বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে রোগীদের পদে পদে ভোগান্তি, যেন দেখার কেউ নেই।

৮৯

মোঃজামিল হোসেন,বরিশাল।

বরিশাল শের ই বাংলা মেডিকেল কলেজে জরুরী বিভাগে রুগী নিয়ে যাওয়ার সাথে সাথে টিকেট নিতে হবে। টিকেট ১০টাকা, টিকেট নেওয়ার পর, যদি রোগী ভর্তি করতে হয়, তবে ১৫ টাকা টিকেট লেখা থাকলেও দিতে হয় ২০টাকা। টিকেট নেওয়ার পর রোগীকে হুইল চেয়ারে করে ওয়ার্ডে নিয়ে গেলে ১০০টাকা, আর রোগীর অবস্থা খারাপ হলে ট্রলি দিয়ে নিতে ২০০টাকা,ওয়ার্ডে নিয়ে যাওয়ার পর রোগীর সাথে ১জনের বেশি প্রবেশ করলে জন প্রতি ২০টাকা, ৫০টাকা হলে বেড আছে। না হয় মাটিতে। রোগী ভর্তি শেষ।

এবার ডাক্তারের পালা। ডাক্তার আসবে রোগী দেখবে।তারপর শুরু হবে পরিক্ষা। প্রথমে কমপক্ষে ৪টি পরিক্ষা সাথে ১বস্তা স্যালাইন ও কিছু ঔষধ। পরিক্ষার রিপোর্ট আসা পর্যন্ত স্যালাইন আর ঔষধ চলবে।

রিপোর্ট আসার পর আরেক ডাক্তার আসবে সে দেখে আবার অন্য পরিক্ষা দিবে।এভাবে প্রতিদিন ডাক্তার পরিবর্তন হবে আর একটার পর একটা পরিক্ষা দিবে।পরিক্ষা করাতে হুইলচেয়ারে নিয়ে গেলে ১০০টাকা আর ট্রলিতে নেওয়া লাগলে ২০০টাকা ওয়ার্ড বয়কে দিতে হবে। আর প্রতিদিন নতুন নতুন ঔষধ যোগ হবে।

প্রতিদিন রোগীর সাথে দেখা করতে আসলে দারোয়ানকে খুশি করতে হবে।সব পরিক্ষা শেষ। এবার অপারেশন এর পালা।অপারেশন করতে ৬০০০ থেকে ৭০০০ টাকার ঔষধ কিনে ডাক্তারের হাতে দিতে হবে। যাহা অফেরতযোগ্য।অপারেশনে যদি রোগী মারা যায়। টাকা এবং মানুষ সব শেষ। হাতে ভিক্ষার বাটি।

পরিষ্কার -পরিচ্ছন্নতার দিক থেকেও হাসপাতালটির অবস্থা বেশ শোচনীয়। ভুক্তভোগী কয়েকজন রোগীর সাথে কথা বলে জানা যায় হাসপাতালের ইন্টারনী ডাক্তার এবং নার্সদের দিয়ে রোগীদের ক্যানোলা পরানোসহ বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করার কারনে অনেকেই বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন।

আর অপারেশন যদি সাক্সেস হয়। অপারেশন থিয়েটারের বয়কে খুশি করতে হবে।দারোয়ানকে খুশি করতে হবে। এবং প্রতিদিন ড্রেসিং করার জন্য ও খাওয়ার ঔষধ কিনতে হবে।রোগী সুস্থ্য। এবার রিলিস দেওয়ার পালা।নার্সকে খুশি করতে হবে। দারোয়ানকে খুশি করতে হবে। ওয়ার্ড বয়কে খুশি করতে হবে। সবাইকে খুশি করে লেংটা হয়ে হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। তারপর বাহিরে এসে দেখবেন জাতির সেই ব্যানার ঝুলে আছে,আমি ও আমরা সবাই সাধু!!

বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালটি দক্ষিনবঙ্গের গরীব ও অসহায় মানুষের সেবা নেওয়ার সবচেয়ে বড় জায়গা আর এইখানের অবস্থা এইরকম হলে গরীব ও অসহায় মানুুষগুলো কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে। তাই এই দৈনদশা থেকে ভুক্তভোগী মানুষ মুক্তি পেতে চায়। সর্বশেষ সাধারন মানুষের পক্ষ থেকে আবদার একটাই, তারা সিন্ডিকেটমুক্ত শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালকে দেখতে চায় এবং কাঙ্খিত সঠিক সেবা পেতে চায়।

দয়া করে যেসকল বরিশালের প্রশাসনিক এবং রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ আছেন যারা এই দৈনদশা থেকে ঐতিহ্যবাহী এই হাসপাতালটিকে রক্ষা করতে পারবেন তাদের চোখে পোষ্টটি পরলে আপনারা দক্ষিনবঙ্গের লাখো গরীব ও অসহায় মানুষের কথা চিন্তা করে এইসব সিন্ডিকেটের ব্যাপারে দ্রুত ব্যবস্থা নিবেন বলে আশা করা যাচ্ছে।

100% LikesVS
0% Dislikes
Leave A Reply

Your email address will not be published.