বেড়েছে ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা,শিশুর সংখ্যা বেশি

১৫

এম মিরাজ হোসাইন,ভোলা: ভোলা দৌলতখান হাসপাতালে হঠাৎ করে বেড়েছে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। তবে অনুসন্ধানে দেখা যায়, ডায়রিয়ার আক্রান্ত রোগীর মধ্যে আট মাস থেকে পাঁচ বছর বয়সের শিশুর সংখ্যা বেশি । চিকিৎসকরা বলছেন আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণেই এ অবস্থা হতে দেখা গেছে। প্রতিদিন দৌলতখান হাসপাতালে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ৪০-৫০ জন রোগী ভর্তি হচ্ছেন। হাসপাতালে জায়গার অভাবে মেঝে এবং বারান্দায় রেখে রোগীদের চিকিৎসা দিচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, গত জানুয়ারি থেকে হঠাৎ করে ডায়রিয়ার প্রকোপ বাড়া শুরু হলেও মার্চ এপ্রিল মাসে এই রোগের তীব্রতা বেড়ে যায়। ডায়রিয়া ওয়ার্ডে স্থান সংকুলান না হওয়ায় রোগীদের ঠাঁই হয়েছে হাসপাতাল করিডোরের মেঝেতে। এ অবস্থায় চিকিৎসা দিতে রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছেন নার্স, চিকিৎসক এবং কর্মচারীরা।

এ ব্যাপারে হাসপাতালের নার্সদের কাছ থেকে জানতে চাইলে তারা জানান, গত বছরের মার্চ থেকে করোনা ভাইরাসের আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ার সাথে বাংলাদেশের প্রতিটি হাসপাতালে করোনা রোগীর জন্য আলাদা ইউনিট রাখা হয়েছে। হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ড করোনা রোগীদের চিকিৎসার জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এজন্য কিছুটা বেড সংকট রয়েছে। তারপরও আলাদা দুটি কক্ষে ডায়রিয়া রোগীদের চিকিৎসা চলছে। কিন্তু চাপ বেশি থাকায় হাসপাতালের করিডোরের মেঝেতে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। ২৪ ঘণ্টায় ৫০-৬০ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন। চিকিৎসা নিয়ে প্রতিদিন ৩০ থেকে ৩৫ জন রোগী সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরছেন।

গত শনিবার ডায়রিয়ায় আক্রান্ত লামিয়া আক্তার নামের ষষ্ঠ শ্রেণীর শিক্ষার্থীকে নিয়ে আসেন তার স্বজনেরা। বেড না থাকায় মেঝেতে চিকিৎসা চলছে ঐ শিক্ষার্থীর। ডায়রিয়ার পাশাপাশি তার আরো কিছু সমস্যা রয়েছে। বুধবার পর্যন্ত সুস্থ না হওয়ায় চিকিৎসক আরও দুই দিন থাকার পরামর্শ দিয়েছেন। স্বাস্থ্য সহকারী জনাব মোহাম্মদ গজনবী জানান, অসচেতনতার কারনে অধিকাংশ লোকের ডায়রিয়া আক্রান্ত হয়। পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার অভাবে বিশেষ করে শিশুরা এ রোগে বেশি আক্রান্ত হয়। ডায়রিয়া রোগ প্রতিরোধ করতে হলে অবশ্যই সচেতনতার পাশাপাশি পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকতে হবে।

ডায়রিয়া ওয়ার্ডে কর্তব্যরত নার্সেরা জানান, আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণে ডায়রিয়া রোগী বেড়েছে। এ সময়ে শিশুদের প্রতি যত্নশীল থাকতে হবে। পাতলা পায়খানা ও বমি শুরু হলে শিশুকে মুখে খাবার স্যালাইন বার বার খাওয়ানো ও মায়ের বুকের দুধও খাওয়াতে হবে। তিনি প্রয়োজনে হাসপাতালে নেওয়ার পরামর্শ দেন। তবে সকলে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকতে হবে।

এছাড়া খোলা ও বাসি খাবার পরিহারের পাশাপাশি সব সময় হাত পরিষ্কার রাখারও পরামর্শ দেন এই নার্স। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আনিসুর রহমান জানান, নির্ধারিত শয্যার চেয়ে অতিরিক্ত রোগী হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে যার কারনে বেডের সংকুলান হচ্ছে না। তবে সকল রোগীদের সর্বোচ্চ চিকিৎসা নিশ্চিত করা হচ্ছে বলে জানান । আবহাওয়ার পরিবর্তনের কারণে ডায়রিয়া বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। তিনি আরো জানান,ডায়রিয়া থেকে রক্ষা পেতে হলে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকতে হবে।

50% LikesVS
50% Dislikes
Leave A Reply

Your email address will not be published.