টিকা নিশ্চিত না করে ১৩ই জুন কি খুলছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান?

১৫৯

ডেস্ক রিপোর্টঃ অবশেষে বার বার ঘোষণা দিয়ে খুলতে না পারার পরেও ফের ১৩ই জুন স্কুল কলেজ খোলার ঘোষণা দিয়েছে সরকার। গতকাল শিক্ষামন্ত্রী সংবাদ সম্মেলন করে বলেন, আগামী ১২ জুন পর্যন্ত মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক স্তরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে। এর আগে ২৯ মে পর্যন্ত ছুটি ঘোষণা করা হয়েছিল। এর কিছুক্ষণ পরই শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি জানিয়ে দিলেন, ১৩ জুন থেকে স্কুল-কলেজ খোলা থাকবে। তবে বিশ্ববিদ্যালয় খোলার বিষয়টি নির্ভর করছে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর আবাসিক হলের শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের টিকা দেওয়ার ওপর। একই দিন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন ১৩ জুন থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয় খুলে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।

তবে প্রতিষ্ঠান আদৌ খুলবে কিনা এ নিয়ে সংশয় রয়েছে। এই বিষয়ে করোনা নিয়ন্ত্রণে সরকার গঠিত টেকনিক্যাল কমিটির একজন সদস্য বলেন, শনাক্তের হার পাঁচ শতাংশের নিচে নেমে এলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা হবে আগে এই সিদ্ধান্ত ছিল। এখন তা পুনর্বিবেচনা করেছে সরকার। সংক্রমণ পরিস্থিতি এখন যে অবস্থায় রয়েছে তা থেকে যদি কমে আসে বা একই থাকে তাহলে প্রতিষ্ঠান খুলে দেয়া হবে। শনাক্তের হার বৃদ্ধি পেলে এই সিদ্ধান্ত পুনরায় বিবেচনা করা হতে পারে। তিনি বলেন, যেহেতু কম বয়সীদের সংক্রমণ হার কম। তাই বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের টিকা প্রদান নিশ্চিত করেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার কথা বলা হয়েছে। শতভাগ না হলেও যেন আবাসিক শিক্ষার্থীসহ শিক্ষক কর্মকর্তাদের টিকা নিশ্চিত করেই ক্লাসে ফেরানো হয়।

প্রতিষ্ঠান খুলে দেয়া হলে কীভাবে চলবে তারও কিছু নির্দেশনা দেন শিক্ষামন্ত্রী। সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, যদি ১৩ই জুন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়া হয় তাহলে ২০২১ সালের এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার্থী ব্যাচকে অগ্রাধিকার দেয়া হবে। তাদের সপ্তাহের ছয়দিন ক্লাসে আসতে হবে। ২০২২ সালে যারা এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার্থী তাদেরও হয়তো একই সময়ে ক্লাসে নিয়ে আসা হবে। অন্য ক্লাসের ব্যাপারে হয়তো সপ্তাহে একদিন ক্লাস নেয়া হবে। প্রাথমিকের বিষয়ে একই সিদ্ধান্তের কথা বলেন প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন। তিনি বলেন, শুরুতে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা সপ্তাহে ছয়দিন ও বাকি শিক্ষার্থীরা একদিন করে ক্লাস করবে।

২০২১ সালের এসএসসি পরীক্ষার্থীদের ৬০ ও এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের ৮০ দিনের সংক্ষিপ্ত সিলেবাস দেয়া হয়েছে আগেই। ২০২২ সালের এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষাও সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে অনুষ্ঠিত হবে বলে উল্লেখ করেন শিক্ষামন্ত্রী। তিনি বলেন, ২০২২ সালের এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের জন্যও সংক্ষিপ্ত সিলেবাস তৈরি করেছে সরকার। জুন মাসে তা প্রকাশ করা হবে।

গত বছরের শেষ দিকে সরকারের পক্ষ থেকে শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করার লক্ষ্যে রোডম্যাপও দেওয়া হয়েছিল। বলা হয়েছিল, স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিত পর্যায়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া যেতে পারে। প্রথমে এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার্থীরা ক্লাসে যাবে। এরপর অন্যরা। সেই রোডম্যাপ আর বাস্তবায়িত হয়নি। চলতি বছরের শুরুতে নতুন করে সময়সূচি ঘোষণা করা হলো। পলিটেকনিকসহ বেশ কিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পরীক্ষাও চলছিল। বিভিন্ন স্থানে শিক্ষার্থীরা হল-ছাত্রাবাস খোলার দাবিতে আন্দোলন শুরু করলে সরকার নতুন সময়সূচি ঘোষণা করে। কিন্তু এখানেও শিক্ষা মন্ত্রণালয় তুঘলকি সিদ্ধান্ত নেয়। আগে স্কুল খুলবে। এরপর কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়। হওয়ার কথা ছিল উল্টো। অনেকের অভিযোগ, আন্দোলনহীন দেশে সরকার ছাত্র আন্দোলনের ভয়ে বিশ্ববিদ্যালয় খুলতে তখন গড়িমসি করেছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ হল খোলা ও পরীক্ষা নেওয়ার ঘোষণা দিয়েও পিছিয়ে আসে।

100% LikesVS
0% Dislikes
Leave A Reply

Your email address will not be published.