অভিভাবক হিসেবে মায়ের নাম লেখা যাবে : হাইকোর্ট

ডেক্স রির্পোটঃ
শিক্ষার্থীদের শিক্ষা সনদ পেতে ফরম পূরণের সময় অভিভাবক হিসেবে বাবার নাম লেখার বাধ্যবাধকতা আর থাকছে না। এখন থেকে কারও বাবা না থাকলে কিংবা ইচ্ছাকৃতভাবে বাবার পরিচয় ব্যবহার করতে না চাইলে মা কিংবা আইনগতভাবে অন্য কোনো অভিভাবকের নাম যুক্ত করতে পারবেন বলে রায় ঘোষণা করেছেন হাইকোর্ট। আজ মঙ্গলবার বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলমের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করে। গত ১৬ জানুয়ারি এ বিষয়ে শুনানি শেষ হয়। পরে ১৯ জানুয়ারি আদালত রায় ঘোষণা জন্য ২৪ জানুয়ারি দিন ঠিক করে দেন। রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রিটের পক্ষের আইনজীবী আইনুননাহার সিদ্দিকা। তিনি বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মায়ের নামেও ফরম পূরণ করে পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ দিতে নির্দেশনা চেয়ে করা রিটের পরিপ্রেক্ষিতে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট। রিট থেকে জানা যায়, ২০০৭ সালের এপ্রিলে বিভিন্ন সংবাদপত্রে প্রকাশিত তথ্যের ভিত্তিতে জানা যায় যে, মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট পরীক্ষায় অংশগ্রহণের আগে শিক্ষার্থী তথ্য ফরমে অত্যাবশ্যকীয়ভাবে বাবার নাম পূরণ করতে না পারার কারণে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড, রাজশাহী ঠাকুরগাঁও জেলার এক তরুণীকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের প্রবেশপত্র দিতে অস্বীকৃতি জানায়।

পরবর্তী সময়ে এ ঘটনার যথাযথ অনুসন্ধানের ওপর পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে এবং সন্তানের অভিভাবক হিসেবে মায়ের স্বীকৃতি প্রতিষ্ঠার দাবিতে ২০০৯ সালের ২ আগস্ট তিনটি মানবাধিকার-বিষয়ক সংগঠন বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট (ব্লাস্ট), বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ এবং নারীপক্ষ যৌথভাবে জনস্বার্থে রিট করে। রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ওই বছরের ৩ আগস্ট। বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহম্মেদ এবং বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরীর সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ মানবাধিকার, সমতার পরিপন্থী ও বিশেষভাবে শিক্ষার অধিকারে প্রবেশগম্যতার বাধাস্বরূপ বিদ্যমান বৈষম্যমূলক এ বিধানকে কেন আইনের পরিপন্থী এবং অসাংবিধানিক হিসেবে ঘোষণা করা হবে না, মর্মে রুল জারি করেন। একই সঙ্গে বর্তমানে কোন কোন শিক্ষা বোর্ডে এসএসসি পরীক্ষার রেজিস্ট্রেশন কার্ড পাওয়ার ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীর বাবা ও মা উভয়ের নাম সম্পর্কিত তথ্য বাধ্যতামূলকভাবে উল্লেখ করতে হয় তার একটি তালিকা এবং যে সব যোগ্য শিক্ষার্থী তাদের বাবার পরিচয় উল্লেখ করতে অপারগ তাদের পরীক্ষায় অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে কী ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়, সে সম্পর্কে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেওয়া হয়। পরে ২০২১ সালের ৬ জুন ব্লাস্ট আবেদনকারীদের পক্ষে একটি সম্পূরক হলফনামা আদালতে দাখিল করে।

100% LikesVS
0% Dislikes
Leave A Reply

Your email address will not be published.