খেলতে খেলতেই গত ৫ জুলাই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন দেশের দ্বিতীয় গ্র্যান্ডমাস্টার জিয়াউর রহমান। তাঁর বয়স হয়েছিল মাত্র ৫০ বছর। অনেকটা অকালে হারিয়ে যাওয়া এই মেধাবী দাবাড়ুকে নিয়ে স্মৃতিচারণা করেছেন তাঁর স্ত্রী তাসমিন সুলতানা
১৯৯৭ সালের শেষ দিকের ঘটনা। বাসার ল্যান্ডফোনটা হঠাৎ বেজে ওঠে। রিসিভ করতেই ওপাশ থেকে এক তরুণের কণ্ঠ। দু-এক কথায় বুঝতে পারি, ক্রস কানেকশনে আমাদের বাসায় তাঁর কল চলে এসেছে। নাম বলল জিয়া। মোহাম্মদপুরে শেখেরটেক প্রমিনেন্ট হাউজিংয়ে থাকে।
আমার বাবা তখন টিঅ্যান্ডটির প্রকৌশলী। মহাখালীতে টিঅ্যান্ডটির পাশেই আমাদের বাসা। সেদিন অল্প কয়েক মিনিট কথা বলার পরই জিয়া জানায়, আমার গলার স্বর ওর ভালো লেগেছে। আমারও তা-ই! সেদিন মতো হাই, হ্যালো করে রেখে দিই।
কিন্তু আমার নম্বরটা জিয়া রেখে দিয়েছিল। পরে একদিন ফোন করে বলল, ‘আমি একটু কথা বলতে পারি?’
এভাবেই শুরু। এক বছর আমাদের শুধু কথাই হয়েছে, দেখা হয়নি। বছরখানেক পর ১৯৯৮-এর শেষ দিকে জিয়ার সঙ্গে আমার দেখা হয়। জিয়া তখন জিম এম নর্মের জন্য খেলছিল।
১৯৯১ সালে বাবার মৃত্যুর পর আমার ভাই রফিকুল হাসান ছিল আমাদের পরিবারের অভিভাবক। ভাই জিয়াকে চিনত। আমার ভাই আর জিয়ার বড় ভাই মেরিন ইঞ্জিনিয়ার। দুজনই ২৬তম ব্যাচ। একদিন জিয়া এসে ভাইকে বলল, ‘লাবণ্যকে (আমার ডাকনাম) পছন্দ করি।’
আমার ভাই জিয়াকে বলল, ‘তুমি গ্র্যান্ডমাস্টার হতে পারলে লাবণ্যকে পাবে।’
তখন জিয়া জানপ্রাণ লড়িয়ে খেলতে লাগে। ২০০০ সালে গ্র্যান্ডমাস্টার নর্ম পূর্ণ করে (খেতাব পেতে পেতে অবশ্য ২০০২ সাল হয়ে যায়) এসে জিয়া আমার ভাইকে বলেছিল, ‘আমি জিএম হয়েছি।’
২০০২ সালের ২৫ জানুয়ারি আমাদের বিয়ে হয়। বিয়ের পর আমার জীবনটা হয়ে ওঠে দাবাময়।
Login To Leave a Comment