রুটি ওয়ালা
– নাজমুল ইসলাম রাজু
ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল
তীব্র শীতের রাতে
পথিক ছিলেন- দূরের পথের
কেউ ছিলোনা সাথে ।
ক্লান্ত হয়ে শরীর- গেলেন
মসজিদের ও মাঝে
কাটিয়ে যাবেন রাতটি আজি
ভাবনা- সকাল কাজে ।
পড়তে শুরু করেন হাদীস
একটু সেথায় হেলে
এমন সময় এক দারোয়ান
বল্লো কেবা এলে ?
নয়তো যাপন- এখানে রাত
বলছে কাছে এসে-
যাও বেরিয়ে- ভাবটা ত্বরা
নয় কিবা হয় শেষে !
চল্লো কিছু- সেই অনুনয়-
কাজ হলোনা কোনো
বাইরে যেয়ে একজনা রে-
বল্লো ভাইটি শোনো ?
তোমার চুলার আগুন তাপে
কাটাই যদি বসে-
বলবে কিছু আমায় তুমি
বদনামের ঐ দোষে ?
বলে যুবক- সু-স্বাগতম
কিইবা আমার ক্ষতি ?
পোহালে কি অগ্নি তাপের-
কম হয়ে যায় জ্যোতি ?
অভয় পেয়ে বসেন পথিক
তার চুলাটির পাশে
করেন শুরু হাদীস পড়া
আবার মনের আশে ।
গড়ছে রুটি- পড়ছে যুবক
আসতাগফিরুল্লাহ ঠোঁটে
আটার খামি ডলছে বেলন-
ভুলছেনা ঠোঁট মোটে !
হাতটি দিয়ে চুলার ভিতর
আনছে রুটি তুলে
নিচ্ছে টাকা ক্রেতার ঠিকি
যাচ্ছেনা তাও ভুলে !
এমনি এমন- পড়তে দেখে
অবাক হয়ে তারে !
জিজ্ঞাসিলো- পথিক একই
পড়ছো বারে- বারে ?
বল্লো তখন, ঐ যুবকে
মুজতা ঝুবুত দাওয়া-
এই আমলের বরকতে মোর
সত্যি দোয়ার পাওয়া ।
বলছে কিযে ! ভাবছে হাম্বল-
এই দোকানি আজি ?
সব দোয়া তার হচ্ছে কবুল-
কোন সে কাজের কাজি !
বলে আবার- ঐ যুবকে
সত্যি বলছি আমি-
এই জীবনে- সব দোয়া মোর
পুরান অন্তর্যামী ।
তবে আমার একটি দোয়া
হয়নি পূরণ শুধু-
না পুরা সে- দোয়ার কারণ ?
শূন্য উত্তর ধুধু ।
সব দোয়া যার হলো কবুল
একটি শুধু বাকী-
জানতে চেয়ে ইমাম হাম্বল
কৌতূহলি আঁখি ।
বলবে আমায় কি সে দোয়া
বাকী পূরণ হতে ?
বল্লো যুবক, শুনছি আমি-
দুনিয়া সবার মতে !
শ্রেষ্ঠ জ্ঞানে আল্লাহ্ ভক্ত
ইমাম হাম্বল ভবে-
দেখতে তারে চেয়ে দোয়া
পুরায়নি সাধ- রবে !
পেলে কভু দেখা তারই
ধরবো একটু হাতে-
আঁকবো চুমু কপালটি তে-
মন জুড়াবে তাতে ।
শুনে হাম্বল চুপ থাকিবে
আর বা কেমন করে ?
কান্না ভেজা কন্ঠে বলে-
শোনো যুবক- ওরে !
এই দোয়াটাও কবুল তোমার
আজকে আল্লার দানে-
তোমার চাওয়ার সেই মানুষ-ই
হাজির তোমার পানে ।
আমি তো সেই- জগৎখ্যাত
ইমাম হাম্বল নামে-
দেখতে যারে দোয়া তোমার
আল্লাহ পাকের শানে ।
তখন যুবক বিস্ময়েতে
মুহাদ্দিসের হাতে-
হাত রাখিয়া চুম্বিলো- ঢেউ
অশ্রু আঁখির পাতে ।
***