লতিফ গাজী, ক্যাম্পাস প্রতিনিধি: ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (ডুয়েট) এ ডুয়েট ইনোভেশন সোসাইটি কর্তৃক আয়োজিত Seminar on “Chemical Engineers in Power plant and Technology used in BSTI” অনুষ্ঠানটি সফল ভাবে সম্পর্ণ হয়েছে ।
উক্ত সেমিনারে কি নোট স্পিকার হিসেবে উপস্থিত ছিলেন
১. ইঞ্জিনিয়ার মো.রাফিউল ইসলাম রাফি বিএসসি ইন কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং, বুয়েট এমএসসি ইন ম্যাথমেটিক্সস, জাবি । বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশন (বিএসটিআই)
২. ইঞ্জিনিয়ার রাকিব হাসান,
বিএসসি ইন কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং , বুয়েট
ডেপুটি ম্যানেজার (কেমিক্যাল), এন.ডাব্লু.পি.জি.সি.এল
উক্ত সেমিনারে আরো উপস্থিত ছিলেন,
১.প্রফেসর ড. হিমাংশু ভৌমিক (প্রফেসর মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ, ডুয়েট )
২. প্রফেসর ড. মো. আরেফিন কাওসার ( প্রফেসর মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ,ডুয়েট)
সেমিনারের শুরুতে প্রফেসর ড. হিমাংশু ভৌমিক স্যার বলেন, ডুয়েট ইনোভেশন সোসাইটি কতৃক আয়োজিত ক্যারিয়ার বিষয়ক এই সেমিনার নিঃসন্দেহে ছাত্র ছাত্রীদের ক্যারিয়ারের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমি ধন্যবাদ জানাই ডুয়েট ইনোভেশন সোসাইটির(DIS) সকলকে এই রকম একটি সেমিনারের আয়োজন করার জন্য। আমরা তোমাদের সব ধরনের সাহায্য করতে প্রস্তুত আছি এবং তোমাদের অগ্রগতি কামনা করছি।
তারপর বক্তব্য রেখেছিলেন প্রফেসর ড. মো. আরেফিন কাওসার স্যার তিনি বলেন, নিঃসন্দেহে ডুয়েট ইনোভেশন সোসাইটি প্রশংসার দাবিদার এ রকম একটি ক্যারিয়ার বিষয়ক সেমিনারের আয়োজন করার জন্য। আমাকে এই সেমিনারে আমন্ত্রন করার জন্য ডুয়েট ইনোভেশন সোসাইটিকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করছি। তোমরা সামনে অনেক দুর এগিয়ে যাবে এই কামনা করছি।
অতঃপর ওনার সংক্ষিপ্ত বক্তব্য শেষে সন্মানিত শিক্ষকদের অনুমতি নিয়ে সেমিনার শুরু করা হয়।
উক্ত সেমিনারে কি নোট স্পিকার হিসেবে বক্তব্য রাখেন প্রকৌশলী মো.রাকিব হাসান। তিনি বলেন, ক্যারিয়ার বিষয়ক এসব প্রোগ্রাম তোমাদের ভবিষ্যতের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তিনি মুলত পাওয়ার প্লান্টে কেমিক্যাল ইন্জিনিয়ারদের কার্যকলাপ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন এবং গুরুত্বপূর্ণ কিছু প্রশ্নের উত্তর দেন। তিনি বলেন পাওয়ার প্লান্টে একজন কেমিক্যাল ইন্জিনিয়ারের সবচেয়ে বড় কাজ হলো কুলিং ওয়াটার এবং Auxiliary Cooling Water মেইনটেইন করা। এছাড়াও ডি মিনারেলাইজড ওয়াটার, ওয়াটার ট্রিটমেন্ট, রিভার ওয়াটার ইনটেক,রিভার ওয়াটার কনজাম্পশন, টোটাল ওয়াটারের কনজাম্পশন হিসাব এবং সেটার কোয়ালিটি নিশ্চিত করাও একজন কেমিক্যাল ইন্জিনিয়ারের প্রধান কাজ।
তিনি বলেন ইঞ্জিন চালিত পাওয়ার প্লান্টে লুব অয়েলের ( ভিসকোসিটি, কাইনেটিক ভিসকোসিটি,কাইনেমিটিক ভিসকোসিটি, লুব অয়েলের ফ্লাস পয়েন্ট, ফায়ার পয়েন্ট) ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ণ টেস্ট করে ডাটা সিট তৈরি করা কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারের অন্যতম প্রধান কাজ।
এছাড়াও লুব অয়েল স্টোরেজ করা, লুব অয়েলের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করা এবং সকল প্রকার সেফটি নিশ্চিত করাও কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারের কাজ।
তিনি আরো বলেন , মূলত কম্বাইন্ড সাইকেলে একজন কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারের ক্যারিয়ারের জন্য সবচেয়ে বেশি স্কোপ রয়েছে।
প্রশ্নত্তর পর্বে এক শিক্ষার্থীর প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ওষুধ শিল্পের প্রদান কাজ হলো গুণ নিশ্চিত করা। আর একজন কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার গুণ নিশ্চিত কারী হিসেবে ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানিতে অনেক বড় ভুমিকা পালন করে। যেহেতু প্রসেস এবং রিয়েকশন এবং মেকানিক্যালের কাজ সম্পর্কে কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়াররা অবগত তাই তারা এসব ইন্ডাস্ট্রিতে অনেক বড় ভুমিকা রাখতে পারে। উপদেশ স্বরুপ তিনি বলেন, স্টুডেন্ট অবস্থায় এসব বিষয় সম্পর্কে বিস্তারিত জ্ঞান অর্জন করতে পারলে ক্যারিয়ারে অনেক ভালো করা সম্ভব।
উনার আলোচনা শেষে অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় কি নোট স্পিকার মোঃ রাফিউল ইসলাম রাফি উনার আলোচনা শুরু করেন। শুরুতে তিনি বলেন, এরকম একটি সেমিনারে আমাকে আমন্ত্রণ করার জন্য ডুয়েট ইনোভেশন সোসাইটিকে আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করছি। তিনি বলেন বর্তমান যুগ প্রতিযোগিতার যুগ, এই প্রতিযোগিতার যুগে টিকে থাকতে হলে নিজেকে সেই ভাবেই প্রস্তুত করতে হবে। তাই চাকরির বাজারে তোমাদের অনুপ্রবেশের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো সিভি তৈরি করা। তাই সিভি তৈরি সময় অবশ্যই মনে রাখতে হবে যেন সেটা ২-৩পৃষ্ঠার বেশি না হয়, তবে ২ পৃষ্ঠা হলে সবচেয়ে ভালো হয়। তিনি সিভি ও জীবনবৃত্তান্ত এর মধ্যে পার্থক্য বোঝান। কোথায় সিভি জমা দিতে হবে আর কোথায় জীবনবৃত্তান্ত জমা দিতে হবে এ ব্যাপারে ছাত্রদের ভালো করে বুঝান। এরপর তিনি চাকরির ভাইয়া- সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রদান করেন।
তারপর তিনি কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারদের সরকারি এবং বেসরকারি জব সেক্টর যেমন অয়েল & গ্যাস, পাওয়ার প্লান্ট, ফার্মাসিউটিক্যালস ইন্ডাস্ট্রি, কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রি,টেক্সটাইল ইন্ডাস্ট্রি এবং ফুড ইন্ডাস্ট্রি ইত্যাদি সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেন। এসব সেক্টরে জব করার জন্য যে সব বিষয় জানা প্রয়োজন সে সব বিষয়ে বিশদভাবে আলোকপাত করেন। তিনি বলেন ছাত্র অবস্থায় যদি HPLC সম্পর্কে বিস্তারিত জানা যায় তাহলে ফার্মাসিউটিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিতে খুবই ভালো করা সম্ভব।
সবশেষে তিনি বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশন (বিএসটিআই) সম্পর্কে ধারনা প্রদান করেন এবং বিএসটিআই এর কার্যকলাপ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন । তিনি বলেন বিএসটিআই হলো বাংলাদেশের একমাত্র স্ট্যান্ডার্ড ফরমুলেটিং অথরিটি যারা পন্যের স্ট্যান্ডার্ড অনুযায়ী লাইসেন্স বা অনুমোদন প্রদান করে থাকে। তিনি আরো বলেন বিএসটিআই কোন ড্রাগস এবং ঔষধ ছাড়া মোট ২২৭ টি পন্যের অনুমোদন করেছে। যদি কোন প্রতিষ্ঠান বিএসটিআই এর অনুমোদন ছাড়া পন্য বাজারে সরবরাহ করে সে ক্ষেত্রে আইন অনুযায়ী শাস্তির ব্যবস্থা রয়েছে।
উনার আলোচনা শেষে সকল অতিথি,শিক্ষক ও স্পিকারদের ধন্যবাদ জানিয়ে Seminar on পাওয়ার প্ল্যান্ট ও প্রযুক্তি ব্যবহারের ক্ষেত্রে কেমিক্যাল প্রকৌশলীরা বিএসটিআই সেমিনারটির সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়।