আ.লীগের অধীনে কোনো নির্বাচন হবে না। বললেন; বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

১৩

আল – মামুন
ঝিনাইদহ (প্রতিনিধি)।

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘সোজা কথা হাসিনার অধীনে কোনো নির্বাচন হবে না। আমাদের দলের পক্ষ থেকে শুধু নয়, ৩৬ দল আমরা একযোগে বলেছি, আমরা এই সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনে যাব না। পরিষ্কার কথা। আমরা বলেছি, নির্বাচনকালীন যদি একটা নিরপেক্ষ সরকার না থাকে, তাহলে এ দেশে কোনো নির্বাচন হবে না। ন্যাড়া বারবার বেলতলায় যায় না। শেয়ালের কাছে বারবার কেউ মুরগি দেয় না। শেখ হাসিনার অধীনে বা তাঁর সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনে যাব না।’
আজ সোমবার বিকেলে খুলনা বিভাগীয় ‘তারুণ্যের সমাবেশে’ প্রধান অতিথির বক্তৃতায় মির্জা ফখরুল এসব কথা বলেন। নগরের ডাকবাংলো সোনালী ব্যাংক চত্বরে যৌথভাবে এ সমাবেশের আয়োজন করে যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদল। সমাবেশে বিভাগের ১০ জেলা ও খুলনা মহানগরের নেতা-কর্মীরা অংশ নেন। বিকেল পৌনে চারটায় সমাবেশ শুরু হয়।

মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘এই মুহূর্ত বাংলাদেশের জন্য সবচেয়ে বড় সংকটকাল। বাংলাদেশ সৃষ্টি হয়েছিল যুদ্ধের মধ্য দিয়ে; তার পর থেকে এই বাংলাদেশ রাষ্ট্রকে ধ্বংস করবার, তাকে পরাজিত করবার, জাতিকে নিশ্চিহ্ন করার যত চেষ্টা হয়েছে, তার চেয়েও সবচেয়ে ভয়াবহ সংকট এখন উপস্থিত। সংকট থেকে উত্তরণের প্রধান চ্যালেঞ্জ শুধু ভোটের অধিকার নয়, আমাদের বাংলাদেশকে রক্ষার অধিকার। স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষার যে যুদ্ধ, সেই যুদ্ধই আমরা শুরু করেছি। সমস্ত বাংলাদেশের মানুষকে সংগঠিত করতে হবে। বেআইনিভাবে ক্ষমতা জবরদখল করে রাখা, সংবিধান লঙ্ঘনকারীদের ক্ষমতা থেকে না সরালে শুধু ভোট নয় বাংলাদেশদেশটাই থাকবে না, অস্তিত্ব ও থাকবে না।’
ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য প্রার্থী আশরাফুল হোসেন ওরফে (হিরো আলম) কে পেটানোর প্রসঙ্গেও সমাবেশে কথা বলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘আজ ঢাকায় একটি নির্বাচন হচ্ছে। ঢাকা-১৭। আওয়ামী লীগের নির্বাচন। কোনো কেন্দ্রে কোনো ভোটার নেই। সব কেন্দ্র খালি পড়ে আছে। সেখানে আওয়ামী লীগের হেভি ভোল্টেজ প্রার্থী আরাফাত; থিঙ্কট্যাংকের প্রধান নেতা। আরেকজন নিজে নিজে প্রার্থী হয়েছেন। তাঁকে সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে সবাই চেনেন। উনি কোনো রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব নন। তাঁকে বাংলাদেশের মানুষ একটু ভিন্নভাবে চেনে জানে; সেই হিরো আলম। উনি একটা কেন্দ্রে গিয়েছেন। আওয়ামী লীগের বিখ্যাত সন্ত্রাসীরা, যারা গণতন্ত্র পাহারা দেয়, আওয়ামী লীগকে পাহারা দেয়। তারা হিরো আলমকে তাড়িয়ে দিয়েছে। শুধু তা–ই নয়, তাঁকে রাস্তায় ফেলে বেধড়ক পিটিয়েছে।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘কী দেউলিয়া হয়ে গেছে আওয়ামী লীগ, চিন্তা করেন! রাজনৈতিকভাবে এত দেউলিয়া হয়েছে যে একজন হিরো আলমকে পর্যন্ত তাঁরা সহ্য করতে পারে না। এ কথা এ কারণে বলছি, বাংলাদেশে কি করুণ তামাশা চিত্র তারা তৈরি করেছে। গণতন্ত্রকে নিয়ে তামাশা। অথচ তাঁরা চিৎকার করে বলে তাঁদের হাতেই গণতন্ত্র সবচেয়ে নিরাপদ, তারা অতীতে সবচেয়ে ভালো নির্বাচনগুলো করেছে।’

আওয়ামী লীগ তার আগের চরিত্রেই আছে অভিযোগ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘সব রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করে আওয়ামী লীগ বাকশাল করেছিল। বাক্‌স্বাধীনতা কেড়ে নিয়েছিল। মানুষের কথা বলার অধিবকার কেড়ে নিয়েছিল। এই আওয়ামী লীগ সেই আওয়ামী লীগ। শুধু পোশাকটা পাল্টেছে। খোলনলচেটা পাল্টেছে। তখন পার্লামেন্টের মাধ্যমে একদলীয় শাসনব্যবস্থা বাকশাল করেছিল। আজকে একটু কায়দা করে নির্বাচন হবে, নির্বাচন হয়, নির্বাচন করছি, পার্লামেন্টে আছে—এ রকম দেখিয়ে একদলীয় শাসনব্যবস্থা চালাচ্ছে।’
এমনটাই বলছিলেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

100% LikesVS
0% Dislikes
Leave A Reply

Your email address will not be published.