মোঃ রফিক ভূইয়া খোকা,বিভাগীয় প্রধান, ময়মনসিংহঃ একাত্তরে পাকিস্তানি বাহিনী ও তাদের দোসর রাজাকার, আল বদর ও আল শামস বাহিনীর সহায়তায় এদেশের শ্রেষ্ঠ সন্তানদের পরিকল্পনা মাফিক হত্যাকান্ডই বুদ্ধিজীবী হত্যাকান্ড ( killing of intellectuals)।
১৯৭১ এর ডিসেম্বর মাসে স্বাধীনতা যুদ্ধের শেষ পর্যায়ে এসে পাকিস্তানি বাহিনী যখন বুঝতে শুরু করে যে তাদের পক্ষে যুদ্ধে জয়লাভ করা সম্ভব না তখন তারা পরিকল্পনা করে দেশটি স্বাধীন হলেও যেন সে দেশের মানুষ সাংস্কৃতিক, সামাজিক ও শিক্ষাগত দিক থেকে দূর্বল ও অকেজো হয়ে পড়ে। তাই ১৯৭১ এর ১৪ ডিসেম্বর রাতে তাদের পরিকল্পিত ভাবে এদেশের জ্ঞানীগুণী ও মুক্তবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষদের হত্যা করা হয়। এই পরিকল্পিত গণহত্যাই বাংলাদেশের ইতিহাসে বুদ্ধিজীবী হত্যাকান্ড নামে পরিচিত। এ সকল শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্মরণে প্রতিবছর ১৪ ডিসেম্বর আমাদের দেশে পালিত হয় শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস।
মূলতঃ ৭১ সালের ১০ থেকে ১৪ ডিসেম্বর গভীর রাত পর্যন্ত পাকিস্তানি সেনাবাহিনী বাংলাদেশের প্রথম শ্রেণির সকল বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করে। যাহোক এ ঘৃণিত ও বর্বরোচিত হত্যাকান্ডের মূল পরিকল্পনাকারী ছিলেন, মেজর রাও ফরমান আলী বুদ্ধিজীবীদের তালিকা প্রস্তুুত ও এ হত্যাকান্ডটি ঘটানোর পিছনে অন্যতম সহযোগী ছিল কুখ্যাত আল বদর বাহিনী।
বুদ্ধিজীবীদের তালিকায় যাদের নাম পাওয়া যায় তাদের মধ্যে অন্যতম হল ড. গোবিন্দ চন্দ্র দেব, ড. মুনীর চৌধুরী, ড. আনোয়ার পাশা, জ্যোর্তিময় গুহর্ঠাকরতা, অনুদ্বৈপায়ন ভট্টাচার্য, অধ্যাপক ডাঃ মোহাম্মদ ফজলে রাব্বি, অধ্যাপক ডাঃ আলিম চৌধুরী, শহিদুল্লাহ কায়সার, সেলিনা পারভীন, আলতাফ মাহমুদ, যোগেশ চন্দ্র ঘোষ, মেহেরুন্নেসা, ড. আবুল কালাম আজাদ প্রমুখ ব্যাক্তিবর্গসহ আরো অনেকে।
দেশ স্বাধীন হওয়ার পর তাদের ক্ষত-বিক্ষত ও বিকৃত লাশ রায়ের বাজার এবং মিরপুর বদ্ধভূমিতে পাওয়া যায়। ১৯৭২ সালে বাংলাদেশে জাতীয়ভাবে প্রকাশিত সংকলন, পত্রিকা এবং আন্তর্জাতিক ম্যাগাজিন ‘নিউজ উইক’ এর সাংবাদিক নিকোলাস টমলিনের লেখা থেকে জানা যায় বুদ্ধিজীবীদের সংখ্যা মোট ১ হাজার ৭০ জন।