লেখক,জহিরুল ইসলামঃ স্বাধীন দেশের লাল-সবুজের পতাকা।
কখনও কখনও এই সুবৃহৎ সপ্ত আকাশের নিচে বসবাস করেও যেন মনে হয়, আমরা বসবাস করছি এক কণ্টকাপূর্ণ কুঠুরির মাঝে।আসমান-জমীন অতি তুচ্ছ আর সংকীর্ণ মনে হয় যখন যুলুম নির্যাতন আর বৈষম্যের কষাঘাতে স্বাধীনতা হরণ করা হয়।কিন্তু যুলুম নির্যাতন আর বৈষম্যের কষাঘাতে জর্জরিত হলেও,সেই কুঠুরি থেকে মুক্ত হতে অনাদিকাল থেকে চলছে সংগ্রাম।
আজকের এই বীর বাঙালিজাতি ও পড়েছিল তেমনি এক যুলুম নির্যাতন আর বৈষম্যের কুঠুরির মাঝে।কিন্তু অকুতোভয় এই বীর বাঙালিকে পশ্চিম পাকিস্তান ধমিয়ে রাখতে পারেনি।সম্মিলিত আর অসাম্প্রদায়িক এই বাঙালিজাতি ১৯৭১ সালে চূড়ান্তভাবে তাদের প্রাপ্য স্বাধীনতা অর্জন করেছিল।
আজ ১০শে ডিসেম্বর ময়মনসিংহ ও মুক্তাগাছা মুক্ত দিবস।তাই আজকের এই দিনটি ময়মনসিংহ ও মুক্তাগাছাবাসীর জন্য তাৎপর্যপূর্ণ ও অবিস্মরণীয়।
১৯৭১ সালের ৯ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় মুক্তিবাহিনী ও মিত্রবাহিনী পাক সেনাদের উপর আক্রমণ করার জন্য চূড়ান্ত পরিকল্পনা করে;ব্রহ্মপুত্র নদের অপর পাড় শম্ভুগঞ্জে অবস্থান নেয়।
কিন্তু মুক্তিবাহিনী ও মিত্রবাহিনীর সুপরিকল্পিত এই আক্রমণের কথা গোপনে জানতে পেয়ে,১০শে ডিসেম্বর ভোরে কাপুরুষ এই পাক সেনারা গোপনে ময়মনসিংহ শহর থেকে পালিয়ে যায়।কিন্তু ধ্বংসই যাদের খেলা, তারা কিছু ধ্বংস না করে যায় কি করে!
তাই পালিয়ে যাওয়ার সময় ডিনামাইট দিয়ে ব্রহ্মপুত্র নদের উপর রেলওয়ে সেতুটি ধ্বংস করে দিয়েছিল। কিন্তু ধ্বংস করতে পারেনি বাঙালিদের ঐক্যবদ্ধতা, দৃঢ় মনোবল, অসাম্প্রদায়িক, আর ভ্রাতৃত্বের দৃঢ় বন্ধন।
১০ তারিখ ভোরের আঁধার ভেদ করে যেন,উঠেছিল নতুন এক সূর্য।একে একে চারদিক থেকে মুক্তিবাহিনী ও মিত্রবাহিনীরা ময়মনসিংহ সার্কিট হাউজে জমায়েত হতে থাকেন।১৯৭১ সালের ১০শে ডিসেম্বর ময়মনসিংহের সার্কিট হাউজে ছেলে হারা মা,ভাই হারা বোন,স্বামী হারা স্ত্রীর ক্রন্দনের মাঝেও এক অনাবিল বিজয়ের আনন্দে উত্তোলন করা হয়,স্বাধীন দেশের লাল-সবুজের পতাকা।
( চলমান থাকবে)