বিশেষ প্রতিনিধি, চাঁদপুর : মাসের পর মাস নীরব চাঁদাবাজির শিকার হচ্ছেন নারায়ণগঞ্জ-চাঁদপুর, চাঁদপুর-নারায়ণগঞ্জগামী লঞ্চযাত্রীরা। করোনাকালীন সময়ে স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করতে সরকার নির্ধারিত অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করলেও তা আবার বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যখন। তখন চতুরতার সঙ্গে মাসের পর মাস ধরে যাত্রীদের কাছ থেকে ৫ টাকা করে বেশি নিচ্ছেন লঞ্চ মালিকরা।
নারায়ণগঞ্জ লঞ্চ টার্মিনাল থেকে প্রতিদিন ১৫টি লঞ্চ ছেড়ে যায় চাঁদপুরের উদ্দেশ্যে। আবার ১৫ লঞ্চ চাঁদপুর থেকে ছেড়ে আসে নারায়ণগঞ্জ। প্রতিটি লঞ্চের গড় যাত্রী কমপক্ষে ২শ’। যাওয়া ও আসায় গড় লঞ্চ ২৬টি হলে গড় যাত্রী ৫ হাজার ২ শত। এতে করে দৈনিক পকেট কাটা হচ্ছে ২৬ হাজার টাকা।
অন্যদিকে নারায়ণগঞ্জ লঞ্চ ঘাট থেকে মতলবের উদ্দেশ্যে প্রতিদিন মতলব ছেড়ে যায় কমপক্ষে ১৫ লঞ্চ, আবার মতলব থেকে নারায়ণগঞ্জ আসে সমপরিমাণ লঞ্চ। লঞ্চগুলোতে গড় যাত্রী সর্বনিম্ন ১শত ধরা হলে যাওয়া আসায় গড় যাত্রী ৩ হাজার। ৩ হাজার যাত্রীর কাছ থেকে প্রতিদিন অতিরিক্ত আদায় করা হচ্ছে ১৫ হাজার টাকা। মোট হিসাব করলে গড়ে দৈনিক ৮ হাজার ২ শত যাত্রীর কাছ থেকে অতিরিক্ত আদায় করা হচ্ছে ৪১ হাজার টাকা।
মাস শেষে এই হিসাব দাঁড়ায় ১২ লাখ ৩০ হাজার টাকা। গত ৫ মাসে চাঁদপুরের মানুষ নীরব চাঁদাবাজির স্বীকার হয়ে হারিয়েছে কমপক্ষে ৬১ লাখ ৫০ হাজার টাকা। গত কয়েক মাস ধরে লঞ্চের কেরানীদের সঙ্গে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করা নিয়ে যাত্রীদের মধ্যে বাকবিতন্ডা লেগেই আছে। আবার অনেকের মধ্যে বিরাজ করছে চাপা ক্ষোভ। কেন ৫ টাকা করে বেশি নিচ্ছেন এমন প্রশ্নের জবাবে লঞ্চের কেরানীরা হাতে তুলে দেন লঞ্চ মালিক সমিতির কোনো এক সদস্যের নম্বর।
চাঁদপুরের মতলব উত্তরের আব্দুল বারী বলেন, অতিরিক্ত ভাড়া আদায় নিয়ে বেশ কয়েকবার প্রতিবাদ করেছি আমি। আমার সঙ্গে কয়েকটা লঞ্চের কেরানীদের সঙ্গে এ বিষয়ে জানতে চাইলে নারায়ণগঞ্জ লঞ্চ মালিক সমিতির সভাপতি বদিউজ্জামান বাদল বলেন, মালিক সমিতি থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করার কোনো নির্দেশনা দেওয়া হয়নি। তবে লোকজন স্বপ্রণোদিতভাবেই বেশি ভাড়া দিচ্ছে, কেউ কোনো দিন অভিযোগও করেননি। চোখের সামনে কিভাবে দীর্ঘদিন ধরে এমন নীরব চাঁদাবাজি চলছে জানতে চাইলে নারায়ণগঞ্জ জেলা নৌ-নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগের সহকারী পরিচালক বাবু লাল বৈদ্য বলেন, বিষয়টি আমার জানা ছিল না। খুব দ্রুত এ বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা নিবেন বলেন জানান তিনি।