রক্তাক্ত ফিলিস্তিন! নিহত অন্তত ৫৫, বিশ্বনেতারা কোথায়?

৬০

মেহেদী হাসান সজীব, আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ পৃথিবীর তৃতীয় বৃহত্তম পবিত্র স্থান ফিলিস্তিনের জেরুজালেমের আল আকসা মসজিদ কে কেন্দ্র করে ফিলিস্তিনে এখনও অব্যাহত ইসরায়েলের আগ্রাসন। গাজায় ইসরায়েলের নিরাপত্তা বাহিনীর সাথে ব্যাপক সংঘর্ষ সহ বিমান হামলায় ফিলিস্তিনি অন্তত ৫৫ জনের ও বেশি নাগরিক নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম। এছাড়া আহতের সংখ্যা কয়েক হাজার ছাড়িয়ে গেছে। নিহত ও আহতদের মধ্যে অসংখ্য ছোট ছোট শিশুও রয়েছে। আল-আকসা মসজিদ কে কেন্দ্র মুখোমুখি অবস্থায় অবস্থান করছে নিপিড়ীত নির্যাতিত ফিলিস্তিনের নাগরিক আর ইসরাইলের নিরাপত্তা বাহিনী।

এদিকে ইসরাইলী নিরাপত্তা বাহিনীর হামলার প্রতিবাদে রকেট ছুড়ে হামলার জবাব দিচ্ছে হামাস। ইসরায়েলের তাণ্ডবের প্রতিবাদে গত মঙ্গলবার উপত্যকা থেকে ১৩০টি রকেট ছোড়ে তারা। এতে ইসরাইলের ও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এসব পাল্টাপাল্টি হামলায় ইসরাইলের সেনা সদস্য সহ অন্তত ০৬ জন নিহত হয়েছে এবং বেশ কিছু মানুষ আহত হয়েছে। আল আকসা মসজিদ এলাকা থেকে ইহুদি বাহিনী সরে না গেলে আরও হামলার হুঁশিয়ারি দেয় ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠনটি।

তবে রকেট হামলার কারণে হামাসকে চরম মূল্য দিতে হবে বলে হুমকি দিয়েছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। এদিকে পূর্ব জেরুজালেমেও হামলা অব্যাহত রেখেছে ইসরায়েলি নিরাপত্তা বাহিনী। এমন পরিস্থিতিতে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু দেশে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছেন।

এদিকে ইসরাইলি হামলায় গাজায় একটি বহুতল ভবন ধসে পড়েছে। অপর একটি ভবনে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ইসরাইল দাবি করেছে, তারা রকেট হামলার উৎসস্থলে এবং হামাসের স্থাপনা লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে। এ ছাড়া হামাসের গোয়েন্দা নেতাদের হত্যা করতে পেরেছে বলে দাবি করেছে ইসরাইল।

এসব ঘটনায় তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়েফ এরদোগানের পাশাপাশি নিন্দা জানিয়েছেন অসংখ্য মুসলিম দেশের প্রধানেরা। গতকাল বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও এসব ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানান। ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের কাছে পাঠানো এক চিঠিতে শেখ হাসিনা লিখেছেন, ‘আমরা হামলায় হতাহতদের পরিবারের প্রতি গভীর শোক এবং আমাদের ভ্রাতৃপ্রতিম ফিলিস্তিনি জনগণের প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছি। আমরা দ্ব্যর্থহীন ভাষায় এই কাপুরুষোচিত হামলার তীব্র নিন্দা জানাই। আমরা ফিলিস্তিনসহ বিশ্বের যে কোনো দেশে এ ধরনের জঘন্যতম হামলার অবসানে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে টেকসই পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।

তবে এসব ঘটনায় ইসরাইলের পক্ষে সরাসরি বিবৃতি দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। একই সঙ্গে ইসরাইল ও ফিলিস্তিনিদের মধ্যে সহিংসতার দ্রুত সমাপ্তি ঘটবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন তিনি। হোয়াইট হাউজের বিবৃতিতে বলা হয়, নেতানিয়াহুর সঙ্গে বৈঠকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেন ইসরাইলে হামাস ও অন্যান্য গ্রুপের রকেট হামলার নিন্দা জানান।

এছাড়া গোটা ঘটনাটি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং জাতিসংঘ। দ্রুত সমস্যার সমাধানের দাবি করা হয়েছে। ইসরায়েল যাতে উত্তেজনা প্রশমনের ব্যবস্থা করে, তাও দাবি করা হয়েছে।

২০১৪ সালের পর এটিই ইসরাইল ও হামাসের মধ্যকার সবচেয়ে বড় সংঘর্ষ। সেবার সাত সপ্তাহের যুদ্ধে ২ হাজার ১০০ গাজাবাসী ও ৭৩ ইসরাইলি নিহত হয়। এবারও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে আন্তর্জাতিক মহল।

50% LikesVS
50% Dislikes
Leave A Reply

Your email address will not be published.