মোহাম্মদ আবদুল্লাহ, কক্সবাজার।
কক্সবাজার একটি ইয়াবা পাচার প্রবণ এলাকা। এখানে প্রতিনিয়ত ইয়াবা পাচারের সাথে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন ব্যক্তি এবং গ্রুপের মধ্যে নিজেদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে অন্তর্দ্বন্দ্ব লেগে থাকে। প্রায়শঃই এই ইয়াবা বিক্রির টাকার ভাগ নিয়ে মারামারি এবং খুনাখুনির মত গুরুতর অপরাধও সংঘঠিত হচ্ছে।
গত ১২ আগস্ট শনিবার ভোরবেলা কক্সবাজারের শীর্ষ ইয়াবা সম্রাট, আলোচিত ইয়াবা লুটকে কেন্দ্র করে ছুরিকাঘাত ও হত্যাচেষ্টা মামলার প্রধান আসামী সৈয়দ উল্লাহ ও তার সহযোগীকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব ১৫’র একটি চৌকুস টীম। জানা যায় সৈয়দ উল্লাহ তার নিজস্ব ট্রলারে করে বিপুল পরিমাণ ইয়াবার একটি চালান কক্সবাজার পৌরসভার উত্তর নুনিয়ারছড়ার পানির কুয়া এলাকায় খালাস করার সময় অপর একটি গ্রুপ সৈয়দ উল্লাহ’র ইয়াবা লুট করার চেষ্টা করলে দু’গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ বেঁধে যায়। এ সময় আসামী সৈয়দ উল্লাহ ও তার সহযোগী ৬ থেকে ৭ জন ব্যক্তি ইয়াবা ছিনতাইকারী ঐ গ্রুপের উপর ছুরি ও দেশীয় অস্ত্র দিয়ে হামলা করে জনৈক দুদু মিয়া এবং তার সঙ্গীয় মোঃ রিপন’কে গুরুতর আহত করে। পরবর্তীতে আহত দুদু মিয়া বাদী হয়ে আসামী সৈয়দ উল্লাহ’কে প্রধান আসামী এবং তার অপর ৫ সহযোগীর নাম উল্লেখ করে আঘাত ও হত্যা চেষ্টার অভিযোগ করে গতকাল ১৩ আগস্ট ২০২৩ তারিখে কক্সবাজার সদর মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
ভিন্নধর্মী এই ঘটনা গতকাল স্থানীয় ও জাতীয় গণমাধ্যমে প্রচারিত ও প্রকাশিত হলে তা নিয়ে দেশব্যাপী আলোড়ন সৃষ্টি হয়।
এ ঘটনায় হামলাকারী আসামীদের গ্রেফতার এবং খালাসকৃত ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধারের লক্ষে র্যাব-১৫ তৎপরতা বৃদ্ধি করে। এরই ধারাবাহিকতায় সোর্স সূত্রে সংবাদ পাওয়া যায় যে, সৈয়দ উল্লাহ তার ঘনিষ্ঠ সহযোগী গফুর ওরফে গুডুইল্লাসহ কক্সবাজার সদর উপজেলার পিএমখালি ইউনিয়নের মাদালিয়া পাড়াস্থ সৈয়দের শ্বশুর বাড়িতে অবস্থান করছেন। আরো জানা যায় যে, খালাসকৃত ইয়াবার একটি বড় অংশও তাদের হেফাজতে রয়েছে। সে মোতাবেক উল্লিখিত তারিখ ও সময়ে অপরাধীদের সর্বশেষ অবস্থান সম্পর্কে শতভাগ নিশ্চিত হয়ে তাদের পুরো অবস্থানস্থল ঘেরাও করে র্যাব অভিযান পরিচালনা করে। র্যাবের আভিযানিক দলকে দেখে পলায়নকালে ধাওয়া করে ইয়াবা লুট এবং একে কেন্দ্র করে সংঘঠিত সংঘর্ষে প্রতিপক্ষকে ছুরিকাঘাত ও হত্যাচেষ্টার ঘটনায় দায়েরকৃত মামলার প্রধান আসামী, কক্সবাজারের অন্যতম ইয়াবা গডফাদার সৈয়দ উল্লাহ ওরফে ইয়াবা সৈয়দ এবং তার অন্যতম সহযোগী, একই মামলার এজাহারভুক্ত আসামী আব্দুল গফুর ওরফে গুডুইল্লাকে আটক করা হয়। পরে তাদের হাতে থাকা প্লাস্টিকের বস্তা তল্লাশি করে সেখান থেকে সর্বমোট ১,০৩,৮০০ (এক লক্ষ তিন হাজার আটশত) পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়।
আটককৃত আসামীদের বিস্তারিত পরিচয় সৈয়দ উল্লাহ – ইয়াবা সৈয়দ (৪২), পিতা-মোঃ হোসেন, মাতা-ফাতেমা বেগম, সাং-উত্তর নুনিয়ার ছড়া, কক্সবাজার পৌরসভা, থানা-কক্সবাজার সদর, জেলা-কক্সবাজার এবং আব্দুল গফুর গুডুইল্লা (৪০), পিতা-মৃত জমির হোসেন, মাতা-মৃত শাহী বানু, সাং-উত্তর নুনিয়ার ছড়া, কক্সবাজার পৌরসভা, থানা-কক্সবাজার সদর, জেলা-কক্সবাজার।
ধৃত আসামী সৈয়দ উল্লাহ ও আব্দুল গফুরকে ইতিমধ্যে এজাহারকৃত মামলায় পুলিশের নিকট হস্তান্তর প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এছাড়াও এজাহারভুক্ত অন্যান্য পলাতক আসামীদের গ্রেফতারে র্যাব-১৫ ও পুলিশের য়ৌথ অভিযান অব্যাহত রয়েছে।