রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ যা সংক্ষেপে রাকসু নামে পরিচিত। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সৎ, মেধাবী এবং দেশপ্রেমিক ছাত্রনেতা তৈরির উদ্দেশ্যে ১৯৬২ সালে রাকসু প্রতিষ্ঠিত হয়।
রাকসুর কাজ হলো বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনসভা বা সিনেটে সাধারণ শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধিত্ব করা। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেটে ১০৩ জন সিনেটরের মধ্যে শিক্ষার্থীদের দ্বারা নির্বাচিত পাঁচজন প্রতিনিধি থাকার নিয়ম রয়েছে।
সিনেটের সংখ্যাগত দিক থেকে মাত্র ৫ জন শিক্ষার্থী প্রতিনিধি উপস্থিত থাকার নিয়ম থাকলেও, এই ৫ জনের শক্তি অনেক বেশি। কারণ এই ৫ জন প্রতিনিধি প্রায় ৩৫ হাজার সাধারণ শিক্ষার্থীর প্রতিনিধিত্ব করেন। এই ৫ জন প্রতিনিধি সিনেটে যে কোনো শিক্ষার্থীবান্ধব আইন, সিদ্ধান্ত ও বাজেট সহজেই পাশ করতে পারেন। কিন্তু, ১৯৬২ সালে রাকসু প্রতিষ্ঠার পর এখন পর্যন্ত শুধুমাত্র ১৪ বার রাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
দুঃখের বিষয় যে, দীর্ঘ ২৯ বছর ধরে রাকসু নির্বাচন বন্ধ রয়েছে। ফলে সিনেটে সাধারণ শিক্ষার্থীদের পক্ষে কথা বলার মতো কোনো ছাত্র প্রতিনিধি থাকছেন না। আজকে রাকসু সচল থাকলে, প্রতিটি ক্ষেত্রে জবাবদিহি থাকত শিক্ষার্থীদের কাছে এবং শিক্ষার্থীদের স্বার্থবিরোধী কোনো প্রস্তাব কখনোই সিনেটে প্রস্তাবিতও হতো না। আজ রাকসু থাকলে সাধারণ শিক্ষার্থীদের দাবি দাওয়াগুলো সিনেটে উচ্চকণ্ঠে উত্থাপিত হতো।
দেশ, জাতি, সভ্যতার ক্রান্তিলগ্নে আবির্ভূত সকল আন্দোলনে যেমন- ৬৯ এর গণ-অভ্যুত্থান, ৭১ এর মহান মুক্তিযুদ্ধ এবং পরবর্তীতে সকল স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে রাকসু গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। বাংলাদেশের ইতিহাস ঘাঁটলে দেখা যায় যে, ছাত্র আন্দোলনের সোনালি অর্জনগুলো ছাত্র সংসদের কারণেই সম্ভবপর হয়েছিল।
বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা এখন ঐক্যবদ্ধ হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে গণতান্ত্রিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে সোচ্চার হয়েছে। সুতরাং, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে সাধারণ শিক্ষার্থীদের দাবির প্রতি গুরুত্বারোপ করে রাকসু নির্বাচনের উদ্যোগ গ্রহণ করার জন্য দৃষ্টি আকর্ষণ করা হচ্ছে।
মো. কামরুজ্জামান কিরন
- শিক্ষার্থী, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়।
Login To Leave a Comment