গাজীপুর জেলা প্রতিনিধি:জাকারিয়া আল ফয়সাল:বোরকা পরে এসে হাসপাতাল থেকে এক বছরের এক শিশুকে অপহরণ করেন এক নারী। উদ্দেশ্য ছিল এই শিশুকে এক বেদে নারীর কাছে বিক্রি করা।
কিন্তু কেনাবেচার আগেই পুলিশের কাছে গ্রেপ্তার হলেন তাঁরা। গত বুধবার গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অপহরণের এই ঘটনা ঘটে বলে জানায় পুলিশ।
আজ শুক্রবার শিশু অপহরণের বিষয়ে বিভিন্ন তথ্য জানান গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের (জিএমপি) সদর মেট্রো থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিয়াউল ইসলাম। তিনি বলেন, এই ঘটনায় জড়িত অপহরণকারী ও ক্রেতাকে গ্রেপ্তারের পর আজ আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।উদ্ধার হওয়া শিশুর নাম লাবিব (১)।
সে গাজীপুর মহানগরীর সদর থানার মাঝিরখোলা এলাকার সুজন মিয়ার ছেলে। গ্রেপ্তাররা হলেন নেত্রকোনার বারহাট্টা থানার বাউশী দশাদার গ্রামের সুলতান মিয়ার স্ত্রী মোসা. সুলতানা খাতুন (২৬), তিনি গাজীপুর মহানগরীর সদর থানার ভোড়া এলাকায় ভাড়াবাড়িতে থাকেন।
অপরজন হলেন ভোলার মনপুরা থানার হাজীরহাট গ্রামের মোসা. ফারজানা আক্তার (১৯), তিনি বেদে সম্প্রদায়ের বলে জানিয়েছে পুলিশ।অপহরণের ঘটনায় গত বৃহস্পতিবার রাত ১টার দিকে গাজীপুর মহানগরীর সদর থানায় সুজন মিয়ার স্ত্রী হামিদা আক্তার (২২) অভিযোগ দেন। ওই রাতেই এটি মামলা হিসেবে রুজু করা হয়। ওসি জিয়াউল ইসলাম জানান, দেড় মাস আগে সুজন মিয়ার বড় ছেলে হাবিব (৭) হাঁটুতে ব্যথা পায়।
এ ঘটনায় তাকে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে তাঁর ছেলেকে সার্জারি ওয়ার্ডে রাখা হয়েছে।গত বুধবার বেলা আড়াইটার দিকে হাসপাতালে বড় ছেলেকে দেখাশোনা করার সময় সুজন মিয়ার স্ত্রীর সঙ্গে বোরকা পরা অজ্ঞাত এক নারী কৌশলে মিশতে থাকেন। এরই ফাঁকে ওই নারী সুজন মিয়ার ছোট ছেলে লাবিবকে হাসপাতালের সার্জারি ওয়ার্ড থেকে অপহরণ করে পালিয়ে যান।
পুলিশ ঘটনা জানার সঙ্গে সঙ্গে শিশুকে উদ্ধারের কার্যক্রম শুরু করে বলে জানান ওসি জিয়াউল ইসলাম। তিনি বলেন, পুলিশ হাসপাতালের সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে ও সোর্সের ভিত্তিতে সদর থানার ভোড়া এলাকার চৌকিদার বাড়ি থেকে শিশু লাবিবকে অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার ও অপহরণকারী নারীকে গ্রেপ্তার করে।
এ সময় ওই স্থানে অপহৃত শিশুকে কেনার জন্য এক বেদে নারীকেও গ্রেপ্তার করা হয়। মহানগরীর সদর থানার ওসি বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে অপহরণকারী নারী পুরো ঘটনা স্বীকার করেছেন। অপহৃত শিশু লাবিবকে কেনার জন্য তাঁর বান্ধবী ফারজানা আক্তার ঢাকা থেকে এসে তাঁর বাসায় রাতে থাকেন। সকাল হলেই ওই নারী শিশুটিকে নিয়ে ঢাকায় চলে যেতেন। গ্রেপ্তারদের আজ আদালতে তোলা হয়। আদালত তাঁদেরকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।