লক্ষ্মীপুরে যুবলীগ নেতা হত্যা মামলায় ৫ জনের মৃত্যুদণ্ড, যাবজ্জীবন ১৪।

৪৩

 

নাসিফ গাজী নীলফামারী।

লক্ষ্মীপুর সদরের চন্দ্রগঞ্জ ইউনিয়ন যুবলীগের সহসভাপতি মামুনুর রশীদ হত্যা মামলায় রায় ঘোষণা করা হয়েছে। এতে পাঁচজনের মৃত্যুদণ্ড এবং ১৪ জনের যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রাপ্তদের ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা এবং অনাদায়ে আরও ১ বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়েছে।
আজ বুধবার দুপুরে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক সৈয়দা আমিনা ফারহিন এ রায় দেন।
রায়ে রাষ্ট্র ও বাদী পক্ষ সন্তষ্টু প্রকাশ করে জানায়, রায় দ্রত বাস্তবায়নের দাবি করেন।
অন্যদিকে মামলাকে রাজনীতিক প্রতিহিংসা দাবি করে আসামির আইনজীবী বলছেন, এই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করবেন।
মামলা ও আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০১৫ সালের ১৮ রাতে লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার চন্দ্রগঞ্জ ইউনিয়ন যুবলীগের সহসভাপতি মামুনুর রশিদকে লক্ষ্মীপুর এলাকায় গুলি করে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা। এ ঘটনায় নিহতের ভাই ফখরুল ইসলাম বাদী হয়ে মধু, মামুন, বাবু ওরফে গলাকাটা বাবু, শামীম হোসেন ও কাউছার ওরফে ছোট কাউছারসহ ২১ জনকে আসামি করে চন্দ্রগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
এরপর ২০১৬ সালের ১০ সেপ্টেম্বর ২১ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে প্রতিবেদন দেয় পুলিশ। দীর্ঘ শুনানি ও স্বাক্ষীর সাক্ষ্য শেষে প্রায় সাড়ে ৮ বছর পর আদালত আজ এই রায় প্রদান করেন। রায়ের সময় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত মধু ও যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত টিপন আদালতে উপস্থিত ছিলেন। তাদেরকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। বাকি আসামিরা পলাতক রয়েছেন।
মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্তরা হলেন, মো. মধু, মো. মামুন, বাবু ওরফে গলাকাটা বাবু, মো. শামীম, কাউছার ওরফে ছোট কাউছার।
যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন, জাহাঙ্গীর আলম, নেহাল, মো. বোরহান, মো. তুহিন, জাকির হোসেন, সোহরাব হোসেন, বাছির আহাম্মদ, মো. মিজান, আলমগীর হোসেন, কছির আহম্মেদ, কামরুল ইসলাম, আনোয়ার হোসেন, তারেক আজিজ সুজন, মো. টিপন ওরফে জাহাঙ্গীর আলম।
অপরদিকে মামলার আসামি সোহেল ও গোলাম রব্বানীকে খালাস দিয়েছেন আদালত। তবে দন্ডপ্রাপ্তরা বিএনপির অঙ্গসংগঠনের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত রয়েছে বলে দাবি করেন আসামিদের আইনজীবীরা।
মামলার আইনজীবী শেখ জামাল রিপন বলেন, মামুনুর রশিদ চন্দ্রগঞ্জ ইউনিয়ন যুবলীগের সহ-সভাপতি ছিলেন। গুলি করে বিএনপির সন্ত্রাসীরা মামুনকে নির্মমভাবে হত্যা করে। মামলায় ৫ জনকে মৃত্যুদন্ড ও ১৪ জনকে যাবজ্জীবন কারাদন্ডের আদেশ দেন আদালত। এই রায়ে আমরা খুশি। তবে দ্রুত সময়ের মধ্যে রায় বাস্তবায়ন করার দাবি জানাই।
অপরদিকে আসামিদের আইনজীবী মো. জহিরুল ইসলাম মামলাকে রাজনীতিক প্রতিহিংসা হিসেবে দাবি করে বলেন, বিএনপির নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক ষড়যন্ত করে মামলা দেওয়া হয়েছে। এই মামলায় আসামিরা ন্যায় বিচার পাননি। এই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করব। আমরা ন্যায় বিচার পাব বলে আশা রাখছি।
লক্ষ্মীপুর জজকোর্টের পাবলিক প্রসিউকিউটর মো. জসিম উদ্দিন বলেন, এই রায়ের মাধ্যমে হত্যাকারীদের বিচার হয়েছে। পাশাপাশি মামলার বাদী ন্যায় বিচার পেয়েছেন। রায়ে রাষ্ট্র পক্ষ সন্তাষ্ট। এই মামলা ছিল একটি আলোচিত হত্যাকান্ড। আলোচিত যুবলীগ নেতা মামুন হত্যা মামলায় ৫ জনের মৃত্যুদন্ড ও ১৪ জনকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দিয়েছেন আদালত। এ ছাড়া দুই আসামিকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়।

100% LikesVS
0% Dislikes
Leave A Reply

Your email address will not be published.