নিউজিল্যান্ডের কাছে সিরিজ হারলো বাংলাদেশ |

৬২

বশির উদ্দীন,ঢাকা প্রতিনিধি |

আজ মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ ও নিউজিল্যান্ডের মধ্যকার তৃতীয় ওয়ানডেতে টসে জিতে বাংলাদেশ ব্যাটিং করার সিদ্ধান্ত নেয়।মেঘলা আকাশ গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টির মধ্যে নির্ধারিত সময়ে খেলা শুরু হবে কিনা প্রথম থেকেই সন্দেহ ছিল।সেই সন্দেহ জোড়ালো হয় টসের পরপরই গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টির আর্বিভাব। স্বাভাবিক ভাবেই মাঠ কর্মীরা পীচ ঢেকে দেয় ত্রিপল দিয়ে । নির্ধারিত সময়ের ২০ মিনিট পরে খেলা শুরু হয় ।

আজ দলে অনেকদিন পর ফিরে আসা জাকির হাসান অপর উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান তানজিদ হাসান তামিমের সংগী হয়ে খেলা শুরু করেন । কিন্তু যথারীতি আজ‌ও দলের শীর্ষ ব্যাটসম্যানরা ব্যর্থতার পরিচয় দেন।মাত্র ৬ রানে ১.৩ ওভারে জাকির হাসান এডাম মিলনের বলে বোল্ড হয়ে দলকে বিপর্যয়ের মুখে ফেলে দেন ।অপর সংগী তানজিদ হাসান স্লীপে এলেনের হাতে ধরা পড়েন পেসার টেন্ট বোল্টের বলে । তৌহিদ হৃদয় ক্রীজে এসে একটু মারমুখী হয়ে বোলারদের শাসন করতে চেয়েছিলেন কিন্তু অতিরিক্ত শর্ট খেলার মানসিকতায় পয়েন্টে উইল ইয়ং এর হাতে পয়েন্টে ধরা পড়ার আগে ১৭ বলে ৩ টি চারের সাহায্যে ১৮ রান সংগ্রহ করে সাজঘরে ফিরেন।

সিরিজের প্রথম ম্যাচ খেলতে নেমে অধিনায়কের দায়িত্ব পাওয়া নাজমুল হোসেন শান্ত বেশ সাবলীল ভাবে ব্যাট করেছেন সাথে সাবেক অধিনায়ক মুশফিকুর রহিমের যোগ্য সহচর্য দলকে খাদের কিনারা থেকে টেনে তুলেছেন। কিন্তু দূর্ভাগ্যজনক এক আউটের শিকার হয়ে সাজঘরে ফেরেন মুশফিকুর রহিম।ফার্গুসনের উইকেট সোজা বলে আড়াআড়ি ভাবে খেলতে গিয়ে ব্যাটের কোনায় লেগে উইকেটে গিয়ে লাগে । মুশফিক পা দিয়ে চেষ্টা করেছিলেন বলকে উইকেটের দিক থেকে সরাতে। কিন্তু চেষ্টা সফল না হলে ২৫ বলে ২টি ছয়ের সাহায্যে ১৮ রান করে সাজঘরে ফিরেন। নাজমুল হোসেন শান্ত বেশ ভালো ভাবেই একদিক আগলে রেখে দলকে বড় রানের সংগ্রহের দিকে এগিয়ে নিতে চেষ্টা করেছেন। কিন্তু ম্যাকেন্জির বলে সোজা পায়ে খেলতে গিয়ে বলের লাইন মিস করলে এলবিডব্লিউর ফাঁদে পড়ে সাজঘরে ফেরেন। তিনি ৮৪ বলে ১০টি চারের সাহায্যে ৭৬ রান সংগ্রহ করেন। পরবর্তী ব্যাটসম্যানদের আসা যাওয়া চললে মাত্র ৩৪.৩ ওভারে ১৭১ রান করে অল‌আউট হয়ে যায় বাংলাদেশ।

নিউজিল্যান্ডের বোলারদের মধ্যে এডাম মিলনে ৬.৩ ওভার বল করে ৩৪ রানে ৪ উইকেট নিয়ে বাংলাদেশের মেরুদন্ড ভেঙে দেন ।এছাড়া বোল্ট ও ম্যাকেন্জি ২ টি করে উইকেট নেন। নিউজিল্যান্ডের নিয়ন্ত্রিত বলের কাছে অসহায় আত্মসমর্পণ বাংলাদেশের।

ভারতে অনুষ্ঠিতব্য বিশ্বকাপকে সামনে রেখে বাংলাদেশ ও নিউজিল্যান্ড নিজেদেরকে ঝালিয়ে নিতে গিয়ে অনেক পরীক্ষা নিরীক্ষার মধ্য দিয়ে গেছে উভয় দেশ ।তা কতটুকু ফলপ্রসূ হবে তার প্রমাণ পাওয়ার জন্য আমাদের অপেক্ষা করতে হবে বিশ্ব কাপের শেষ পর্যন্ত।তবে সার্বিকভাবে বাংলাদেশের পারফরম্যান্স হতাশাজনক‌ই বলা যায়।কারো কোন ধারাবাহিকতা না থাকাটা দলের জন্য মোটেও সুখকর নয় । বিশ্বকাপকে সামনে রেখে দলের প্রস্তুতি দলকে যে খুব একটা নির্ভার করবে না তা বলার অপেক্ষা রাখে না।

১৭২ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে নিউজিল্যান্ডের উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান এলেন ফিন প্রথম ওভারেই উড়ন্ত সূচনা করেন। শরিফুল ইসলামের প্রথম ওভারেই তিনটি চার মেরে বাংলাদেশের বোলারদের উপর চড়াও হবার ঈংগিত দেন ।আবার সেই শরিফুল ৪৯ রানের মাথায় ৯.২,ও ৯.৩ ওভারে পর পর দুই বলে এলেন ফিন ও ফক্সক্রফটকে সাজঘরে ফেরত পাঠালে বাংলাদেশ দারুন ভাবে ঘুরে দাঁড়ানোর ইঙ্গিত দেয় । কিন্তু নিকোলস এবং উইল ইয়ং আস্তে আস্তে দলের সংগ্রহ সমৃদ্ধ করতে থাকলে ম্যাচ থেকে বাংলাদেশ ম্যাচ থেকে ছিটকে যায় ।যতটা চাপ তৈরি করা দরকার ছিল নিউজিল্যান্ডের উপর ততটা চাপ বাংলাদেশের বোলাররা করতে পারে নি ।তবে নাসুম আহমেদের আর্মার বলে বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফেরেন উইল ইয়ং।তিনি ৮০ বলে ১০ টি চার ও ১টি ছয়ের সাহায্যে ৭০ রান করে দলকে নিরাপদ বন্দের‌ই রেখে যান।তারপরের কাজটুকু নিকোলাস ও বান্ডেল মিলে শেষ করেন ।দুইজনে অবিচ্ছিন থেকে জয়ের বন্দরে দলকে পৌঁছে দিয়ে সাজঘরে ফিরেন। শেষ পর্যন্ত নিকোলাস ৮৬ বলে ৪ টি চার ও ১ টি ছয়ের সাহায্যে ৫০ রান করে অপরাজিত থাকেন।

যেহেতু রান কম ছিল তাই এই স্কোর নিয়ে বোলারদের আসলে কিছুই করার ছিল না । সম্পূর্ণ ব্যাটিং উইকেটে বাংলাদেশের সংগ্রহ যেহেতু যথাযথ ছিল না ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতায় তাই স্বাভাবিকভাবেই বোলারদের ও কিছুই করার ছিল না ।মাঝে শরীফুল পরপর দুই বলে দুই উইকেট নিয়ে গ্যালারিতে উত্তেজনা ছড়ালেও তা বেশিক্ষণ স্হায়ী হয় নাই , নিউজিল্যান্ডের ব্যাটসম্যানদের শক্ত হাতে ব্যাটিং করার কারনে ।

প্রথম ম্যাচ বৃষ্টির কারনে পরিত্যক্ত হলেও পরবর্তী দুই ম্যাচ হেরে বাংলাদেশ সিরিজ হারলো ২-০ তে।

100% LikesVS
0% Dislikes
Leave A Reply

Your email address will not be published.