দুইপাড়ের দূরত্ব ঘুচবে কবে ?

১১

মোঃ ইকরামুল হক রাজিব,ব্যুরো প্রধান,খুলনা: বাগেরহাট জেলার রামপাল উপজেলার বাইনতলা ইউনিয়নের এপারে সগুনা গ্রাম , ওপারে গোবিন্দপুর ৷ দুই গ্রামের মাঝে বেশ চওড়া একটা নদী। এখানেও ছিলো একটি বেইলী ব্রীজ ৷ কিন্তু মোংলা ঘষিয়াখালী চ্যানেল খনন করতে গিয়ে সেটিও ভেঙ্গে ফেলা হয়েছে ৷ তারপর থেকে বছরের বেশীরভাগ সময় এই ৫০ মিটার নদী পার করতে মানুষজনকে ঘুরতে হয় প্রায় ৫/১০ কিলোমিটার পথ ৷

স্থানীয় সূত্রে জানাগেছে, মোংলা ঘষিয়াখালী চ্যানেল খননে দূর্ভোগের মুখে পড়েছে রামপালের বাইনতলা ইউনিয়নের সগুনা গ্রামের বাসিন্দারা ৷ চলাচলের একমাত্র ব্রীজটি ভেঙ্গে ফেলায় চরম বিপত্তির মুখে পড়েছেন তারা ৷ ব্রীজ ভাঙ্গার দুই বছর অতিক্রান্ত হলেও সেখানে বিকল্প কোনো পারাপারের ব্যাবস্থা রাখেনি সংশ্লিষ্টরা ৷ এতে প্রতিনিয়ত পারাপারে বিপত্তির মুখে পড়ছেন স্থানীয়রা ৷

সরেজমিনে দেখা গেছে, রামপালের বাইনতলা ইউনিয়নের উপর দিয়ে প্রবাহিত দাউদখালী নদীর সগুনা অংশে যানবাহন ও জনসাধারন চলাচলের একটিমাত্র সংযোগ ব্রীজ ছিল ৷ নদী খননের কিছুদিন অতিবাহিত হতেই ব্রীজটি ভেঙ্গে ফেলা হয় ৷ এরপরই একবার মাটির বাঁধ , একবার কাঠের পাটাতন দিয়ে লোক চলাচলের ব্যাবস্থা করা হয় ৷ গত ৬/৭ মাস আগে সেটিও কেটে দেওয়া হয় ৷ ফলে একমাত্র নৌকায় লোকজন পারাপার ছাড়া এই পথে চলাচলের কোনই উপায় নেই ৷ এদিকে ওই রাস্তাটি দিয়ে অন্তত ৪/৫ টি গ্রামের মানুষ যানবাহন নিয়ে চলাচল করে ৷ তারাও পড়েছেন বিপত্তিতে ৷

দাউদখালী নদীর ফয়লাহাট থেকে চাকশ্রী বাজার পর্যন্ত খননের কাজ চলছে ৷ ফয়লাহাট থেকে আনুমানিক ২ কিমি পূর্বে বাইনতলা ইউনিয়নের সগুনা-গোবিন্দপুর এলাকা পারাপারের একমাত্র মাধ্যম কালভার্টটি কাজের শুরুতেই ভাঙা হয়েছিল ৷ পরে স্থানীয়দের অনুরোধে সেখানে মাটির বাঁধ দিয়ে লোকজন চলাচলের ব্যাবস্থা করেন খাল খননের দায়িত্বে নিয়োজিত লোকজন ৷ এরপর থেকেই নানা সময় একবার সেই রাস্তা কেটে পানি সরবরাহ করা হয়, আবার বন্ধ করা হয় ৷ সম্প্রতি সেটিকে স্থায়ীভাবে কেটে দেয়া হয়েছে ৷

প্রতিদিন এই পথ দিয়ে পাশ্ববর্তী গ্রাম সগুনা , কুমলাই, গিলাতলা সহ অন্তত ৪/৫ টি গ্রামের বাসিন্দারা চলাচল করত ৷ অপরদিকে গ্রামের পেছনের একটিমাত্র ভাঙ্গা ইটের রাস্তা দিয়ে প্রতিদিন লোকজন ও ভ্যান রিক্সা চলতে গিয়ে সেটি ও প্রায় চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে ৷ সাথে বাড়তি ঝামেলা হিসাবে যোগ হয়েছে ওই রাস্তার পুরানো এক কালভার্ট ৷ কালভার্টের বেশীরভাগ অংশই ধ্বসে পড়েছে ৷ যে কোন সময় সেটি সম্পূর্ন ভেঙ্গে গিয়ে প্রাণহানীর ঘটনা ঘটতে পারে বলে আশংকা করছেন নিত্যযাত্রীরা ৷

বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় বাসিন্দারা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “প্রতিদিন এই পথ দিয়ে সগুনা গ্রাম আশপাশের গ্রামের লোকজন চলাচল করতো ৷ এখন ভাঙা একটি নৌকায় লোকজন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হচ্ছে ৷ বেশ কয়েকবার ছোটখাটো দূর্ঘটনাও ঘটেছে ৷ রাতে কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে অসুস্থ ব্যাক্তিকে যানবাহনে নিয়ে পারাপারের ব্যাবস্থা নেই ৷ আমরা কৃষি এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য পারাপার করতে চরম বিপত্তির সম্মূখীন হচ্ছি ৷

হাসপাতালে যাবো তাও জানা নেই ৷ এখানে একটি ব্রীজ করার দাবী জানাই ৷ জনসাধারন চলাচলের গুরুত্বপূর্ন এই স্থানে কতৃপক্ষের কাছে ব্রীজ করার দাবী জানিয়েছেন স্থানীয়রা ৷ দুই পাড়ের দুরত্ব কবে ঘুচবে এমনই প্রশ্ন রেখেছেন তারা ৷

50% LikesVS
50% Dislikes
Leave A Reply

Your email address will not be published.