জীবনের কথা
আনোয়ার হোসেন বাদল
————————
বড় মেয়ের বয়স তখন মাস পাঁচেক হবে?
এক্কে কে এক্কে কে বোল ধরেছে সবে
গ্রাম ছেড়ে অনেক দূরে থাকি
পরিবারও নিজের সাথে রাখি
হঠাৎ একদিন ডাক দিয়ে কয়- ‘বাবা! ‘
ছোট্ট মুখে তাকিয়ে আমি এক্কেবারে হাবা।
নিজের ভেতর ওলট পালট ঘটলো যেন কী
পুরুষ ছিলাম এবার বুঝি বাবা হয়েছি!
বছর দু”য়েক পর
ছোট্টখুকীর জন্ম হলো তাহার নানুর ঘর
দু’মেয়ের মা ভেবে হলেন সারা
ছেলে হয়নি-
ছেলের জন্যি সবাই পাগলপাড়া।
বলেছিলাম ছেলে মেয়ের নেই ভেদাভেদ আজ
মানুষ হলে মেয়েরাও করতে পারে রাজ
গিন্নি আমার শোনো
কিউট কিউট বেবী দু’টোর নেই তুলনা কোনো।
ছোট্টখুকী বললো একদিন-
‘মিথ্যে কেন বলো? ‘
অবাক হয়ে শুধাই তাকে – ‘কী হলো, কী হলো?’
গিন্নী বলেন- একটুখানি মনেই করো না!
কথা দিয়ে রসগোল্লা সেই যে আনলে না?
অবাক হয়ে তাকাই খুকীর মুখে
আনন্দেতে ভাসছি স্বর্গসুখে
খুকীর মুখে ওটাই ছিলো প্রথম কথা বলা
সেই থেকেই সহজ পথে আমার জীবন চলা।।
তারও অনেক পর
একটি ছেলের জন্ম হলে
আনন্দেতে মাতলো আবার ঘর
আজকে তারা চাকরি করে দেশ-বিদেশে ঘুরে
তাদের নিয়ে যাচ্ছি এবার ট্যুরে
হাইস্কুলে পড়ছে বাবু থাকছে সাথে সাথে
নিজের হাতে আমে দুধে খাওয়াই তাকে পাতে
দু’দিন বাদে ছেলেও হয়তো যাবে দূরে সরে
নীরবতা নামবে তখন ঘরে।
এটাই বুঝি বাস্তবতা সময় অভিঘাত
উদাস দৃষ্টি আপনমনে দেখছি ভবিষ্যৎ
বাবা আমি, তারাই আমার প্রাণ
তাদের ছাড়া আমার জীবন ম্লান
তাদের জন্যে অনেক দোয়া, অনেক ভালোবাসা
তারাই আমার সুখ দুঃখ আমার সকল আশা।।
পটুয়াখালী
২৩/০৬/২০২১