মেয়ে সেচ্ছায় বিয়ে করে স্বামীর কাছে চলে যাওয়ায়, বাবা করেছিল অপহরণ মামলা।

৩০

মোঃ সজীব হোসাইন, জেলা প্রতিনিধি- ময়মনসিংহ।
মিরপুর গার্লস আইডিয়াল ল্যাবরেটরি ইন্সটিটিউটের ছাত্রী জেরিন ও ইন্টারনেট সংযোগ প্রধানকারী একটি প্রতিষ্ঠানের কর্মচারী- তুষার মিয়ার মাঝে নয় মাসের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। জেরিনের বাবার ঢাকায় ৭টি ব্যক্তিগত বাসা থাকলেও- বিপরীতে তুষার ছিল মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান। নয়মাস প্রেমের পর ২০১৮ সালের ১৪ ই আগষ্টে জেরিন ও তুষার বিয়ের বন্ধনে আবদ্ধ হন। বিয়ের পর জেরিন তুষারের কাছে চলে যায়। তার বাবা বিয়ের সম্পর্ক অস্বীকার করে মিরপুর মডেল থানায় তুষার সহ আরো ০৫ জনের বিরুদ্ধে ২০১৮ সালের ২রা ডিসেম্বরে অপহরণ মামলা দায়ের করে। পুলিশ জেরিনকে উদ্ধার করার পর জেরিন বক্তব্য দেয়, তুষারের সাথে তার ৯ মাসের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। তারা বিয়েও করেছেন। জেরিনের বাবা আদালতে মেয়ের অপ্রাপ্ত বয়স প্রমাণ করায় সেই বিয়ে টিকেনি।পরে ২০২২সালের ১২ই জুন ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনাল-৮ তুষারকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের রায় দেয়। অপ্রাপ্ত বয়স্ক জেরিন এখন প্রাপ্ত বয়স্ক হয়েছে। যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রাপ্ত তুষারের সঙ্গে ২০২৩ সালের ১৯ শে ফেব্রুয়ারী কলেজ থেকে আবার পালিয়ে যান জেরিন। পূণরায় বিয়ে করে কক্সবাজারে সংসার শুরু করে জেরিন। সংসার জীবনে গর্ভবতীও হয়েছেন। ২০২৩ সালের ০৫ জুন যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রাপ্ত আসামি তুষারকে অপহরণ মামলায় পুলিশ গ্রেফতার করে। পাঠানো হয়েছে জেলহাজতে। জেরিন বলেন,” ইংলিশ মিডিয়ামে পড়ার কারণে বয়সের একটা গেপ আছে। প্রথম যখন বিয়ে হয়, তখন আমার বয়স ছিল ১৯, এখন আমার বয়স ২৩ বছর। কিন্তু বাবা ১৩ বছর দেখিয়ে মিথ্যা মামলা করেছিলেন। চার বছর বাবা বহু নির্যাতন করেছন, এখন আর বাবার কাছে ফেরত যেতে চাইনা। এই মাললার মূল আইনজীবী ব্যারিস্টার আশ্রাফ রহমান জানান, হাইকোর্টে শুনানি কালে মেয়ে নিজেই এসে আদালতে তার বক্তব্য দেন, “রাষ্ট্রপক্ষ তীব্র বিরোধীতা করলে ও বয়স নিয়ে সন্দেহ তুললে, আদালত পরের দিন আদেশের জন্য রেখেদেন। যেহেতু তুষারের সঙ্গে জেরিনের প্রেমের সম্পর্ক ছিল এবং জেরিন নিজ ইচ্ছায় তুষারের সঙ্গে গেছে, তাই এখানে অপহরণের ঘটনা ঘটেনি। আদালত মেয়ের বক্তব্য শুনে এবং তাদের বক্তব্য ও আইনি বিশ্লেষণে সন্তুষ্ট হয়ে আদালত ১৫ দিনের মাথায় জাবিন মঞ্জুর করেন। আপিল বিভাগও তাদের জাবিন বহাল রেখেছেন। এখন শুধু তুষার কারামুক্তি জন্য অপেক্ষা করছেন। এমনভাবে বহু মেয়েদের বাবারা মামলা করে থাকেন, বলে অপর একজন ভুক্তভোগী জানিয়েছেন। মিথ্যা মামলা করে তুষারকে হয়রানি করায় জেরিনের বাবার কি কখনো শাস্তি হবে?

100% LikesVS
0% Dislikes
Leave A Reply

Your email address will not be published.