ঘোড়াঘাটে তুলা চাষের উজ্জ্বল সম্ভাবনা থাকলেও জনবল অভাবে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য পূরণ হচ্ছে না ।

১৯

 

ঘোড়াঘাট (দিনাজপুর) প্রতিনিধি,কাইছার‌ হাবিব ।তুলা দেশের অন্যতম সম্ভাবনাময় ফসল হওয়া সত্ত্বেও দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটে জনবলের অভাবে থমকে আছে এই লাভজনক ফসলের চাষ।

ঘোড়াঘাটের মাটিতে তুলা চাষের অপার সম্ভাবনা থাকলেও জনবল না থাকায় খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে এই প্রকল্পের কাজ। বর্তমানে ঘোড়াঘাট ইউনিটে কোনো জনবল না থাকায় ধাপেরহাট ও পলাশবা- ড়ি ইউনিটের যৌথ উদ্যোগে চলছে এই এলাকার তুলা চাষের কার্যক্রম।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, স্থানীয় কৃষকরা কম খরচে বেশি লাভ পাওয়ার আশায় উপজেলার পতিত জমির জনপ্রিয় ফসল চাষাবাদ শুরু করেছে। ইতোমধ্যে গাছে গাছে তুলার ফুল বের হতে শুরু করেছে। খরচের তুলনায় এবার কয়েক গুণের বেশি লাভ উঠে আসবে বলে আশাবাদী এ এলাকার কৃষকরা। চলতি বছর ৩৫ একর জমিতে তুলার আবাদ করা হয়েছে। যা গত বছর ছিল ২০ একর। জানা যায়, ঘোড়াঘাট উপজেলায় কম পুঁজিতে নামমাত্র শ্রমে ও তুলা উন্নয়ন বোর্ড, রংপুর এর সহযোগিতায় তুলা চাষের পরিমাণ ও চাষির

সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে। উৎপাদিত তুলা সরাসরি ন্যায্য দামে কিনে নেয় তুলা উন্নয়ন বোর্ড। ফলে কৃষকরা অন্য ফসলের তুলনায় তুলায় অধিক লাভবান হচ্ছেন। তুলা উন্নয়ন বোর্ড এর সহায়তায় কৃষকরা গতবছর হাইব্রিড রুপালি-১জাতের তুলার চাষ করছিলেন। ফলন ভালো হওয়ায় এবারে হোয়াইট গোল্ড ১ জাতের তুলা চাষ করেছেন। কিছু ক্ষেতে এসিট, জেসিট, আমেরিকান বোলওয়ার্ম, স্পটেট বোলওয়ার্ম ও আঁচা পোকার আক্রমণ দেখা দিয়েছিল। তবে তুল্যচাষিরা কীটনাশকসহ কেউ কেউ ফেরোমন ফাঁদ ও পার্চিং পদ্ধতিও ব্যবহার করছেন। তুলা গ্রীষ্মকালীন ফসল। মে মাসের শেষ ভাগ থেকে শুরু করে জুনের প্রথমার্ধ পর্যন্ত জমিতে তুলা বীজ বপন করতে হয়। বীজ বপনের ৬ মাস পর তুলা সংগ্রহ করা যায়। এবছর রুপালি-১ হোয়াইট গোল্ড-১, জাতের তুলা বেশি চাষ করা হয়েছে। এছাড়া ডিএম-৪, সিডিবি ও সিবি-১২ জাতের তুলা চাষ করা হয়েছে। চলতি বছর ৩৫ একর জমিতে তুলার আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে বলে জানান ঘোড়াঘাট ইউনিটের দায়িত্ব

প্রাপ্ত কটন ইউনিট ইনচার্জ আব্দুল হানিফ। ভালো ফলন ও ন্যায্য দাম পাওয়ায় আগামীতে চাষির সংখ্যা অনেক বাড়বে বলে আশা করছেন তুলা উন্নয়ন বোর্ডের এ কর্মকর্তা। স্থানীয় তুলা চাষিরা জানান, রুপালি-১, হোয়াইট গোল্ড-১জাতের তুলা প্রতি বিঘাতে বীজসহ ১৫-১৮মণ করে উৎপাদন হয়। যার বর্তমান বাজারমূল্য কমপক্ষে ৫০-৬০ হাজার টাকা। অনুর্বর জমিতে অন্য কোনো ফসলে এই লাভ পাওয়া কোনোক্রমেই সম্ভব নয়। আবার একই জমিতে সাথী ফসল হিসেবে মূলা শাকসহ বিভিন্ন শাকসবজি ও মসলাজাতীয় ফসল চাষ করেও বাড়তি আয় করা সম্ভব। ধাপেরহাট ও পলাশবাড়ি কটন ইউনিট ইনচার্জ এর সাথে কথা হলে তারা বলেন, সরকার যদি এই ইউনিটে দ্রুত জনবল নিয়োগ দেন তাহলে রংপুর জোনের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ফলন এই ঘোড়াঘাটের মাটি থেকে উৎপাদন সম্ভব। কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, ঘোড়াঘাট উপজেলার মোট জমির পরিমাণ ১৪ হাজার ৩৫৩ হেক্টর। এর মধ্যে ১১ হাজার ৩৬৭ হেক্টর উঁচু ও মাঝারি জমি। এসব জমিতে তুলা চাষের উজ্জ্বল সম্ভাবনা রয়েছে।

100% LikesVS
0% Dislikes
Leave A Reply

Your email address will not be published.