অবশেষে হাটহাজারীর ফরহাদাবাদের গলাকাটা লাশের রহস্য উন্মোচিত হলো!

৩৫৪

 

নাছির উদ্দিন,হাটহাজারী প্রতিনিধি

হাটহাজারী উপজেলার ফরহাদাবাদ ইউনিয়নের মন্দাকিনী এলাকায় কিছুদিন আগে খুন হওয়া বহুল আলোচিত বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান আজমের হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচিত হয়েছে। পূর্ব পরিকল্পনায় ইঁদুরের ঔষধ রাতের খাবারের সাথে মিশিয়ে খাইয়ে দিয়ে অজ্ঞান হয়ে যাওয়ার পরে ঠান্ডা মাথায় আপন ছোট ভাইকে জবাই করে খুন করেছে বড় ভাই।
সর্বশেষ কয়েকদিন আগে একটি লাইভ ভিডিওতে তার কথা বলার ধরনে খুনের রহস্যের সাথে সংশ্লিষ্ট থাকার বিষয়টি আঁচ পাওয়া যায়। আটক বড় ভাই সরওয়ারের স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দিঃ হত্যাকান্ডের পরের দিন আকদ্ হওয়ার কথা ছিল তার ছোট ভাই আজমের।

পূর্ব থেকে বিয়ের দিনক্ষণ ঠিক হয়ে যাওয়ায় বউয়ের সাথে কথা বলার জন্য দোকানে থাকতে শুরু করে আজম। এ সুযোগ কাজে লাগাতে পূর্ব পরিকল্পনা মোতাবেক ঠান্ডা মাথায় খুনের ফন্দি আঁটে বড় ভাই সরওয়ার। রাত ৮টার সময় ঘর থেকে ছোট ভাইয়ের জন্য রাতের খাবার হিসেবে দোকানে ভাত নেওয়ার সময় রান্না করা তরকারিতে মিশিয়ে দেয় ইঁদুরের ওষুধ।
তখন মুদি দোকানটিতে মানুষ আর দৈনিক হিসাবের কাজে ব্যস্ত থাকাতে যথাসময়ে খাওয়া হয়নি ছোট ভাই আজমের। এরপর ঘরে চলে যায় বড় ভাই সরওয়ার।

তারপর ঘরে গিয়ে রাত সাড়ে ১০টা বা ১১টার দিকে ঘাতক বড় ভাই মোবাইলে জিজ্ঞেস করে জানতে চাই ভাত খেয়েছে কিনা! জবাবে ছোট ভাই বলে হ্যাঁ এখন আমি খেয়েছি। একথাটি সে বলার সাথে সাথে তার বড় ভাই সরওয়ার দোকানে এসে আজমকে ডাকতে থাকে। আজম দোকান খোলার পরেই অজ্ঞান হয়ে দোকানের ভিতরে পড়ে যায়। এ সময়ে তাকে অকথ্য ভাযায় গালি গালাজ করে দেখলো যে, আজম চেতন আছে কিনা। যখন বুঝতে পারলেন খাবারের তরকারিতে মিশিয়ে দেওয়া ইঁদুরের ঔষধে কাজ হয়েছে। একপর্যায়ে রাত যখন ১২টা তখনি এবার ছুরি দিয়ে তাকে গলা কেটে জবাই করে দেয় ঘাতক বড় ভাই সরওয়ার। এরপরই সে দোকানের ভিতর থেকে সাটারের দুইটা নাট খুলে রাখে এবং রাত ৩টায় বের হয়ে তালা ও নাট দোকানের বাহির থেকে লাগিয়ে দেয়।

এরপরই সে ঘরে চলে যায়। সকালে যখন আজম ঘুম থেকে উঠেনি তখন পাশের চায়ের দোকানে বসে থাকা মানুষ গুলো তাদের ঘরে খবর দেয়। এমন খবর শুনে ঘাতক সরওয়ার, চাচাতো, ফুফাতো ভাইসহ এলাকার মানুষজনেরা এসে দোকানের উপরের টিন খুলে রিমন প্র‍বেশ করার পর আজমকে গলা কাটাতে দেখে সে চিৎকার করে। তারপর বড় ভাই সরওয়ার আগে গিয়ে লাশের পাশ থাকা কিরিচ টা স্পর্শ করে। কারন সে জানতো যদি না ধরে তাহলে তার আঙ্গুলের চাপ ওখানে আছে। তাতেই আটকে যেতে পারেন তার জন্য এমন পরিকল্পনা ঘাতক সরওয়ারের। এত সুক্ষ্মভাবে সুনিপুণ পরিকল্পনার পরেও শেষ রক্ষা হল না ঘাতক আপন বড় ভাই সরওয়ারের এমনটা জানিয়েছেন পুলিশ।

83% LikesVS
17% Dislikes
Leave A Reply

Your email address will not be published.