আরিফ আজাদের বাজেট পর্যালোচনা (২০২১-২২) : প্রসঙ্গ মৎস্য খাত

আরিফ আল আজাদ:বাজেট পর্যালোচনা

১. ‘জীবন–জীবিকায় প্রাধান্য দিয়ে সুদৃঢ় আগামীর পথে বাংলাদেশ’ শিরোনামে এবারের বাজেট পেশ করা হল। প্রেক্ষিত হিসেবে তা খুবই প্রণিধানযোগ্য।

২. স্বাস্থ্য, কৃষি, মৎস্য, প্রাণিসম্পদ, অটোমোবাইল, ইলেকট্রনিকস এবং আইসিটি খাতের বিকাশ ও উন্নয়নে বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হয়েছে বলে উল্লেখ করেছেন মাননীয় অর্থমন্ত্রী । মুরগি/মাছের খাবার উপকরণ আমদানিতে রেয়াতি সুবিধা দেওয়া হয়েছে। এতে মুরগি, মাছ ও গবাদিপশুর খাবারের দাম কমানোর সুযোগ তৈরি হবে। মাংস আমদানিতে শুল্কহার বাড়ানো হয়েছে। আরোপ করা হয়েছে ১৫ শতাংশ হারে ভ্যাট। আবার ন্যূনতম শুল্কায়ন মূল্যের প্রস্তাব করা হয়েছে। এ গুলো সব ইতিবাচক দিক। মাছের ক্ষেত্রেও এটা করা প্রয়োজন ছিল।

৩. দেশীয় মাছ উৎপাদনে সুরক্ষা দেয়া এবং মাছ গ্রহণ ও বাজারজাত করণ কিংবা রপ্তানিতে কি কি পদক্ষেপ নিয়ে সারপ্লাস উৎপাদনকে ব্যবহার করা হবে তার কোন দিক নির্দেশনা বাজেটে নেই। সুনীল অর্থনীতির অন্যতম নিয়ামক সামুদ্রিক মৎস্য খাতের প্রতি কোন নীতিগত ও কাঠামোগত সংস্কারের প্রস্তাবনাও বাজেটে প্রতিফলিত হয়নি। অপ্রচলিত মৎস্য চাষ, মেরিকালচার ইত্যাদি বিষয়ে সরকারের সংস্কার ও ভবিষ্যৎ করণীয় সম্পর্কে দিকনির্দেশনা থাকলে ভাল হত।

৪. আমাদের মনে রাখতে হবে দারিদ্র্য বিমোচনের অন্যতম হাতিয়ার কর্মসংস্থানের অপার সম্ভাবনা এখনও রয়েছে মৎস্য খাতে। যেখানে ফসল খাতে যান্ত্রিকীকরণের জন্য তা প্রায় তলানিতে। দেশের মানুষের আমিষ যোগান ও রোগ প্রতিরোধের নিয়ামক শক্তি হিসেবে মাছ আমাদের জন্য অতুলনীয় পুস্টি উপাদান। সেজন্য উৎপাদনের পাশাপাশি এখন মনোযোগ বেশী দেয়া প্রয়োজন ভ্যালু এডিশান এর দিকে এবং নিরাপদতার দিকে। সাদা মাছের রপ্তানী বাজার বৃদ্ধির দিকে এখনই মনোযোগ দিতে হবে। সে জন্য সাদা মাছের খামার রেজিস্ট্রেশন ও ট্রেসেবিলিটি নিয়ে অবিলম্বে কাজ শুরু করা দরকার। মৎস্য খাতের প্রাণশক্তি বেসরকারী খাতকে কী ভাবে আস্থায় নেয়া যায় তা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বাজেটে স্বল্প পরিসরে হলেও এসব বিষয় প্রতিফলিত হওয়া প্রয়োজন ছিল।

৫. মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের এডিপিতে ২০২১-২২ অর্থ বছরে বরাদ্দ রাখা হয়েছে ১৭৮৭.৮০ কোটি টাকা – যা ২০২০-২১ সালে ছিল ১৬১১.৮০ কোটি টাকা। এডিপি বাস্তবায়ন সক্ষমতার বিচারে তা সঠিক বলা যায়। মন্ত্রণালয়ের মোট বরাদ্দ ২০২০-২১ এর ৩১৯৩ কোটি টাকা থেকে বৃদ্ধি করা হয়েছে ৩৪৩৭ কোটি টাকা। রাজস্ব খাতে নুতন জনবল যুক্ত হলে তা বৃদ্ধির প্রয়োজন হবে।

আরিফ আজাদ, সাবেক মহাপরিচালক, মৎস্য অধিদপ্তর।

100% LikesVS
0% Dislikes
Comments (০)
Add Comment