ভোলার চরফ্যাসন মধুমতি ব্যাংকের সাবেক ম্যানেজার রেজাউল কবিরের বিরুদ্ধে প্রায় ১২ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। এঘটনায় ব্যাংকের বর্তমান ম্যানেজার মোঃ ইয়াসিন উদ্দিন সোহেল চরফ্যাসন থানায় সাধারন ডায়েরি করেন। এরপর রেজাউল কবির গত বুধবার ভোলা প্রেস ক্লাবে একটি সংবাদ সম্মেলন করেন।
জানাযায়, চরফ্যাসন থানায় সাধারন ডায়েরির পর টাকা আত্মসাতকারী সাবেক ব্যবস্থাপক রেজাউল কবির সংবাদ সম্মেলনে কিছু অসামঞ্জস্যপূর্ণ অভিযোগ করেন।
এ বিষয়ে মধুমতি ব্যাংক চরফ্যাসন শাখার বর্তমান ব্যবস্থাপক মোঃ ইয়াসিন উদ্দিন সোহেল বলেন, ব্যাংক একটি সুরক্ষিত ও বিধিবদ্ধ আর্থিক প্রতিষ্ঠান। ব্যাংকে টাকা দুই ভাবে আত্মসাত করা যায়, ( এক)কোন গ্রাহক কর্তৃক লোন নিয়ে তা পরিশোধ না করে আত্মসাত করা। (দুই) ব্যাংকের কর্মকর্তা কর্মচারীর যোগসাজসে টাকা আত্মসাত করা। এর বাহিরে অন্য কারো বা সাধারন কোন গ্রাহকের পক্ষে টাকা আত্মসাতের কোন সুযোগ নেই। বর্তমান ম্যানেজার আরো বলেন, কোন ব্যাংকে ৫ হাজার টাকার অনিয়ম হলেও তা ব্যাংকের দায়িত্বশীল কর্মকর্তা-কর্মচারীর উপর বর্তায়।
তিনি আরও জানান, গত রবিবার সাবেক ম্যানেজার রেজাউলের টাকা আত্মসাতের বিষয়টি সমঝোতা করতে তার নিকট আত্মীয় জনৈক একজন সাংবাদিকসহ তার কিছু স্বজন দু’দফা ব্যাংকের শাখায় এসেছিলেন। তাদের স্বজনরা টাকা আত্মসাতের সাথে জড়িত আছে এমন সন্দেহ হলে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য চরফ্যাসন থানায় ৭ জনকে আটক করা হয়েছিল।
অনুসন্ধানে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, সাবেক ম্যানেজার রেজাউল কবির প্রায় কয়েক কোটি টাকা ব্যয়ে একটি গরুর খামারসহ প্রচুর সম্পত্তির মালিক। এছাড়াও, তিনি জেলা সদরের অনেক প্রভাবশালীদের নিকট সুদে টাকা লগ্নী করেছেন। তার এক ভগ্নিপতি একটি বেসরকারী টিভি চ্যানেলের জেলা প্রতিনিধি। তার সহযোগিতায় উক্ত দুরভিসন্ধিমূলক সংবাদ সম্মেলন করার ঔদ্ধত্য দেখিয়েছেন বলে অনেকে জানিয়েছেন।
ব্যাংক সূত্রে জানাযায়, উক্ত ব্যাংকের ভোল্টে টাকা রাখার অনুমোদিত পরিধি মাত্র ১ কোটি টাকা। তাছাড়া বিধি বহির্ভূত কোন টাকা কাউকে দেওয়ার এখতিয়ার কোন ব্যাংক কর্মকর্তার নেই। এছাড়া যে কয়েকজন গ্রাহকের কথা তিনি উল্লেখ করেছেন তাদের কারোই উক্ত ব্যাংকের শাখায় কোন লোন একাউন্ট নাই।
চরফ্যাসন থানার ওসি মো. মনির হোসেন মিয়া জানান, নতুন পাশ হওয়া আইন অনুযায়ী টাকা আত্মসাতের মামলা গ্রহনের এখতিয়ার দুর্নীতি দমন কমিশনের। এ ব্যাপারে ব্যাংকের নতুন ম্যানেজার জানান, ইতোমধ্যে বরিশালের দুদক কার্যালয়ে সাবেক শাখা ব্যবস্থাপক রেজাউলের বিরুদ্ধে অভিযোগ জমা দেয়া হয়েছে। দ্রুত তার বিরুদ্ধে মামলার কার্যক্রম শুরু হবে।