লেখক : জহিরুল ইসলামঃ আমি শান্তিতে থাকতে চাই।স্বাধীন সার্বভৌম ভূখণ্ডে আমি কারো অধীন এক ক্ষুদ্র দাসের মত ভক্তি-বিগলিতপূর্ণ চাটুকারিতা করে,শির নত করে গোলাম হয়ে থাকতে চাই না।স্বাধীন হওয়ার পরও যদি সহস্র-লক্ষ-কোটি অর্থ সম্পদে পরিপূর্ণ ভূখণ্ডে অসম বণ্টনের দুশ্চিন্তা আর দুর্ভাবনার অজস্র লাথি-ঘুষি খেয়ে অন্তর সর্বদা অস্থির ও পেরেশান থাকে,তবে এমন স্বাধীন ভূখণ্ড আমি চাই না।
আমার স্বাধীন দেশ হবে অপার-অসীম দয়া-মায়াপূর্ণ এক অসাম্প্রদায়িক দেশ।যেখানে কেউ থাকবে না আইনের উর্ধ্বে।ধনী-গরীবের ভেদাভেদ ভুলে চিরস্থায়ী শান্তি ও মনের প্রশান্তির শীতলতাই হবে আমার স্বাধীনতা।আমার আত্মিক প্রশান্তিই, আমার স্বাধীনতা।
১৯৭১ সালের ২৩শে ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমেদ যুদ্ধাহত সদ্য স্বাধীন দেশকে পুনর্গঠনের জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত সরকারি কর্মচারীদের উদ্দেশ্যে বলেন,বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তার সোনার বাংলার যে রুপরেখা তৈরি করেছেন তার বাস্তবায়ন করার জন্য সকলকেই প্রস্তুত থাকতে হবে।স্বাধীন বাংলাদেশের কর্মচারীদের কর্মতৎপরতায় লাল-ফিতার কোন স্থান নেই।অন্যায়-কারীকে ক্ষমা করা হবে না এবং অন্যায়ভাবে কাউকে শাস্তিও দেওয়া যাবে না।অভীষ্ট লক্ষ্য অর্জনের জন্য ৯ (নয়)মাসের যুদ্ধের ক্ষয়ক্ষতি,অক্লান্ত পরিশ্রম করে আপনাদেরকেই তা ২ (দুই) মাসেই পূরণ করতে হবে।
সদ্য স্বাধীন দেশের বেদনাক্লিষ্ট ও দুঃখে জর্জরিত মানুষের মুখে হাসি ফুটানোর জন্য তাদের নেতৃত্ব ছিল অতুলনীয়। অন্যায়কে কখনই বরদাশত করতেন না।দুঃখী মানুষের অশ্রুসিক্ত নয়ন দেখলে তাদের আবেগপূর্ণ ভালোবাসার দরিয়া উথলে উঠত।
স্বাধীনতা অর্জনের এত বৎসর পরও তাদের নেতৃত্ব ভুলতে পারেনি বাঙালী জাতি।আজ তাদের নেতৃত্বের গুণাবলিকে আলোচনার এক পুঁথিবদ্ধ ইতিহাস বানিয়ে,কার্য থেকে বহুদূর সরিয়ে রেখে, লাল সবুজের পতাকাকে আঁকড়ে ধরেছে স্বাধীনতা বিরোধী এক চাটুকারিতাপূর্ণ শকুনের দল।
( চলমান থাকবে)