মেহেদী হাসান, জেলা প্রতিনিধি, জামালপুরঃ জামালপুর সদর হাসপাতালে চিকিৎসকের গাফিলতিতে রোগী মৃত্যুর অভিযোগ স্বজনরা জরুরি বিভাগে হামলা ও ভাঙচুর এবং হাসপাতাল গেটে দুপক্ষের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়েছে। এ ঘটনার পর থেকে জরুরি বিভাগের কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।
গত শুক্রবার (২৫ ডিসেম্বর) দুপুর দেড়টা থেকে বিকেল ৫ টা পর্যন্ত দফায় দফায় দুপক্ষের সংঘর্ষ হয়। হামলায় জরুরি বিভাগের মেডিক্যাল অফিসার ডা. চিরঞ্জীব সরকার ও চারজন ইন্টার্ন চিকিৎসক গুরুতর আহত হয়েছেন বলে জানাযায়।
রোগীর কয়েকজন স্বজনরা শুক্রবার দুপুর ১ দিকে জামালপুর শহরের ইকবালপুর এলাকার করিমন (৬৪) নামে এক রোগী হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে যান । এ সময় কর্তব্যরত মেডিক্যাল অফিসার ডা. চিরঞ্জীব সরকার প্রাথমিক পর্যবেক্ষণ করে রোগী করিমনকে হাসপাতালের মহিলা সার্জারি ওয়ার্ডে ভর্তি করাতে বলেন। রোগীকে ভর্তি করিয়ে অক্সিজেন দেন ইন্টার্নি চিকিৎসক। কিন্তু কয়েক মিনিটের মধ্যে রোগী আরো শঙ্কটাপন্ন হয়ে পড়লে রোগীর স্বজনরা বেশি মাত্রায় অক্সিজেন দিতে বলেন। কিন্তু দায়িত্বরত চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া বেশি মাত্রায় অক্সিজেন দিতে রাজি না হওয়ায়, রোগীর স্বজনদের সাথে ইন্টার্ন চিকিৎসকদের তর্কের একপর্যায়ে রোগীর স্বজনরা চারজন ইন্টার চিকিৎসককে মারধর করেন।
পরবর্তিতে রোগীর স্বজনরা রোগীকে ওয়ার্ড থেকে তুলে নিয়ে পুনরায় জরুরি বিভাগে নিয়ে গেলে মেডিক্যাল অফিসার ডা. চিরঞ্জীব সরকার রোগীকে মৃত ঘোষণা করেন।
ঠিক সেই সময় রোগীর স্বজনরা অবহেলায় তাদের রোগীর মৃত্যুর অভিযোগ তুলে জরুরি বিভাগে হট্টগোল সৃষ্টি করে। একপর্যায়ে রোগীর স্বজনরা জরুরি বিভাগের মেডিক্যাল অফিসার ডা. চিরঞ্জীব সরকারের কক্ষে হামলা, তাকে বেধড়রক মারধর, জরুরি বিভাগের আরো দুটি কক্ষের আসবাবপত্র ও চিকিৎসা সরঞ্জাম ভাংচুর এবং ফাইল খাতাপত্র তছরুপ করেন।
সেখানে শেখ হাসিনা মেডিক্যাল কলেজের বিভিন্ন বর্ষের বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী ও হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসকদের সাথে রোগীর পক্ষের লোকজনদের দুই দফা ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে ব্যাপক লাঠিচার্জ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এদিকে রোগীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে জরুরি বিভাগে হামলা, ভাঙচুর এবং চিকিৎসকদের মারধর করে আহত করার ঘটনার পর থেকে হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।
সন্ধ্যা ৭ টার দিকে হাসপাতালে গিয়ে দেখা গেছে, জরুরি বিভাগের আসবাবপত্র তছরুপ অবস্থায় পড়ে আছে। কোনো চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মী নেই।
জামালপুর সদর থানার ওসি মো. রেজাউল ইসলাম খান বলেন, সদর হাসপাতালে গন্ডগোলের ঘটনায় কোনো পক্ষ থানায় অভিযোগ নিয়ে আসেনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।