নিজস্ব প্রতিবেদক,বশির উদ্দিন আহমেদ :
বাঁচা মরার লড়াই ছিল বাংলাদেশের জন্য। গত খেলায় শ্রীলংকার সাথে পরাজয়ে বাংলাদেশ ব্যাকফুটে চলে গিয়েছিল।তাই আজকে আফগানিস্তানের সাথে হারলে এশিয়া কাপ থেকে ছিটকে যেতো বাংলাদেশ। সেই পরীক্ষায় বাংলাদেশ বেশ ভালো ভাবেই উতরে গেল বাংলাদেশ।
অনেকগুলো রেকর্ডকে সংগী করে আজ বাংলাদেশে ৩৩৪ রান সংগ্রহ করেছে ।মূলত দুই বন্ধু নাজমুল শান্ত ও মেহেদী মিরাজের কারনে ।আজ অনেকটা অবাক করে দিয়েই মেহেদী মিরাজ কে নাঈম শেখের পার্টনার হিসেবে ওপেনিং করতে পাঠানো হয় । মেহেদী মিরাজ সেই আস্হার পরিপূর্ণ সুযোগ গ্রহন করে দলকে শক্তিশালী অবস্থানে নিয়ে যেতে সাহায্য করেছে।সাথে ছিল নাজমুল শান্ত। দুইজনের শতকের উপর ভর করে বাংলাদেশ পাহাড় সম রান সংগ্রহ করে,যা এশিয়া কাপে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ।
টসে জিতে লাহোরের ব্যাটিং সহায়ক পিচে আগে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ।যা কাম্য ছিল । এইধরনের ব্যাটিং সহায়ক পিচে আফগানিস্তান টসে জিতলেও ব্যাটিং নিতো বলে অধিনায়ক স্বীকার করেছে।
ব্যাটিং পিচের পরিপূর্ণ সুযোগ কাজে লাগিয়েছে বাংলাদেশ তা বলার অপেক্ষা রাখে না । মেহেদী মিরাজ ও নাজমুল শান্ত জুটি ১৯৪ রানের বিশাল পার্টনারশিপ গড়ে তুলে । মেহেদী মিরাজ আহত হয়ে মাঠ ত্যাগ করার আগে ১১৯ বলে ৭ টি চার ও ৩টি ছক্কার সাহায্যে ১১২ রান সংগ্রহ করে। অপরদিকে দুর্ভাগ্যবশত রান আউট হওয়ার আগে নাজমুল শান্ত ১০৫ বলে ৯টি চার ও ২টি ছক্কার সাহায্যে ১০৪ রান সংগ্রহ করে।শেষের দিকে মুশফিক ও সাকিব হাত খুলে রান সংগ্রহের উৎসবে মেতে উঠেন ।সাকিব মাত্র ১৮ বলে ৪টি চার ও ১টি ছক্কার সাহায্যে ৩২ রান করে অপরাজিত থাকে।
।ফলে শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশ ৩৩৪ রান সংগ্রহ করে ৫ উইকেট হারিয়ে।
আফগানিস্তানের বোলারদের জন্য দিনটি বেশ কঠিন ছিল বলা যায় । আফগানিস্তানের তিন স্পিনার বেশ খরুচে ছিলো। আফগানিস্তানের প্রধান তিন বোলারই অসহায়ের মতো ব্যাটসম্যানদের আগ্রাসী ব্যাটিং দেখেছে ।মুজিব ৬২ রান দিয়ে ১ টি উইকেট পেলেও , রশিদ খান ৬৬ রান এবং নবী ৫০ রান দিয়ে কোন উইকেট পায় নি ।
আফগানিস্তানে ব্যাটিং করতে নেমে বিশাল রান তাড়া করতে গিয়ে শরিফুলের ইনকার্টার বলে মাত্র ১ রানের মধ্যেই এলবিডব্লিউ হয়ে মাঠ ছাড়ে সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য এবং এই বিশাল রান তাড়া করার প্রধান অস্ত্র রহমানউল্লাহ গুরবাজ।রহমত শাহ তাসকিনের স্লোয়ার ডেলিভারিতে কিছু বুঝে উঠার আগেই দেখেন উইকেট ভেঙ্গে গেছে ।ফলে মোটামুটি দুই নির্ভরযোগ্য উইকেট হারিয়ে ব্যাকফুটে চলে যায় আফগানিস্তান।সেখান থেকে টেনে তোলার দায়িত্ব নিয়ে ব্যাট করে ইব্রাহিম জাদরান ও অধিনায়ক হাসমতউল্লাহ শহীদি।ইব্রাহিম জাদরান ৭৪ বলে ১০টি চার ও ১টি ছক্কার সাহায্যে ৭৫ রান সংগ্রহ করে হাসান মাহমুদের বলে উইকেটের পিছনে মুশফিকের হাতে ধরা পড়ে। পরবর্তীতে হাসমত উল্লাহ শাহিদী অনেক চেষ্টা করলেও সেটা দলের জন্য যথেষ্ট ছিল না তিনি ৬০ বলে ৫১ রান করে শরিফুলের বলে হাসান মাহমুদের হাতে ধরা পড়েন ।এর পর আফগানিস্তানের ইনিংস তাসের ঘরের মতোই ভেঙ্গে পড়ে ।৪৪.৩ ওভার খেলে মাত্র ২৪৫ রানে অলআউট হয়ে যায় আফগানিস্তান। বাংলাদেশ জিতে নেয় এই ম্যাচ ৮৯ রানে ।
আজকের এই ম্যাচে ব্যাটসম্যানদের পাশাপাশি বোলার দের পারফরমেন্স ও যথেষ্ট তৎপর ছিল । তাসকিন ৮.৩ ওভার বল করে ৪৪ রান দিয়ে ৪টি উইকেট দখল করেন পাশাপাশি শরিফুল ৯ ওভারে একটি মেডেন সহ মাত্র ৩৬ রান দিয়ে মূল্যবান ৩টি উইকেট দখল করেন । মেহেদী মিরাজ ৮ ওভারে ৪১ রান দিয়ে ১টি উইকেট দখল করে ।
এই ম্যাচ জয়ের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ সুপার ফোরে খেলার আশা জিয়ে রাখলো ।
ম্যান অফ দা ম্যাচ হয়েছে মেহেদী মিরাজ।