নিজস্ব পোশাক তৈরির মাধ্যমে বহু বছরের প্রাচীন ঐতিহ্য ধরে রেখেছে বান্দরবানের পাহাড়ি নারীরা।

 

রিমন পালিত, বান্দরবান ব্যুরো।

বাঙ্গালীদের মত পার্বত্য বান্দরবানে বসবাসরত সকল জাতি গোষ্ঠীর রয়েছে নিজস্ব ঐতিহ্য কৃষ্টি কালচার , সংস্কৃতি। সে সাথে রয়েছে নিজস্ব পোশাক ও ভাষা । নিজ বাসা বাড়িতে হাতের তৈরি পোষাক প্রস্তুতের মাধ্যমে বহু বছরের এই প্রাচীন ঐতিহ্যকে এখন ও বাঁচিয়ে রেখেছে পাহাড়ি নারীরা।

পার্বত্য অঞ্চলে ১১টি পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর নারীরা নিজেদের পরিধেয় বস্ত্র নিজেরাই তৈরি করেন বিশেষ কায়দার হাতের বুনন কোমর তাঁতের মাধ্যমে।

এতে কোমর তাঁতকে আয়ের পথ হিসেবে বেছে নিয়েছেন পাহাড়ি নারীরা।কিন্তু শুধু বম নারীরা এর ঐতিহ্য এখনো ধরে রেখেছেন। বান্দরবান শহরের ফারুক পাড়া,লাইমি পাড়া,সেরন পাড়াসহ বম সম্প্রদায় পাড়াগুলোতে শীতের মৌসুমে কাপড় তৈরিতে ব্যস্ত পাহাড়ি নারীরা।

মেশিনের সাহায্য ছাড়াই কোমরে রশি জড়িয়ে ছোট ছোট বাঁশের সাহায্যে তৈরি করা হয় কোমর তাঁত কাপড়।

রুচিশীল বৈচিত্র্যময় ডিজাইন, দেখতে সুন্দর,আরামদায়ক হওয়ায় পাহাড়ে বেড়াতে আসা পর্যটকেরা পাহাড়ি নারীদের কোমর তাঁতে বুননের বিভিন্ন ধরনের কাপড় কিনে নিয়ে যান। পাহাড়ি নারীদের তৈরি রং বেরঙের কাপড়ে বিভিন্ন ধরনের কারুকাজ ফুটিয়ে তোলে পোশাকে।দোকানে দোকানে নানা রঙের শীতের কোমড় তাঁতে কাপড় সাজিয়ে রেখে বিমোহিত করে ক্রেতাদের।

কোমড় তাঁতের কাপড় দিয়ে তৈরি হয় থামি (পরণের কাপড়),সালোয়ার কামিজ, শার্ট, গায়ের শাল, বেডশিট, মেয়েদের ভ্যানিটি ব্যাগ,গামছা, কম্বল, রুমাল, গায়ের শাল, টুপি, ওড়না, মাফলার, চাঁদর বিছানা চাদরসহ অনেক রকমের পণ্য।

কম্বল বিক্রি হয় ১৫০০-২৫০০ টাকা, মাফলার বিক্রি হয় ১৫০-২৬০ টাকা, চাঁদর বিক্রি হয় ৬০০-৭০০ টাকা নকশা বুঝেপাহাড়ে চাষ করা তুলা থেকে সুতা তৈরি করে কোমর তাঁতে কাপড় বুনে পাহাড়ের নারীরা। তাঁতে বুনা কাপড়ে তৈরি করা হয় বিভিন্ন ধরনের পোশাক।

যা বর্তমানে প্রাধান্য পাচ্ছে দেশের তরুণ–তরুণীদের ফ্যাশনে। কোমর তাঁতে বুনা কাপড় বিক্রি করে অর্থনৈতিকভাবেও স্বাবলম্বী হয়ে উঠছেন পাহাড়ের নারীরা।

জেলা মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের উপ-পরিচালকআতিয়া চৌধুরী বলেন,
বান্দরবানে পিছিয়ে পড়া নারীদের জন্য মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর নানান ধরনের প্রশিক্ষণের আয়োজন করে থাকে। এই প্রশিক্ষণ গ্রহনের মাধ্যমে এখানকার নারীরা স্বাবলম্বী হচ্ছে এবং তাদের পরিবারও আর্থিক ভাবে সচ্ছল হয়ে উঠছে।

ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক) এর উপ-ব্যবস্থাপক মো:শামীম আলম বলেন,পার্বত্য অঞ্চলে পিছিয়ে পড়া মেয়েদেরকে বিভিন্নভাবে প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকি। প্রশিক্ষণের পর তারা যেন উপযুক্ত ভাবে গড়ে উঠতে পারে তার জন্য ঋণ দিয়ে থাকি।

50% LikesVS
50% Dislikes
Comments (০)
Add Comment