লেখক : জহিরুল ইসলাম
পশ্চিম পাকিস্তানীরা তাদের ক্ষমতা পাকাপোক্ত করণ ও পূর্ব পাকিস্তানীদের স্বাধীনতা আন্দোলনে ফাটল সৃষ্টির লক্ষ্যে ষড়যন্ত্রের জাল সুবিস্তার করতে থাকেন।তাদের স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য বিভিন্ন ধরনের দ্বিধা-বিভক্তির নীতি গ্রহণ করতে শুরু করেন।
পশ্চিম পাকিস্তানীদের সর্বগ্রাসী ষড়যন্ত্রের কালো থাবায় যখন পূর্ব পাকিস্তানীরা দিশেহারা,ঠিক তখনই ঐ কালো ভয়ংকর গ্রুপিংনীতির ষড়যন্ত্রের থাবা থেকে পূর্ব পাকিস্তান তথা বাঙালীদের মুক্ত করার জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দীপ্তকণ্ঠে ১৯৭১ সালের ২৬শে মার্চ মধ্যরাতে স্বাধীনতার ডাক দেন।তিনি আরো ঘোষণা করেন,চূড়ান্ত স্বাধীনতা অর্জন না হওয়া পর্যন্ত সংগ্রাম চালিয়ে যেতে থাকবে।
আজ ১১ডিসেম্বর জামালপুর মুক্ত দিবস।কিছু দিবস যেমন ভুলা যায় না,তেমনি আজকের এই দিবসটিও জামালপুর বাসীরা ভুলবে না কোনদিন।স্মরণীয় হয়ে লেখা থাকবে ইতিহাসের পাতায়।
সর্বস্ব হারানো,বিসর্জিত, উৎসর্গীত,সমর্পিত করেও,অদম্য এই জামালপুর বাসীরা,নির্লজ্জ পাক হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছিল।১৯৭১ সালের ১১ ডিসেম্বর অকুতোভয় বীর মুক্তি কমান্ডার ফয়েজুর রহমানের নেতৃত্বে জামালপুর থেকে কাপুরুষ এই পাক সেনাদের হঠিয়ে জামালপুর থেকে শত্রু মুক্ত করেন।
জামালপুরে যুদ্ধের ভয়াবহতার চিত্র চোখে ভেসে উঠলে,বয়োজ্যেষ্ঠ আর প্রত্যক্ষদর্শীদের ঘা আজও শিহরে উঠে।তরুণ যুবক আর রূপবতী ষোড়শীদের উপর চলত,বিকৃত অমানবিক অত্যাচার।
সর্বস্ব বিলিয়ে দিয়েও যেন, মিলত না ঐ ক্ষণস্থায়ী জাহান্নাম থেকে মুক্তি।জাহান্নামের বিকৃত কীট যেন, নেমে এসেছিল জামালপুরে।
এক পর্যায়ে সর্বস্ব হারানো এই জামালপুর বাসীরা ১৯৭১ সালের ৯ ডিসেম্বর চতুর্মুখী আক্রমণের সুপরিকল্পিত এক ছক আঁকেন।
পূর্ব পরিকল্পিত মত,১৯৭১ সালের ১০শে ডিসেম্বর মুক্তিবাহিনী ও মিত্রবাহিনী যৌথভাবে চতুর্দিক থেকে পাক হানাদার বাহিনীর উপর আক্রমণ করে,তাদেরকে পরাস্ত করতে সক্ষম হন।
১৯৭১ সালের ১১ ডিসেম্বর।জামালপুর,যেখানে ছিল না,স্বস্তির সূর্যের আলো,উদয়াস্ত হয়নি আশার রবি,দিন-রাত-সপ্তাহ-মাস ব্যাপী চলত ধ্বংসলীলা আর নারকীয় তাণ্ডব, সেখানেই ১১ ডিসেম্বর ভোরে বীর কমান্ডার ফয়েজুর রহমানের নেতৃত্বে মুক্তি বাহিনীরা,পাক হানাদার বাহিনীর সদর দফতর পুরনো ওয়াপদা ভবনে উত্তোলন করেন,স্বাধীন দেশের লাল-সবুজের পতাকা।
( চলমান থাকবে)