রাজনীতি ও মিডিয়ার বাঁকা পথে জনজীবন -শেষ পর্ব

মো: রফিক ভূঁইয়া খোকা,ব্যুরো প্রধান,ময়মনসিংহ: ফন্দি-ফিকিরের কথা না বলে মাদ্রাসা – মসজিদে যেরুপ এলেম ও আমলের চর্চা হয়, ধর্মীয় ও দেশীয় বিধান, আইন-কানুন মানা হয়, চাঁদাবাজি,সন্ত্রাস ইত্যাদি জুলুম ও দেশবিরোধী কাজ থেকে বিরত থাকা হয় সেরুপ অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে, অফিস-আদালতে, ব্যবসা -বাণিজ্যে সেসবের বাস্তব প্রতিফলন ঘটানোর চেষ্টা করেন। তবেই ঘরে-ঘরে দেশপ্রেমিক তৈরি হবে। কেবল নিয়মিত পতাকা উত্তোলন করা আর জাতীয় সংগীত গাইলেই দেশপ্রেম হয়ে যায় না, পরিপূর্ণ স্বদেশপ্রেমের পরিচয় বহন করে না। স্বাধীনতা লাভের পর থেকে জাতীয় সংগীত গাওয়া ও পতাকা উত্তোলনকারী ব্যক্তি, ঘর, প্রতিষ্ঠান, দল, গোষ্ঠী ইত্যাদির তো অভাব দেখি না।

আবার দুর্নীতি করা, দেশ ও জাতির বিরুদ্ধাচার কর্মকাণ্ড করা, খুন, ধর্ষণ, অপরাজনীতি করা, ভোটাধিকার হরণ ও সীমিতকরণ, বাকস্বাধীনতা নিয়ন্ত্রণ ও হরণসহ দেশব্যাপী অন্যায়-অনাচারের তো সীমা-পরিসীমা দেখি না। পাগলা ঘোরার মতো চলছে তো চলছেই। তাই, কিছু হলেই ধর্ম ব্যবসা, ধর্ম নিয়ে রাজনীতি করা, জঙ্গী- বিচ্ছিন্নতাবাদী হওয়া, ভারত-পাকিস্তানের দালাল ও স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি হয়ে যাওয়া, মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার আদর্শ ও চেতনা থেকে সরে আসা, বঙ্গবনদ্ধু ও জিয়ার মতাদর্শের অনুরূপ না হওয়া ইত্যাদি সুযোগসন্ধানী, একপেশে ও সংকীর্ণ বুলির স্বরবে রাজনীতি ও মিডিয়া জগতসহ অন্যান্য সুবিধা অর্জনের অাশ্রয়ণ নীতি থেকে আমাদের বের হতে হবে।তাই, এসব নিয়ে এভাবে লাগামহীন, অযৌক্তিক প্রসঙ্গ টেনে অপরাজনীতির অবতারণার কূটকৌশল না করে যথার্থ বলা, প্রকাশ করার সুস্থ মানসিকতা ও উদার দৃষ্টিভঙ্গী নিয়ে রাজনীতির বাঁকা পথ পরিহার করতে হবে আমাদের সকলের। কাজ করতে হবে দেশ ও জাতির কল্যাণে। মৌলিক গণতন্ত্রে বিশ্বাসী হতে হবে এবং সে পথ সুগম ও সহজতর করা চাই। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, সাংবাদিক, মিডিয়া, সাহিত্যিক, লেখক ও বুদ্ধিজীবীসহ রাজনীতিক ও নেতৃস্থানীয় আলেমদের বিদ্যমান রাজনৈতিক দলের, মতের আশ্রয়ে-প্রশ্রয়ে না থেকে নিরপেক্ষ ভূমিকায় থাকতে হবে। কোন দলের – মতের অন্ধ অনুকরণ না করে, নিজ লাভ ও স্বার্থের মোহে না পড়ে এবং সেসবের প্রাধান্য না দিয়ে সত্যকে আড়াল করার হীনতা বর্জন করা দরকার।

আইন, প্রশাসন, প্রশাসক ও তদসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের স্বাধীনভাবে কাজ করার সুযোগ থাকা এবং তাদেরকে রাজনীতির বেষ্টনী থেকে মুক্ত থাকার পরিবেশ থাকা চাই। বিদেশী ও অপসংস্কৃতির অনুপ্রবেশ রোধে মনোযোগী হতে হবে আমাদের। হিংসা-প্রতিহিংসার রাজনীতির খোলস থেকে নিজেদের মুক্ত হতে হবে, মুক্ত করতে হবে দেশ ও জাতিকে। হতে হবে আদর্শিক রাজনীতির প্রেরণায় সঞ্চালিত, উজ্জীবিত। বাঙ্গালিকে হুজুগের মধ্যে রেখে ক্ষমতার মসনদ দখলের কাহিনীর বিস্মৃতিতে ডুবিয়ে রেখে কেবল উন্নতি সাধনের চোরাগলির মহা পরিকল্পনায় নিমগ্ন থাকার রাজনৈতিক চিন্তা -চেতনা থেকে সরে আসতে হবে আমাদের। গুম,হত্যা, নির্যাতন, ভিন দেশের তাবেদারি ও স্বেচ্ছাচারীতার মনোভাব পরিহার করতে হবে। হাদিয়া-তোহফা গ্রহণ ও মৌলিক আদর্শচ্যুতি,নীতি-মূল্যবোধ বিকিয়ে দেওয়ার চিন্তা ঝেড়ে ফেলতে হবে। প্রশাসনিক মোড়কের আবর্তনে ঢেকে রাখা যান্ত্রিক ও দানবিক রাজনীতিকে জনবানদ্ধবে পরিণত করতে হবে আমাদের সকলের। তবেই আমরা সঠিক গণতন্ত্রের পথে হাঁটতে পারব।

মনে রাখতে হবে, দস্যুর সাথে ষড়যন্ত্রকারী দ্বার রক্ষকের লুটের মাল নিয়ে দরকষাকষির অধিকার থাকে না। যাহোক এর অতিরিক্ত কলম চালিয়ে সহজ সমীকরণটিকে জটিল করে তোলা বাঞ্চনীয় মনে করি না। আসুন আমরা কথা ও কলমের চাতুরতা পরিহার করি। জনবানদ্ধব,কল্যাণমুখী পথে সুষ্ঠু, সুন্দর, গ্রহণযোগ্য ও নিরপেক্ষ রাজনৈতিক মতাদর্শেরর পথ ধরে রাজনীতির বাঁকা পথ পরিহার করি। সত্য প্রকাশে কলম ধরি, আসল কথা বলি।

50% LikesVS
50% Dislikes
Comments (০)
Add Comment