লেখক: আনোয়ার হোসেন বাদল।
ফুলের মতো হাসতে হবে,
এটাই ছিলো পণ,
দুঃখ ভুলে সে কারনে হাসছি আজীবন।
কিশোর বেলা যখন,
নদী আমায় তাড়িয়ে দিলো তখন,
ভিটে মাটি খেলো নিঠুর নদী,
হেসেছিলাম আমি নিরবধি।
বললো সবে,
ওই ছোড়াটা পাগল হলো নাকি!
আমি বলি
হাসি ছাড়া রইলোটা কি বাকী?
ক্ষুধায় তখন আগুন জ্বলে পেটে,
বাসন ভরা পানির সাথে,
একমুঠো ভাত খাচ্ছি চেটেচেটে,
অভাব হলো নিত্যদিনের সাথী,
হেসে হেসে ঝাঁপিয়ে পড়ি জলে,
এবং জলে একলাই জাল পাতি।
ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ ধরা পড়ে,
মায়ের মুখে সুখের হাসি ঝরে,
বাবার কোচে টাকা,
তরতরিয়ে ঘুরছে তখন
আমার মায়ের ছোট্ট ঘরে নিত্য খুশির চাকা,
ভাবছি বুঝি ঘুরেই গেলো রাশি,
খুশির চোটে আমি তখন খলবলিয়ে হাসি।
রাশি কী আর ঘোরে,
বিধিলিপি যায় কি ভাঙা কারো গায়ের জোড়ে?
ভাগ্য যাহার অপ্রসন্ন বিধি তাহার বাম,
নরক নিবাস হবেই হবে,
যদিও তার অনেক পুন্যকাম।
জীবনব্যাপী তালাশ করি সাধু মহাজন,
নীতির প্রশ্নে পাহাড় ডিঙ্গাই খুঁজি বৃন্দাবন,
হাসিমুখে সব সয়েছি ক্ষুধার কষ্ট জ্বালা,
সবিনয়ে এড়িয়ে গেছি দুষ্টজনের মালা,
চারিদিকে দুর্নীতি আর মধ্যে আমি একা,
ক্ষুধার জাগর পেটের মধ্যে মুখে হাসির রেখা।
সেই থেকে এই দুঃখের সাথে,
এক জীবনের বাস,
বুকের ভেতর একজীবনই করুণ দীর্ঘশ্বাস,
তবু আমি মানুষ ভালোবাসি,
সে কারনে হাজার দুঃখেও হাসতে ভালোবাসি।
নিষ্ঠুরতা ঘৃণা যাদের মনে,
সুখের পাখি খোঁজেন যারা ধনে,
শোষক কিংবা রক্তচোষা জোঁক,
পরনারী আর পরের ধনে যাদের বেশী ঝোঁক
হাসতে তারাও জানে,
ক্রুর হাসি তাদের ঠোঁটে,
কিন্তু তারা জানে কী আর শুদ্ধ প্রেমের মানে?
বক্র হাসি ক্রুর হাসি নিষ্ঠুরতার নাম,
মিচকে হাসি শয়তানী ভাব প্রেমে তা নিস্কাম,
তাইতো বলি মানুষ ভালোবেসে,
হা-হা-হা, খলবলিয়ে সবাই উঠুক হেসে।
হাসির মতো ভালো জিনিস নাই,
বাংলাদেশের সবার মুখে হাসি দেখতে চাই।