লেখক,জহিরুল ইসলামঃ বাঙালীদের আত্মা ও হৃদয় এত বিরাট,এত বিশালায়তন, এত বেশি প্রশস্থ যে, বাংলার আসমান জমিনে বসবাসরত এক একটি বাঙালীর হৃদয় সুবিশাল এই বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের চেয়েও বহুগুণ প্রশস্থ। এই বিশালায়তন হৃদয়ের কিছু দেশপ্রেমিক আর নিজের জীবন আত্মোৎসর্গকারী কিছু অকুতোভয় বাঙালী মুক্তিসেনাদের অপরিসীম আত্মত্যাগের বিনিময়ে আমরা পেয়েছি আমাদের স্বাধীনতা।
১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে আনুষ্ঠানিকভাবে যৌথবাহিনীর কাছে পশ্চিম পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর আত্মসমর্পণের মাধ্যমে বাংলার স্বাধীনতা বিজয় অর্জিত হয়েছিল। কিন্তু এত বিশালায়তন হৃদয়ের বাঙালীদের মাঝেও কিছু সংকীর্ণ আর অহংকার ও আমিত্ব দাবীকারী মীরজাফরও ছিল। পশ্চিম পাকিস্তানী বাহিনীর আনুষ্ঠানিকভাবে আত্নসমর্পণের পরও তারা বাঙালীদের উপর পাক হানাদারদের সহায়তায় হত্যাকান্ড চালানোর চক্রান্তে মেতে উঠতে চেয়েছিল। কিন্তু বীর বাঙালী সেনাদের অত্যন্ত দূরদর্শিতায় তাদের চক্রান্ত ভেস্তে যায়।
আজ ১৭ ডিসেম্বর খুলনা ও ফরিদপুর জেলা শত্রু মুক্ত দিবস। এই দিন মুক্তি বাহিনী ও মিত্রবাহিনী যৌথভাবে খুলনা ও ফরিদপুর জেলায় একযোগে আক্রমণ করে, এই দুই জেলা থেকে পাক হানাদার মুক্ত করেন। ধন-দৌলত মান-সম্মানসহ সর্বস্ব হারানো খুলনা ও ফরিদপুর জেলার মানুষেরা বিজয়ের আনন্দে খুলনা সার্কিট হাউস ও ফরিদপুর সার্কিট হাউসে পৃথক পৃথক ভাবে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর আত্মসমর্পণের মধ্যে দিয়ে বাংলার জমিনে উত্তোলন করেন, স্বাধীন দেশের লাল সবুজের পতাকা।