ভুয়া এসপি পরিচয়ে জমি দখলের পায়তারা

১৪

ভুয়া এসপি পরিচয়ে জমি দখলের পায়তারা

দৈনিক সাহসী কণ্ঠ, ক্রাইম  ডেস্ক:

আশুলিয়ার আউকপাড়ায় সরকারী সম্পত্তি দখল বাণিজ্যে মেতে উঠেছে ভুয়া এসপি পরিচয় দানকারী মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর থানার বাঘড়া সরকার বাড়ীর মৃত মজিদ সরকারের ছেলে মোস্তাফিজুর রহমান সরকার মোস্তাক সহ তার অনুসারীরা।
শারীরিক গঠনে সুদর্শনের সুবাদে একটি নাটকে এসপি ভূমিকায় অভিনয়ের চান্স পেয়ে নিজেকে অবঃ এসপি পরিচয় দিয়ে সমাজে করে বেড়াচ্ছে নানা অপরাধ। ভূয়া এসপি পরিচয়ের কারনে এই প্রতারক মোস্তাক ঢাকার নিউমার্কেট থানার মামলায় এক থেকে দেড় বছর আগে জেলও খেটেছেন। তার গ্রামের বাড়ী থেকে সমগ্র বাংলাদেশ সর্বত্রই তার অপরাধ বিস্তৃত। আইন কানুনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে তার অপরাধের সাম্রাজ্য দিন দিন বেড়েই চলছে।
মূলতঃ কোর্ট অব ওয়ার্ডসঃ ঢাকা নবাব এস্টেটের মালিকানা সম্পত্তির ভোগ দখলীয় বৈধ লীজি ন্যাশনাল প্লাজা বহুমূখী সমবায় সমিতি লিঃ এর এক সময়ের সম্পাদক ছিলেন এই প্রতারক মোস্তাক। সম্পাদক থাকা কালীন তার আপন ছোট ভাই মিজান সরকার এবং আশুলিয়া রুস্তমপুরের প্রভাবশালী ভূমিদস্যু শহীদুল্লাহ দেওয়ান ও ইলিয়াস দেওয়ানের নামে একটি জাল দলিল সৃজন করে সরকারী ২০ একর সম্পত্তির মালিক সাজায়। সরকারী দলিলে স্বাক্ষর করে সাধারন মানুষ ও সমিতির সদস্যদের নিকট হইতে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেয় এই প্রতারক ভূয়া এসপি মোস্তাক গং। জাল দলিল সৃজন করে মিথ্যা মামলা – হামলায় জড়িয়ে সংস্কার বোর্ড তথা সাধারন লীজিদের বিবাদী করে মোস্তাক – শহীদুল্লাহ গং হয়রানী করতে থাকে। দখলবাজী- ভূমিদস্যুতা এদের নেশা ও পেশা। আম- মোক্তার নামা দলিল মূলে তাদের আনীত মামলাটি মহামান্য উচ্চ আদালত গত ইং ২২/০২/২৩ তারিখে খারিজ করে দিয়ে কোর্ট অব ওয়ার্ডসঃ নবাব এস্টেটের মালিকানা স্বত্ব ও লীজিদের দখল স্বত্ব ঘোষনা করেন। তাদের দলিলটি জাল দলিল হিসেবে প্রতীয়মান হয়।
অনুসন্ধানে জানা যায়, ভূমিদস্যু ভূয়া এসপি মোস্তাক আহমেদ সহ শহীদুল্লাহ গংয়ের জাল দলিল সৃজন ও সরকারী সম্পত্তি বিক্রির দায়ে ইং ২০১০ সালে নবাব এস্টেটের তৎকালীন ম্যানাজার ন্যাশনাল প্লাজা সমিতির লীজ বাতিল করলেও সমিতির ভূমিহীন সদস্যরা ভোগ দখলে ছিলেন। ২০ একর জমিতে ঘর বাড়ী তুলিয়া, হাজার হাজার ফলজ ও বনজ গাছ রোপন করে পরিবার পরিজন নিয়ে শান্তিপূর্ণ বসবাস করছিলেন। পরবর্তীতে ব্যাক্তি বিশেষের দায় সংগঠনের সাধারন সদস্যদের তথা সংগঠনের নয় মর্মে ন্যাশনাল প্লাজা বহুমূখী সমবায় সমিতি লিঃ এর আবেদন বিবেচনায় প্লট নকশা, চৌহদ্দি, সীমানা নির্ধারণ পূর্বক ইং ২০১৭ সনে লীজ পূনর্বহাল করা হয়।
বাতিল ও পূনর্বহালের মধ্যবর্তী সময়ে আলাল উদ্দিন গং, কামাল উদ্দিন গং ও পরিবেশ উন্নয়ন সংস্থার নামে লীজ কর্তৃপক্ষ ভিন্ন দাগ ও চৌহদ্দিতে লীজ প্রদান করে। সরকারী সম্পত্তি পূনঃরুদ্ধারের তকমায় ভূমি সংস্কার বোর্ডের কিছু অসাধু কর্মকর্তা, স্থানীয় প্রশাসন, ইউপি চেয়ারম্যান এর যোগসাজশে কামাল, আলাল ও পরিবেশের আজাদ গং ন্যায়নালের বৈধ বাস্তব দখলীয় সম্পত্তি জবর দখলের পাঁয়তারায় লীপ্ত। জানা যায় আশুলিয়া ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ডস্থ আউক পাড়ায় নবাব এস্টেটের সম্পত্তিতে ভূয়া এসপি মোস্তাক- শহীদুল্লাহ গং আর আলাল-কামাল-আজাদ গং এর দখল পাল্টা দখলের খেলায় প্রতারিত বৈধ ভূমিহীন লীজিরা। সরকারী সম্পত্তির বেচা কেনার যেন হাঁট বসেছে আউকপাড়ায়। নির্বাক বৈধ লীজিরা।

কামাল- আলাল- আজাদের অন্যতম পৃষ্ঠপোষক শাহাবুদ্দিন চেয়ারম্যানের ম্যানাজার আজমের নেতৃত্বে গাজী অপু, আকাশ, শিমুল, যুব নেতা তালুকদার সাদ্দাম, কামালের ভগ্নিপতি শিকদার বাহিনীর আলী (মোঃ আলী), নুরু, ফকির মন্নান, লম্বু হালিম, লম্বু সেলিম, খাঁডা কবির, বিশা, হাফিজ, শাহীনুর, দীন ইসলাম সহ নাম না জানা অনেকে দিনে দুপুরে বৈধ লীজিদের দেয়াল- ঘর-বাড়ী ভেঙ্গে, হাজার হাজার ফলজ ও বনজ গাছ কেটে গড়ে তুলছে অট্টালিকা আর মার্কেট।
ভূমি সংস্কার বোর্ডের কিছু অসাধু কর্মচারী ও প্রশাসনের প্রত্যক্ষ ইন্দন ও সহযোগিতায় বৈধ ভূমিহীন লীজিরা আজ বাস্তুচ্যুত। নার্সারী ব্যবসার আড়ালে ঘাপটি মেরে থাকা ভূমিদস্যুদের অন্যতম হাতিয়ার সামিউল ফকির আর কামাল- আলাল- আজাদের হাতিয়ার ভূমির অসাধু জনাকয়েক কর্মচারী। চলছে ভালো দখলবাজী, ভূগছে ভালো ভূমিহীন বৈধ লীজি।

আজাদ-কামাল- আলাল সরকারী জমি বিক্রি করছে প্রতি শতাংশ এক থেকে দেড় লাখ টাকা। লোক মুখে বলাবলি দখল ঠিক রাখতে নাকি চেয়ারম্যানকে দিতে হয় প্রতি শতাংশ ত্রিশ হাজার টাকা। সত্যতার খোঁজে চেয়ারম্যানকে পাওয়া যায়নি।

উক্ত জমির বৈধ লীজি ন্যাশনাল প্লাজা বহুমুখী সমবয় সমিতি নামে একটি সংগঠন হলেও ভূমি সংস্কার বোর্ড এর কিছু অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কারণে আজকে তারাও প্রায় বঞ্চিত।
ভূয়া এসপি মোস্তাক- শহীদুল্লাহ গং কে হটিয়ে উক্ত সম্পত্তির লীজি মালিক দাবি করে উক্ত জমিগুলো প্লট আকারে শতাংশ প্রতি এক থেকে দেড় লক্ষ টাকায় বিক্রয় করছেন কামাল- আলাল- আজাদ গং
আজাদ – আলাল- কামাল বাহিনীর অন্যতম সহচর গাজী অপুর জন্ম ফরিদগঞ্জ, চাঁদপুর হলেও বসবাস করেন মিরপুর ৬ নম্বর। এই বিএনপি নেতার ঢাকায় বহুতল ভবন থাকলেও মোড়লগীরি করেন আদর্শ গ্রামে। বিএনপি’র রাজনীতি করলেও আওয়ামী লীগের সাথে সখ্যতা করে হয়েছেন আশুলিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতা। পরিচয় দেন ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। আদর্শ গ্রামে গড়ে তুলেছেন প্রায় ১০ টি বাড়ি, এবং উক্ত জমিতেও তিন নিয়েছেন ৫ শতাংশের কয়েকটি প্লট,সেখানে তিনি প্রায় কোটি টাকা খরচ করে তৈরি করছেন নতুন বাড়ী আর মার্কেট।

মাজার রোডের পাশেই প্রায় পাঁচটি প্লট নিয়েছেন আশুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহবুদ্দিন মাদবরের ম্যানেজার পরিচয়ে আজম নামে এক ব্যক্তি। তিনিও গাছপালা কেটে বাউন্ডারি ভেঙ্গে করছেন মার্কেট।
এই ব্যাপারে বৈধ লীজি ন্যাশনালের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আইয়ূব আলী শিকদারকে প্রশ্ন করলে তিনি জানান, আমাদের বৈধ লীজির উপর হামলা, মামলা, নির্যাতন আর তাদের দখল চ্যুতির বিষয়ে লীজ কর্তৃপক্ষ ও প্রশাসনকে অবহিত করা হলেও তারা সম্পূর্ণ নিরব। আমরা অসহায়।
ভূমিহীন লীজিদের বাস্তুচ্যুতি করে ক্রয়-বিক্রয়ে প্রতারিত হচ্ছে সাধারণ মানুষ।

50% LikesVS
50% Dislikes
Leave A Reply

Your email address will not be published.