মীর জাফরদের হাতে প্রকৌশলী আল মামুন লাঞ্ছিত

 

মোঃ সাইফুল ইসলাম,ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকৌশলী আল মামুন।
বরিশাল পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট হতে ২০০৪ সালে প্রকৌশল ডিপ্লোমা পাশ করেন।
স্কুল, কলেজ, ইন্জিনিয়ারিং, ছোটোবড় বন্ধুমহল, আত্মীয় স্বজন কিংবা পারিবারিকভাবেও একজন ভদ্র মার্জিত, সজ্জন ও স্বল্পভাষী ব্যক্তি হিসাবে পরিচিত।

বাংলাদেশ বন্ধু ফাউন্ডেশনেও অত্যন্ত সুনামের সহিত নিজের পেশা জীবনকে নিয়েছেন অন্য উচ্চতায়।
চাকরি সুবাদেই অবস্থান করেন মাদারীপুর জেলায়।

প্রকৌশলী আল মামুনের গ্রামের বাড়ি বরগুনা জেলার পরীরখাল হলেও খুব একটা যাওয়া হয়না চাকরির কারনে।
ঈদের ছুটির ঘন্টা বাজলেই কখনো নিজের বাইক কিংবা যানবাহনে করে ছুটে যান শৈশব কৈশোরের স্মৃতি বিজড়িত বরগুনা জেলার পরীর খাল গ্রামের বাড়ি।

গতো ঈদেও নিজের ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটি চালিয়ে গিয়েছিলেন মাতৃবিজড়িত নারীর টানে কিন্তু কে জানে এবারের ঈদ যাত্রায় নিজেকে অপমান, অপদস্ত আর লাঞ্ছিত করে ফিরে আসতে হবে নিজের কর্মস্হলে।

ঈদের ছুটি শুরু হতেই নিজের বাহনটি চালিয়ে পৌঁছে যান তিলোত্তমা বরগুনা শহরে।
পরিবার আর আত্মীয় স্বজনদের জন্য সাধ্যমতো কেনাকাটা করেন বরগুনা শহরের বিভিন্ন দোকান ঘুরে ঘুরে।
কেনাকাটার সামগ্রী মোটরসাইকেলের পাশে বেঁধেই রওয়ানা দেন গ্রামের বাড়ি পরীর খালের উদ্দেশ্যে।

যেতে যেতেই হেউলিবুনিয়া বরগুনা সদর ইউনিয়ন পরিষদের কমপ্লেক্স ভবন থেকে সামনে এগিয়ে যাচ্ছেন।
বরগুনা সদর ইউনিয়ন পরিষদের কমপ্লেক্স ভবনের সামনেই বরগুনা সদর ইউনিয়নের সাবেক ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আবু জাফরের নিজ ব্যক্তিগত প্রতিষ্ঠান গাছকাটা স্বমিল।
বরগুনা হতে পরীরখাল সারারাস্তা মধ্যে স্বমিলের সামনের অংশটাই বিশাল গর্ত আর খানাখন্দে ভরা ছিলো।
প্রকৌশলী আল মামুন গর্ত আর খানাখন্দের দরুন মোটরসাইকেলের ঝাঁকুনীতে নিজের কেনাকাটা সামগ্রী পড়ে যায় স্বমিলের সামনে।
নিজের অজান্তেই মোটরসাইকেল চালিয়েই চলে যাচ্ছিলো প্রকৌশলী আল মামুন।

মালামাল সামগ্রী কুড়িয়ে সাবেক চেয়ারম্যান আবু জাফর নিয়ে যান স্বমিলের পাশে নিজের আস্তানায়।
স্বমিলের সামনেই চা দোকানে আগে থেকে অবস্থান করা তাঁরই কলেজের ছোট ভাই প্রকৌশলী সাইফুল ইসলাম বিষয়টি লক্ষ্য করেন এবং প্রকৌশলী আল মামুনকে সজোড়ে ডাক দেন।
কিন্তু প্রকৌশলী আল মামুন ডাক না শুনে আপন মনে বাইক চালিয়ে যান।
কিছুদূর গিয়ে মোটরসাইকেলের সাথে নিজের কেনাকাটা সামগ্রী না দেখতে পেয়ে ফিরে আসেন স্বমিল বরাবর।
এসেই চিরাচরিত সুন্দর অমলিন হাসি দিয়ে…তুমি আমাকে ডাক দিয়েছো আমি ভাবিনি আমাকে ডাকছো।
নিজের ব্যাগগুলো না দেখে ভাবলাম হয়তো ব্যাগগুলো এখানেই পড়েছে, তাই হয়তো কেউ ডাক দিয়েছিলো।
আপনার ব্যাগগুলো চেয়ারম্যান সাবের কাছে আছে বলে আশস্ত করে প্রকৌশলী সাইফুল ইসলাম।
স্বল্পভাষী প্রকৌশলী আল মামুন প্রবেশ করেন সাবেক চেয়ারম্যান আবু জাফরের কামড়ায়।
সেখানেই অবস্থান করছিলো সাবেক চেয়ারম্যান আবু জাফর ও তার পুত্র রিমন।
প্রকৌশলী আল মামুন ভিতরে ঢোকামাত্র বাপ-পুতের কঠিন হুংকার এই তুই এখানে ডুকলি ক্যা?
সালাম দিবি আগে। তারপর ক কেডা তুই?
প্রকৌশলী আল মামুন বাকরুদ্ধ।
আমিতো আপনাকে সালাম দিয়েছি। হয়তো আস্তে দিয়েছি তাই হয়তো খেয়াল করেননি।
বাপ-পুতের একই কথা তুই সালাম দেওনি।
হালায় মিথ্যা কথা কয় রিমন ওরে বাইন্ধা পিডা।
মুহুর্তেই প্রকৌশলী আল মামুনের উপর ঝাপিয়ে পড়ে ছেলে রিমন এবং সাথে যোগ দেয় সাবেক চেয়ারম্যান আবু জাফরও।
অবস্থা বেগতিক দেখে এগিয়ে আসে প্রকৌশলী সাইফুল ইসলাম।
ওনি একজন আগন্তুক, একজন মেহমান, সালাম দেয়নি বলে অজুহাত তুলে ওনাকে লাঞ্ছিত করা অন্যায় এবং ওনার হারিয়ে যাওয়া মালামাল ওনার প্রমান সাপেক্ষে ওনার কাছে তুলে দেওয়াই একজন জনপ্রতিনিধির কাজ।
কিন্তু বেপরোয়া বাপ-পুতের দাম্ভিকতায় তুই দালাল, দালালী করতে আইছিস বলে অপমান, অপদস্ত আর লাঞ্ছিত করে তাড়িয়ে দেয় প্রকৌশলী সাইফুল ইসলামকে।
আগেও চেয়ারম্যান আবু জাফরের অন্যায় অনাচার জুলুম আর তার নিজস্ব লোকজনের হামলা মামলার শিকার হয়েছেন প্রকৌশলী সাইফুল ইসলাম।
আমার এলাকার আমিই শাহেনশাহ, আমিই ত্রাস, আমিই যা বলবো আর যা করবো আমারই মর্জিমাফিক বলে হুংকার দেয় সাবেক চেয়ারম্যান আবু জাফর।

বাপ-ছেলের কিল ঘুষিতে দিশেহারা প্রকৌশলী আল মামুন নির্যাতনের এ পর্যায়ে আশেপাশের লোকজন জড়ো হলে তাঁর মালামাল সমেত ছেড়ে দেওয়া হয়।
নিজের মালামাল মোটরসাইকেলের সাথে বেধে নিজের বাড়ির দিকে রওয়ানা দেন প্রকৌশলী আল মামুন।
কিম্ভূতকিমাকার আর হতবিহ্বল প্রকৌশলী আল মামুন বাড়ি ফিরে লোকলজ্জা আর মানসম্মানের ভয়ে কাউকে না জানিয়েই এড়িয়ে যান বিষয়টি।
প্রভাবশালী আর ত্রাসের রাজত্বে নতুন করে ঝামেলায় জড়াতে চাননি।

বরগুনা স্বনাম ধন্য ব্যক্তির জামাতা ছিলো প্রকৌশলী আল মামুন।
বিষয়টি জানতে পেরে সাবেক চেয়ারম্যান আবু জাফর ও তার ছেলে গোপনে প্রকৌশলী আল মামুনের পা ধরে মাফ চেয়ে বিষয়টি কাউকে না জানানোর অনুরোধ করেন।
প্রকৌশলী আল মামুন সারাদেশের ইউপি নির্বাচনে মধ্যেই হঠাৎ খেয়াল করেন আবু জাফরের চেয়ারম্যান প্রার্থী হওয়ার পোস্টার ও শোডাউন।
নিরবতা, লোকলজ্জা জলাঞ্জলী দিয়েই আক্ষেপ করে নিজের অভিব্যক্তি প্রকাশ করেন প্রকৌশলী আল মামুন।
প্রকৌশলী আল মামুন বলেন নিজে লাঞ্ছিত হয়েছি, অপদস্ত হয়েছি, নিরবে মুখ বুজে সহ্য করেছি কিন্তু যখন দেখলাম একজন যোগ্যতাহীন ব্যক্তি, অহংকার আর দাম্ভিকতায় ভরা ব্যক্তি, সন্ত্রাস ত্রাসের রাজনীতি অবলম্বন করে একটা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হিসাবে অভিভাবকত্ব করবে তখন নিজেকে চুপ রাখা একটা জনপদের সবার সাথে অন্যায় করার শামিল।

এরাই ভয়ভীতি প্রদর্শন করে ইউনিয়নের সমস্ত অসহায় মানুষকে নিজের মর্জি মতো কাজ করবে।
একটা জনপদের সুফল পাওয়া দূরে থাক সন্ত্রাস, ত্রাস আর মাদকের বিস্তার লাভে এরাই প্রধান ভূমিকা পালন করবে।
এদেরকে প্রতিহত করা সমাজের মানুষের দায়িত্ব।
নাহলে সমাজ আস্তাকুঁড়ে নিক্ষেপ হবে অজানা গন্তব্যে।
এরাই বয়স্কভাতা, বিধাতাভাতা, প্রতিবন্ধীভাতা আর ত্রানের চাল গম চুরি করে অসহায় মানুষদের সাথে প্রতারণা করবে।
সরকারের দেওয়া দান অনুদানকে নিজেরা হস্তগত করে অসহায় মানুষদের হক ও প্রাপ্যটুকু নষ্ট করবে।

67% LikesVS
33% Dislikes
Comments (০)
Add Comment