তোহফায়ে রামাদান-২য় পর্ব”রোযার(সিয়ামের)পরিচয়”

এম মিরাজ হোসাইন, জেলা প্রতিনিধি, ভোলা:
রোযার (সিয়ামের) পরিচয়ঃ
রোযা ইসলামের ৫টি মৌলিক ভিত্তির মধ্যে অন্যতম ভিত্তি। এর আরবি প্রতিশব্দ অর্থাৎ কোরআনের ভাষা ‘আসসাওম’। শাব্দিক অর্থ হচ্ছে আত্নসংযম, কঠোর সাধনা, অবিরাম চেষ্টা ও বিরত থাকা। ইংরেজিতে এর প্রতিশব্দ হচ্ছে Fasting।
পারিভাষিক সংজ্ঞাঃ আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের উদ্দেশ্যে সাওমের নিয়তে সুবহে সাদেক থেকো সূর্যাস্ত পর্যান্ত সব ধরনের পানাহার ও যৌন মিলন থেকে বিরত থাকার নাম সাওম বা রোযা।
প্রবৃত্তির তাড়নায় মানুষের সঞ্চিত পাপ পঙ্কিলতা জ্বালিয়ে দেয়া, নিঃশেষ করে দেওয়াই এর মহৎ উদ্দেশ্যে।
রোযা সমন্ধে আল – কোরআনে ধারাবাহিক বর্ণনাঃ
مِّنْ أَيَّامٍ أُخَرَ ۚ وَعَلَى الَّذِينَ يُطِيقُونَهُۥ فِدْيَةٌ طَعَامُ مِسْكِينٍ ۖ فَمَن تَطَوَّعَ خَيْرًا فَهُوَ خَيْرٌ لَّهُۥ ۚ وَأَن تَصُومُوا خَيْرٌ لَّكُمْ ۖ إِن كُنتُمْ تَعْلَمُونَ

এ কতিপয় নির্দিষ্ট দিনের রোযা। যদি তোমাদের কেউ হয়ে থাকে রোগগ্রস্ত অথবা মুসাফির তাহলে সে যেন অন্য দিনগুলোয় এই সংখ্যা পূর্ণ করে। আর যাদের রোযা রাখার সামর্থ আছে (এরপরও রাখে না) তারা যেন ফিদিয়া দেয়। একটি রোযার ফিদিয়া একজন মিসকিনকে খাওয়ানো। আর যে ব্যক্তি স্বেচ্ছায় ও সানন্দে কিছু বেশী সৎকাজ করে, তা তার জন্য ভালো। তবে যদি তোমরা সঠিক বিষয় অনুধাবন করে থাকো তাহলে তোমাদের জন্য রোযা রাখাই ভালো।

তাফসীর :
অর্থাৎ একাধিক মিসকিনকে আহার করায় অথবা রোযাও রাখে আবার মিসকিনকেও আহার করায়।

দ্বিতীয় হিজরীতে বদর যুদ্ধের আগে রমযানের রোযা সম্পর্কে যে বিধান নাযিল হয়েছিল এ পর্যন্ত সেই প্রাথমিক বিধানই বর্ণিত হয়েছে। এর পরবর্তী আয়াত এর এক বছর পরে নাযিল হয় এবং বিষয় বস্তুর সাদৃশ্যের কারণে এর সাথে সংযুক্ত করে দেয়া হয়।

সিয়াম বা রোযা সম্পর্কে রাসূল (সঃ) নির্দেশনাঃ
রোযার প্রতিদান: হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: মহান পরাক্রমশালী আল্লাহ বলেন,আদম সন্তানের প্রতিটি আমল তার নিজের জন্য, কেবল রোযা ছাড়া। কারণ তা আমার জন্য এবং আমি তার প্রতিদান দেব। আর রোযা ঢাল স্বরুপ। কাজেই তোমাদের কেউ যখন রোযা রাখে,সে যেন অশ্লীল কাজ না করে, শোরগোল না করে। যদি কেউ তাকে গালি দেয় বা তার সাথে কেউ ঝগড়া করে তাহলে তার বলা উচিত, আমি রোযাদার। যার হাতে মুহাম্মদের প্রাণ তার কসম! রোযাদারের মুখের গন্ধ আল্লাহর কাছে মিশকের চেয়েও সুগন্ধ যুক্ত। রোযাদারের দু’ টি আনন্দ, যা সে লাভ করবে, একটি হচ্ছে সে ইফতারির সময় খুশি হয়। আর দ্বিতীয়টি লাভ করবে যখন সে তার সাথে সাক্ষাৎ করবে, তখন সে তার রোযার কারণে আনন্দিত হবে।
(ইমাম বুখারী ও ইমাম মুসলিম হাদীসটি বর্ণনা করছেন।)

50% LikesVS
50% Dislikes
Comments (০)
Add Comment