রেণির মানুষ । ছিনতাইকারীদের প্রায় সকলেই অন্য জেলার অধিবাসী বলে ধারণা করছেন প্রশাসন । এছাড়া যে ক’জন স্থানীয়, তাদের দলে রাখা হয় মূলত এলাকা চেনার সুবিধার্থে। নিত্যনতুন কৌশলে তারা প্রতিনিয়ত ছিনতাই করে বেড়াচ্ছে। গ্রুপের কেউ ধরা পড়লে তারা তাদের কৌশল পাল্টে ফেলে। ছিনতাই কাজে তাদের পছন্দের বাহন সিএনজি টেক্সি, মোটরসাইকেল। তবে ইদানীং প্রাইভেট কার নিয়েও তারা বের হয় আর অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে বারমিছ চাকু। শহরের বাইপাস এলাকার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মোড়গুলোতে ছিনতাইকারীদের দৌরাত্ম্য বাড়লেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের তৎপরতা তেমন লক্ষ্যণীয় নয়। মাঝেমধ্যে অভিযান ও গ্রেপ্তারের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থানা পুলিশ।

মাঝে মাঝে ছিনতাইকারী, টানা পার্টি, মলম পার্টি, গামছা পার্টি, অজ্ঞান পার্টির দলনেতা, মূলহোতাকে গ্রেপ্তার করা হলেও শহরের মধ্যে এসব অপরাধীর দৌরাত্ম্য ঠেকাতে পারছে না পুলিশ। যার কারণে প্রতিদিনই সাধারণ মানুষ ছিনতাইকারী প্রতারকসহ বিভিন্ন অপরাধীদের টার্গেট হচ্ছে। প্রতিদিনই শহরের কোথাও না কোথাও ছোট–বড় ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটছে। রিকশা থেকে ছোঁ মেরে মোবাইল ও হাত থেকে ব্যাগ ছিনিয়ে নেয়ার ঘটনা নিত্যদিনের। টহল পুলিশের তৎপরতা কাগজে কলমে। যার ফলে এই সুযোগটাই কাজে লাগাচ্ছে অপরাধীরা।দু–একটি ঘটনায় মামলা দায়ের করা হলেও পুলিশি ঝামেলার কারণে অনেকেই থানায় মামলা করেন না। মামলা হলেও ছিনতাইকারীদের শনাক্ত করতে পারছে না পুলিশ। তবে পুলিশের দাবি গ্রেপ্তার অভিযান ও টহল অব্যাহত আছে। পুলিশের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শহরে কতজন ছিনতাইকারী রয়েছে তার কোনো সুনির্দিষ্ট তালিকা নেই পুলিশের কাছে সাধ্য অনুযায়ী হালকা একটা তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে এবং দ্রুত এদের গ্রেপ্তারের ব্যবস্থা করা হবে। কারা কারাগারে আছে, আর কারা জামিনে বেরিয়ে এসেছে সেই তথ্যের হালনাগাদ নেই।

এরই মধ্যে নতুন ভাবে এই ছিনতাই এর সঙ্গে যোগ হয়েছে অপেশাদার ছিনতাইকারী। শহরের বিভিন্ন এলাকার বিভিন্ন অলিগলিতে সুযোগ পেলেই ছুরিসহ বিভিন্ন অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে পথচারী ও যাত্রীদের সর্বস্ব কেড়ে নিচ্ছে। গত জানুয়ারি থেকে চলতি মাস পর্যন্ত শুধুমাত্র বগুড়ায় সংখ্যাগরিষ্ঠ ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে। ওসি সদর এই ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে গণমাধ্যম কে বলেন,বিভিন্ন স্পট সম্পর্কে আমার কাছেও অভিযোগ এসেছে। রেল স্টেশন, দত্তবাড়ি সান্ধ্যার পট্টি,চেলো পাড়া সহ কয়েকটি গ্রুপ বিভক্ত হয়ে কাজ করছে তবে,এখানে মূলত মোবাইল ফোন ছিনতাই করে বেশি। আমরা গত সপ্তাহে সাঁড়াশি অভিযান চালিয়ে একটি গ্রুপকে গ্রেপ্তারও করেছি।শহরের প্রায় অর্ধশতাধিক স্থানে ছিনতাই হচ্ছে হরহামেশা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জৈনিক এক ব্যক্তি গণমাধ্যম কে জানান, গত মঙ্গলবার দুপুরে কাজ শেষে বাসায় ফেরার পথে নিউমার্কেট অতিক্রম করার আগেই ছিনতাইকারী ব্যাগ টান দিয়ে দৌঁড় দেয়। লোকজন এসে সিটি মেডিক্যাল এর সামনে এসে ছিনতাইকারীকে আটকে উত্তম মধ্যম দিয়ে ছেড়ে দেয়। মোবাইলটা পেয়েছি, তবে সেটি নষ্ট হয়ে গেছে। ব্যাগটা পেলেও টাকা ফিরে পাইনি। ঠিক দুই বছর আগেও একই জায়গায় ছিনতাইয়ের শিকার হয়েছিলাম।

ছিনতাইকারীদের হালনাগাদ তথ্য না থাকায়, পুলিশের তৎপরতা কমায় শহরের গুরুত্বপূর্ণ মোড়গুলো এখন অনিরাপদ।শহর এলাকায় বসবাসরত বাসিন্দারা জানিয়েছেন, এসব ঘটনা থানায় জানালে তেমন অগ্রগতি হয় না। নামমাত্র ছিনতাইকারী দলের কথিত দলনেতা গ্রেপ্তার করে আনা হয়। কয়দিন পর আবারও নেমে পড়ে অপরাধীরা। এসব ছিনতাইকারীকে নেশাগ্রস্ত ও মাদকসেবী এবং ভবঘুরে বলে আখ্যা দেয় আইনশৃক্সখলা বাহিনী। যার ফলে অপরাধীরা বারবার এমন কর্মকাণ্ড করে পার পাচ্ছে এর মধ্যে সামপ্রতিক অভিযানে বেশ ক’জন ধরা পড়েছে কিন্তু বাকিরা ঠিকই সক্রিয় রয়েছে। শীর্ষ সন্ত্রাসীদের ইন্ধনে চলছে কয়েকট কিশোর গাং। রেলস্টেশন এলাকায় প্রতিদিন সংঘটিত হচ্ছে কিশোর অপরাধ। বহু মামলার আসামিরা আড়ালে থেকেই কিশোর অপরাধীদের দিয়ে এসব অপরাধ করাচ্ছে।

১০ থেকে ১৬ বছর বয়সী কিশোরেরা এসব কাজ করে। ভাসমান এসব শিশুদের কারও কাজ সকালে মাছ বোঝাই রিকশা–ভ্যান যাবার সময় মাছ চুরি করা, কারও কাজ ফলের ভ্যান থেকে ফল চুরি, রেলস্টেশনের যাত্রীদের ব্যাগ নিয়ে পালিয়ে যাওয়া কিংবা পকেট কাটা অথবা মাদক বিক্রি। রেলওয়ে স্টেশন, বিআরটিসি এলাকায় বেশ কয়েকটি সিন্ডিকেট আছে যারা এ শিশুকিশোরদের দিয়ে বিভিন্ন ধরনের অপরাধ সংঘটিত করে।নারী ছিনতাইকারী তৈরি হয়েছে। নারীরা এখন প্রত্যক্ষভাবে ছিনতাইয়ে সাথে জড়িত। আসুন আমরা প্রশাসনকে সহযোগিতা করি নিরাপদ শহর গড়ি।

100% LikesVS
0% Dislikes
Leave A Reply

Your email address will not be published.