জাকারিয়া মাহমুদ প্রিন্স,বরিশালঃ ১৯৭১-এর আজকের এই দিনে পটুয়াখালী জেলার আলাউদ্দিন শিশুপার্কে প্রথম বিজয়ের পতাকা উত্তোলন করেন বীর মুক্তিযোদ্ধা আলতাফ হায়দার।
১৯৩৭ সালের ১৫ জুন পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জ উপজেলার দেউলী গ্রামের জন্ম নেন বীর প্রতীক আলতাফ হায়দার।
১৯৬৩ সালে তৎকালীন পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে যোগ দেন তিনি। ’৬৫-এর পাক-ভারত যুদ্ধে শিয়ালকোটের রণাঙ্গনে নায়েকের দায়িত্ব পালন করেন। ’৭০-এর দশকে দেশের উপকূলে বন্যা হলে তিনি নিজ এলাকায় ফিরে আসেন। এখান থেকেই ’৭১-এর মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন এবং নবম সেক্টরের অধীনে যুদ্ধ করেন। মুক্তিযুদ্ধকালীন মির্জাগঞ্জ উপজেলা কমান্ডারের দায়িত্ব পালন করেন।
এ সময় তার নেতৃত্বে ‘হায়দার বাহিনী’ নামেই বিশেষ ভূমিকা পালন করে। মির্জাগঞ্জ ছাড়াও বাউফল এবং বরগুনা জেলার বেতাগী, বামনা, পাথরঘাটা এলাকায় পাক হানাদারদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। ডিসেম্বরের গোড়ার দিকে প্রথমে বামনা থানা আক্রমণ করে ওই জনপদ হানাদার মুক্ত করে স্বাধীনতার পতাকা ওড়ান তিনি।
এরপর বেতাগী, পাথরঘাটা হয়ে ৮ ডিসেম্বর তৎকালীন জেলা সদর পটুয়াখালী পৌঁছান। পটুয়াখালীকে পাকহানাদার মুক্ত ঘোষণা করে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মরহুম আবুল কাশেম উকিলকে সঙ্গে নিয়ে শহীদ আলাউদ্দিন শিশুপার্কে ওড়ান স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা। মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে তিনি ও তার বাহিনীর লোকজন প্রথম পটুয়াখালী শহরে প্রবেশ করেন।
যুদ্ধোকালীন এ অঞ্চলে আলতাফ হায়দারের ভূমিকা ছিল অগ্রগণ্য। তৎকালীন বিজয়ের দিনে ৮ ডিসেম্বর তিনিই একমাত্র ব্যক্তি যিনি সহযোদ্ধাদের নিয়ে পটুয়াখালীতে জাতীয় পতাকা নিয়ে উল্লাস করেছিলেন।
বীর মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আলতাফ হায়দার-এর প্রতি রইলো সশ্রদ্ধ অভিবাদন।