আবু জাফরের কলঙ্কিত শাসনামল,এক কালো অধ্যায়ের সাক্ষী বরগুনা সদর ইউনিয়ন

৪০৫

 

বরগুনা প্রতিনিধি: আমাদের সকলের জীবনেই চাকুরীসহ বিভিন্ন কাজের প্রয়োজনে চারিত্রিক সনদের প্রয়োজন পড়ে।চারিত্রিক সনদের জন্য ছুটে যাই নিজ এলাকার জনপ্রতিনিধিদের কাছে।কখনো কি ভেবেছি আমাদের চরিত্রের সার্টিফাইট করা ব্যক্তিটির চরিত্র ঠিক আছে কিনা?চরিত্রের সংজ্ঞা দেওয়া জনপ্রতিনিধির চরিত্রের কালিমা অধরাই থেকে যায় লোক চক্ষুর অন্তরালে।

নির্বাচনী ঢাকঢোল পিটিয়ে ফুলের মতো চরিত্র দেখিয়েই এরা জনপ্রতিনিধি হয়। কিন্তু অনেকেরই বুঝতে ভুল হয়, ফুলটা যে ছিলো ধুতরা ফুল। যা অতীব কখনো ভালো চরিত্রের অধিকারী হতে পারে না। লোকলজ্জা আর ভয়ের কারনেই কেউ প্রকাশ করতে চায় না তাদের চরিত্রের সার্টিফাইট করা ব্যক্তিটি কতোটা নির্মম আর নিষ্ঠুর হতে পারে। আজ জানাবো সাবেক চেয়ারম্যান আবু জাফরের শাসনামলের নিষ্ঠুর, নির্মম, পৈশাচিক আর লোমহর্ষক অজানা তথ্য।

২০১৩ সালের ১৬ই মে বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চল জুড়ে তান্ডব চালিয়ে যায় প্রলয়ঙ্কারী ঘূর্ণিঝড় মহাসেন। বরগুনার সদর ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকা ক্ষতিগ্রস্হ হয় ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে।
বরগুনা সদর ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডে গ্রামের বাড়ি ইন্জিনিয়ার সাইফুল ইসলামের। নিজ বসত বাড়ির গাছপালা ঝড়ের তান্ডবে উপরে পড়ে যায়। ইন্জিনিয়ার সাইফুল ইসলাম কাজ করেন ঢাকার স্বনামধন্য রিয়েল এস্টেট কোম্পানির প্রজেক্ট ইন্জিনিয়ার হিসাবে। বাড়িতে বসবাস করা বৃদ্ধ মা ফোনে জানায় গাছপালা পড়ে যাওয়ার কথা। কাজ ও ছুটির স্বল্পতার কারনে সময়মতো যাওয়া হয়নি। অনেকদিন পর ছুটি নিয়ে চলে যান গ্রামের বাড়ি। ক্ষতিগ্রস্হ বাড়ি মেরামতের উদ্দেশ্যে ঝড়ে পড়া গাছগুলো নিয়ে যান কাছের ও এলাকার আবু জাফর চেয়ারম্যানের স্বমিলে।
আজকে গাছ চেরাই হবে না বলে দুই একদিন সময় চায়। ছুটির স্বল্পতার কারনে ইন্জিনিয়ার সাইফুল ইসলাম গাছ চেরাইয়ের জন্য চাপ দেয় কিন্তু হঠাৎ চেয়ারম্যান আবু জাফর বলে ফেলে কিসের গাছ, কোথার গাছ?

তৎকালীন চেয়ারম্যান আবু জাফরের এমন আচরণে বাধ্য হয়ে প্রশাসন ও বিভিন্ন মহলে জানান। তৎকালীন পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপ সচিব আবদুস সালাম, তৎকালীন মেজর ও বর্তমান লেঃ কর্নেল ইমাম হাসান, ও তৎকালীন বরগুনা থানার পুলিশ পরিদর্শক তদন্ত পুলক চন্দ্র রায় ফোনে ও থানায় ডেকে নিয়ে বিষয়টার সুষ্ঠ সমাধানের তাগিদ দেন। কিন্তু সর্তক করার পরও বেপরোয়া নীতি অবলম্বন করেন আবু জাফর চেয়ারম্যান। তিনি তার দলীয় লোক দিয়ে উল্টো মামলা করে সাক্ষী সাজিয়ে নিজে তদন্ত রিপোর্ট জমা দেন। ইন্জিনিয়ার সাইফুল ইসলামের সন্তান সম্ভবা স্ত্রীকে সহ মামলার আসামী করা হয়। মাসের পর মাস আর বছরের পর বছর ছুটে যেতে হয় বরগুনায় মামলার হাজিরা দিতে। নাজেহাল আর হয়রানির চরম পর্যায়ে পৌঁছে যায় ভুক্তভোগী। যার মামলা নং – সি,আর ১১১৪/১৩। যার রায় ১৪/১২/২০১৬ তারিখে ইন্জিনিয়ার সাইফুল ইসলামের পক্ষে যায়। কিন্তু আদালতের রায়ের পরও জব্দ করা গাছ ফেরত দেওয়া হয়নি। এলাকার ভূমিদস্যু ও মোড়লবাজদের ইন্ধন দিয়ে আরো মামলা ও হয়রানি করে।

এলাকার প্রবীন মুরুব্বি ও সাবেক ইউপি সদস্য জনাব মনু মেম্বার জীবনের শেষ বয়সে পবিত্র হজের উদ্দেশ্যে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রাদী স্বাক্ষর করার জন্য গিয়েছিলেন তৎকালীন চেয়ারম্যান আবু জাফরের কাছে কিন্তু আসলেই সাথে সাথে সাইন দেওয়া লাগবে বলে তিরস্কার করে এবং অসম্মান আর অমর্যাদাযুক্ত ঔদ্ধত্যপূর্ন গালিগালাজ করে। প্রবীণ ও সাবেক ইউপি সদস্য মনু মেম্বার আক্ষেপ করে বলেন..হজযাত্রী কারো কাছে গেলে অন্তত মানুষ দোয়া চায়। আপনি যেহেতু পবিত্র কাবাঘর ও প্রিয় রাসূলের রওজা মোবারক যাবেন অবশ্যই আমাদের জন্য দোয়া করবেন। আর একজন চেয়ারম্যানের কাছে গেলাম কিন্তু সহযোগিতা না করে উল্টো অসৌজন্যমূলক আচরণ করলো।

বরগুনা জেলা ফুটবল টিমের প্রতিভাবান সাবেক ফুটবল খেলোয়াড় অসুস্থতা জনিত কারনে স্টক করে প্রায় তিন বছর শয্যাশায়ী ছিলেন। কোনো আয় বানিজ্য না থাকায় শয্যাশায়ী আবুল কালাম কোনোমতে ছুটে গিয়েছিলেন তৎকালীন চেয়ারম্যান আবু জাফর কাছে। অন্তত একটা প্রতিবন্ধী ভাতার ব্যবস্হা করে হলেও একটু বেঁচে থাকার সুযোগ করে দিতে। আমি যে আর পারছি না। তুই কিসের প্রতিবন্ধী? কিসের ভাতা? যা ভাগ বলে নির্মমভাবে তাড়িয়ে দেয় আবু জাফর চেয়ারম্যান।

নিজে চেয়ারম্যান থাকা অবস্থায় নিজের দলের বাইরে কাউকে মনে হলে কিংবা অসহায় কোনো জনসাধারণ হলে মিথ্যা মামলা, লুটপাট কিংবা হয়রানির অন্ত থাকতো না। বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা কিংবা প্রতিবন্ধী ভাতাগুলো নিজের ইচ্ছে খেয়াল খুশিমতো দিয়েছেন। ইউনিয়ন পরিষদ ভবনকে বানিয়েছেন নিজের বাসস্থান। কখনো মদ্যপ আর উদ্যোম জীবনের সঙ্গী করেছেন চেয়ারম্যানকালীন। আর নিজের রাগ, ঔদ্ধত্যপূর্ন আচরণ, দাম্ভিকতার বলির পাঠা হয়েছেন সদর ইউনিয়নের বহু মানুষ। ভুক্তভোগী হাজারো পরিবার এখনো ভয় ও শংকাময় জীবন কাটাচ্ছে আবার জনগনের চোখে ধূলো দিয়ে নির্বাচিত হয়ে শান্ত জনপদকে অশান্ত করে তুলবে সাবেক রক্ষনশীল আর কট্টরপন্থী আবু জাফর চেয়ারম্যান। এ জনপদের মুক্তি কি মিলবে না?
না আবার সন্ত্রাস, ত্রাস, অহংকার আর দাম্ভিকতায় চষে বেড়াবে সদর ইউনিয়নের প্রতিটা জনপদ?

57% LikesVS
43% Dislikes
Leave A Reply

Your email address will not be published.