বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দল ভেঙে দেয়া সময়ের দাবি |

৪২৫

 

নিজস্ব প্রতিবেদক।

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দল তার অতীত গৌরব হারিয়ে এখন তিলে তিলে ধ্বংশের দিকে যাচ্ছে বলে সাধারণ নেতাকর্মীদের ধারনা ।বর্তমানের অপরিপক্ক নেতৃত্ব দলকে না পারছে ঠিক মতো গাইড করতে না পারছে আন্দোলনের উপযোগী করে গড়ে তুলতে ।তাই বিএনপি তথা স্বেচ্ছাসেবক দল কে ভালোবাসে এমন নেতাকর্মীদের মাঝে ক্ষোভ ও হতাশা কাজ করছে ।

কাজী সিরাজের হাত ধরে গড়ে উঠা স্বেচ্ছাসেবক দল রুহুল কবির রিজভী ও ফজলুল হক মিলনের মাধ্যমে পরিচিতি লাভ করে এবং বিএনপির একটি অংগ সংগঠন হিসেবে দলের নেতাকর্মীদের মাঝে আশার সঞ্চার করে ।মূলত হাবিব উন নবী খান সোহেল ও মীর শরাফত আলী সপু ,সফিউল বারী বাবুর নেতৃত্বে স্বেচ্ছাসেবক দল পরিপূর্ণতা লাভ করে ।সারা দেশে‌ এর ব্যাপক বিস্তার লাভ করে ।ছাত্রদলের সাবেক ত্যাগি ও কর্মঠ নেতৃবৃন্দ এতে যোগ দিলে অল্প কিছু দিনের মধ্যেই স্বেচ্ছাসেবক দল ব্যাপক পরিচিতি এবং দলের অন্যতম অংগ সংগঠন হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে।

পরবর্তীতে সফিউল বারী বাবু ও আব্দুল কাদির ভূঁইয়া ছাত্রদলের জনপ্রিয় দুই নেতাকে স্বেচ্ছাসেবক দলের দায়িত্ব দিলে দলের নেতাকর্মীদের মাঝে ব্যাপক প্রান চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয় । করোনা কালিন দুঃসময়ে সফিউল বারী বাবুর অকাল মৃত্যুতে বিএনপি এবং স্বেচ্ছাসেবক দল উভয়েই ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয় ।সিনিয়র সহসভাপতি মোস্তাফিজুর রহমানকে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি করে স্বেচ্ছাসেবক দল তার গতিশীলতা ধরে রাখলেও,ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি জিলানী এবং ছাত্রদলের ব্যর্থ সভাপতি রাজিবকে সংঘঠনের দায়িত্ব দেয়ায় মূলত স্বেচ্ছাসেবক দল মুখথুবড়ে পড়ে।সাথে নাজমুলের মতো দায়িত্বজ্ঞানহীন, লোভী যাকে অনেকে বিকাশ নাজমুল বলে ডাকে তাকে দায়িত্ব দিয়ে দলকে বিপর্যয়ের মধ্যে ফেলে দিয়েছে ।

স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক নেতৃবৃন্দ বিশেষ করে আশরাফ রুবেল, স‌ওগাতুল সাগির ,মাহাবুবুর রশিদ,মাহমুদুল বারী , আকরামুজ্জামান টোকোন,আবু জাফর বাদল,বেলাল আহমেদ,কাদের হালিমি,হুমায়ূন কবির,সালেহ আহমেদ কাঞ্চন, সিকদার ডালিম ,মোশাররফ হোসেন ,জাফর আলী , সোলাইমান,মাসুদ রেজা ,মির্জা ইয়াসিন আলী ,আকরাম,হান্নান,ওমর ফারুক,শেখ হেলাল, জহিরুল, জিয়াউর রহমান, মোস্তাফিজুর রহমান সহ অসংখ্য ত্যাগি নেতাকর্মীদের বাদ দেয়া হয়েছে ।যারা এখনো আন্দোলনের মাঠে প্রতিনিয়ত উপস্থিত থাকেন ।তাদের বাদ দেয়ার কারন জানতে এই সব নেতৃবৃন্দ দলের সিনিয়র নেতৃবৃন্দ বিশেষ করে মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়,আব্দুল আউয়াল মিন্টু,রুহুল কবির রিজভী,হাবিব উন নবী খান সোহেল,মীর শরাফত আলী সপু সহ অনেক সিনিয়র নেতৃবৃন্দের সাথেই কথা বলেছেন বলে তারা উল্লেখ করেছেন । এছাড়া দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও দলের মহাসচিব বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন । মহাসচিবের সাথে তারা একাধিকবার সাক্ষাত করে তাদের অধিকারের কথা বলেছেন ।

জিলানী , রাজিব তথা স্বেচ্ছাসেবক দলের বর্তমান নেতৃত্ব গত ২৯ জুলাই অবস্থান কর্মসূচিতে পুরোপুরি ব্যর্থতার পরিচয় দেয় । বিভিন্ন জনের কাছে টাকা নিয়ে নিজের ঘরের লোকদের দিয়ে কমিটি করার ফলে ২৯ জুলাই অবস্থান কর্মসূচিতে তাদের অংশগ্রহণ ছিল না বলাই চলে । স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি জিলানী মাত্র তিন চারজন কর্মী নিয়ে শনির‌ আখড়ার অবস্থান‌ কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেন তাও সময়ের অনেক পড়ে তিনি এই কর্মসূচিতে যান।সাথে কেন্দ্রীয় কমিটির মাত্র একজন নেতা তার সাথে ছিল ।যদিও এই রাসেল সবসময়ই তার বাহক হিসেবে সংগে থাকে ।অথচ কেন্দ্রীয় কমিটির আর কোন নেতৃবৃন্দ‌ই সভাপতির সাথে অবস্থান কর্মসূচিতে অংশ গ্রহন করে নি ।

সাধারণ সম্পাদক রাজিবকে ফোন করে ঘুম থেকে জাগিয়ে অবস্থান কর্মসূচিতে নেয়া হয়েছে ।যদিও প্রোগ্রাম শুরুর বেশ পরে তিনি গিয়েছেন,যদিও অনেকে বলে তিনি কর্মসূচিতে সঠিক ভাবে অংশগ্রহণ করেন নি ।অনেকটা দায়সারা গোছের অংশগ্রহণ ছিল তার ।উত্তরার ও ঐ স্হানে তার সাথে কেন্দ্রীয় কমিটির তেমন কোন নেতা কর্মীই ছিল না ।

নাজমুল পুরানো ঢাকার স্পটে থাকলেও পুলিশি বেরিকেডের কারনে সব সময় দূরে দূরে অবস্থান করেছেন । এবং যখন গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের উপর হামলা হয় তখন তিনি দৌড়ে ঐ এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যান ।তার সাথে নুরুজ্জামান ছাড়া কেন্দ্রীয় কমিটির আর কোন নেতা ছিল না ।

২১৫ সদস্যের স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় কমিটির অর্ধেকের বেশি‌ই প্রতিটি প্রোগ্রামে অনুপস্থিত থাকে ।অথচ বিগত সোহেল- সপু,ও বাবু-জুয়েল কমিটির প্রায় ২৮০জন নেতাকে বাদ দিয়ে জিলানী রাজিব পকেট কমিটি গঠন করেছে ।এই পকেট ও বানিজ্যিক কমিটি পকেটেই থাকে মাঠে ময়দানে আন্দোলনে আর দেখা যায় না ।তাই বিএনপির নেতাকর্মীদের মাঝে স্বেচ্ছাসেবক দলের কর্মকাণ্ড নিয়ে ব্যাপক হতাশা ও ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। সাধারণ নেতাকর্মীরা মনে করেন অবিলম্বে এই কমিটি ভেঙে দিয়ে ত্যাগি ও দলের জন্য নিবেদিত প্রাণ নেতাদের সমন্বয়ে যতদ্রুত সম্ভব নতুন কমিটি দেয়া হবে ততই দলের জন্য মঙ্গলজনক হবে ।

জিলানী ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি থাকাকালীন দলের জন্য তেমন কোন কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে নি ।দক্ষিণের থানা কমিটি গঠনে ব্যাপক দূর্নীতির সাথে জিলানীর সংস্রব ছিল বলে অনেকের ধারণা।আর এই কারনে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জনাব তারেক রহমান কর্তৃক ঢাকা মহানগর দক্ষিণের যে সাংগঠনিক টিম করে দেয়া হয় সেই টিমকে জিলানী কোন কাজ‌ই করতে দেন‌নি ।এই নিয়ে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের সাথে দফায় দফায় মিটিং করেন‌ সাংগঠনিক টিম ও কেন্দ্রীয় কমিটির নেতৃবৃন্দ। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের সাথে কথা দিলেও তিনি সাংগঠনিক টিমকে কোন কাজ‌ই করতে দেন নি । এবং এটা যে তিনি ইচ্ছাকৃতভাবেই করেছেন তা অত্যন্ত দম্ভভরে স্বীকার করেছেন কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি হ‌ওয়ার পর ।তিনি নিজেই বিভিন্ন জনের কাছে দম্ভভরে নিজেকে জাহির করেছেন যে,আমি চাই নি তাই সাংগঠনিক টিম কাজ করতে পারে নি । মিটিং থেকে বেরিয়ে পরে আমি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানকে ফোন দিয়ে বলতাম । ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানকে আমি যা বলি তাই শুনে । আমার কথার বাইরে যেতো না ।তিনি তার এলাকার থানার সভাপতিকে কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি,মাত্র এক দুইবছর রাজনীতি করা ,তাকে মোটরসাইকেলে সার্ভিস দেয়ার কারনেও কেন্দ্রীয় কমিটির সম্পাদক পদে নিয়োগ দিয়েছে ।এ ছাড়া রাজনীতির মাঠে দীর্ঘদিন অনুপস্থিত,বিদেশে অবস্থানরত ব্যক্তিকেও কেন্দ্রীয় কমিটির নেতা বানিয়েছেন জিলানী।

রাজিবের বিরুদ্ধে আঞ্চলিকতার যে অভিযোগ উঠেছে তার বেশ মারাত্মক।বলা হয়ে থাকে বর্তমানের ২১৫ সদস্যের কমিটির অর্ধেকের ও বেশি নেতা কর্মী বরিশাল অঞ্চলের।মাদকের সাথে তার সংশ্লিষ্টতা বেশ পুরনো।তিনি কখনোই কোন কর্মসূচিতে সময় মতো হাজির হতে পারেন না ।বিশেষ করে সকালের কর্মসূচিতে তিনি সবার শেষেই আসেন‌ বলে অভিযোগে জানা যায়।

নাজমুল,বিকাশ নাজমুল বলেই বেশি পরিচিতি লাভ করেছে ।কমিটি গঠনে ব্যাপক আর্থিক লেনদেনের সাথে তার সংশ্লিষ্টতার খবর পার্টি অফিসের সবার মুখে মুখে।

তাই দলীয় নেতাকর্মীদের চাওয়া অবিলম্বে এই কমিটি ভেঙে আন্দোলন মুখী একটি শক্তিশালী কমিটি গঠনের মাধ্যমে স্বেচ্ছাসেবক দলের অতীত ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনা হোক ।যাতে বর্তমান স্বৈরাচারী সরকারের বিরুদ্ধে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে ।দলের ভ্যানগার্ড হিসেবে আর্বিভূত হতে পারে স্বেচ্ছাসেবক দল।

100% LikesVS
0% Dislikes
Leave A Reply

Your email address will not be published.