ইহুদী বর্বর জাতি, এদের উৎপত্তি কি ভাবে?

৩৫

মোঃ সাইফুল ইসলাম,ডেস্ক রিপোর্ট:
যেভাবে উৎপত্তি হয়েছিলো অবৈধ ইজরায়েল রাষ্ট্রেরঃ
১৯৩৩ সাল। জার্মানীর চ্যান্সেলর এডলফ হিটলার ইহুদিদের প্রতি কঠোর হতে কঠোর হতে শুরু করে। ইতিমধ্যেই জাহাজে করে হাজার হাজার ইহুদী ফিলিস্তিন ভূখণ্ডে আসতে শুরু করে।
তখনই ফিলিস্তিনী জনগন বুঝতে পারে তাদের অস্তিত্ব সংকটে।

ফিলিস্তানী আরবরা নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার জন্য বিদ্রোহ ঘোষণা করে। তাদের হামলার লক্ষ্যবস্তু ছিলো ইহুদী ও বিট্রিশ সৈন্যরা। কিন্তু আরবদের সেই বিদ্রোহ কঠোর হস্তে দমন করেন বিট্রিশ সৈন্যরা। বিট্রিশ সৈন্যদের সেই বিদ্রোহ দমন এতটাই কঠোর ছিলো যে আরবদের মধ্যে ভাঙ্গনের সূত্রপাত হয়।

১৯৩০ দশকের শেষদিকে বিট্রেন চেয়েছিলো হিটলারের ন্যাস্যি বাহিনীর বিরুদ্ধে মধ্যপ্রাচ্যে জোরালো অবস্থান তৈরী করার।
১৯৩৯ সালের মাঝামাঝি সময়ে বিট্রেন সরকার একটি শ্বেতপত্র প্রকাশ করে যে পরবর্তী ৫ বছরের জন্য ৭৫ হাজার ইহুদী অভিবাসী ফিলিস্তিন ভূখণ্ডে আসবে।

বিট্রিশ এই পরিকল্পনাকে ভালোভাবে নেয়নি ইহুদী জনগোষ্ঠী।
ইহুদীরা একই সাথে হিটলার ও বিট্রিশদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার পরিকল্পনা করে। তৎকালীন সময়ে ৩২ হাজার ইহুদী বিট্রিশ সৈন্য বাহিনীতে যোগদান করে।

সেখান থেকে সামরিক প্রশিক্ষণ নিয়ে বিট্রেন ও আরবদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু করে। তাদের উদ্দেশ্য ছিলো বিট্রেন ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় যেনো দ্রুত একটা সিদ্ধান্ত নেয় এবং সমস্যা সমাধানে বিট্রেনের উপর চাপ বাড়তে থাকে।
এরই মধ্যে বিট্রেন বাধ্য হয়ে বিষয়টিকে জাতিসংঘে উপস্থাপন করে। জাতিসংঘ ১৯৪৭ সালে ফিলিস্তানে দুটি আলাদা রাষ্ট্র গঠনের সিদ্ধান্ত নেয়।

ইহুদীরা ফিলিস্তিনী মোট ভূখণ্ডের ১০ শতাংশের মালিক হলেও তাদেরকে দেওয়া হয় ফিলিস্তিনী ভূখণ্ডের অর্ধেক জমি।
স্বভাবতই আরবরা এ সিদ্ধান্তকে মেনে নিতে পারেনি।

ফিলিস্তিনী ভূখণ্ডে তখন ইহুদীরা বিজয় উল্লাস শুরু করে।
অবশেষে ইহুদীরা একটি স্বাধীন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি পেলো।
ইহুদীরাও বুঝতে পারলো আরবরা তাদের ছেড়ে কথা বলবে না কখনো। আরবদের সাথে সম্ভব্য যুদ্ধের আগেই ইহুদীরা যুদ্ধের প্রস্তুতি নিয়ে রাখলো।

আরবদের মধ্যে কোনো নেতৃত্ব দেওয়ার গুণাবলী ছিলোনা।
সবার দৃষ্টি ছিলো পবিত্র নগরী জেরুজালেমের দিকে।
মুসলমান, খ্রিস্টান ও ইহুদিদের পবিত্র স্হান হিসাবে বিবেচিত জেরুজালেম ও আল আকসা মসজিদ।

জাতিসংঘের সিদ্ধান্ত মোতাবেক জেরুজালেম আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের অধীনে থাকবে। কিন্তু কোনো পক্ষই তা মেনে নিতে পারেনি। জেরুজালেমে বসবাসরত ইহুদিদের অবরুদ্ধ করে রেখেছিলো আরবরা। অন্য জায়গার সাথে জেরুজালেমের যোগাযোগ বিছিন্ন করে দেওয়া হয়।

১৯৪৮ সালে ইহুদীরা আরবদের উপর পাল্টা আক্রমণ শুরু করে। তখন ইহুদীরা আরবদের জাতিগতভাবে শেষ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। তৎকালীন ফিলিস্তিনীর জনপ্রিয় নেতা আল হুসেইনি সিরিয়া গিয়েছিলেন অস্ত্র সহায়তার জন্য কিন্তু তাঁকে কোনো অস্ত্র সহায়তা দেয়নি সিরিয়া। সিরিয়া হতে ফিরে আল হুসেইনী যুদ্ধে জড়িয়ে পড়েন এবং কিছুদিনের মধ্যে তিনি শহীদ হন ইহুদিদের হাতে। ইহুদীরা আক্রমণের মাত্রা বাড়িয়ে দিলে ১৯৪৭ সালের ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত অনেক ফিলিস্তিনী নিজের বসতভিটা ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়। ইহুদিদের উপুর্যুপুরি জোরালো আক্রমণে দিশেহারা হয়ে পড়ে ফিলিস্তিনীরা।

১৯৪৮ সালের ১৪ই মে ফিলিস্তিন ছেড়ে চলে যায় বিট্রিশরা।
একইদিন তৎকালীন ইহুদী নেতারা ঘোষণা দেয় আজ রাতেই ইজরায়েল রাষ্ট্রের জন্ম হবে। ইজরায়েল রাষ্ট্রের জন্মের ১ ঘন্টার মধ্যে আরবরা আক্রমণ শুরু করে। মিশর, ইরাক, লেবানন, জর্ডান ও সিরিয়া একসাথে আক্রমণ পরিচালনা করে।

কিন্তু আরবদের মধ্যে কোনো সম্বনয় ছিলো না। তারা একে অপরকে বিশ্বাস করতো না। জেরুজালেম দখলের জন্য আরব ও ইহুদিদের মধ্যে তুমুল লড়াই শুরু হয়। তীব্র লড়াইয়ের এক পর্যায়ে ইহুদীরা পিছু হটতে বাধ্য হয় এবং তাদের অস্ত্রের মজুদ শেষ হয়ে যায়। ইহুদীরা নিজেদের পরাজয় বুঝতে পেরে শক্তি সঞ্চয়ের জন্য সময় নেয়।

আর কিছুদূর অগ্রসর হলেই মিশরীয় বাহিনী তেল আবিব দখলে যেতে পারতো কিন্তু জাতিসংঘের মধ্যস্হতায় দু’পক্ষই যুদ্ধ বিরতিতে চলে যায়। যুদ্ধ বিরতির প্রাক্কালে দু’পক্ষই শক্তি সঞ্চয় করতে থাকে কিন্তু তুলনামূলক ইহুদীরা বেশি শক্তি সঞ্চয় করে চকোস্লোভিকিয়া থেকে আধুনিক অস্ত্র হাতে পাওয়ার কারনে।

যুদ্ধ বিরতি শেষ হওয়ার পরপরই ইহুদীরা আরবদের উপর ঝাপিয়ে পড়ে এবং একের পর এক জায়গা দখল করতে থাকে। তেল আবিব ও জেরুজালেমে ইহুদিদের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা পায়। আরব দেশগুলোর মধ্যে পারস্পরিক আস্থা না থাকায় ১৯৪৮ সালে যুদ্ধে পরাজিত হয়।

জন্ম লাভ করে অবৈধ, বর্বর ইজরায়েল রাষ্ট্রের।

50% LikesVS
50% Dislikes
Leave A Reply

Your email address will not be published.