ছোট থেকেই স্বপ্ন ছিল সফল ইজ্ঞিনিয়ার হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার। একটি বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর পাশও করেছিলেন তামেরা কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইজ্ঞিনিয়ারিং এ। এবার সময় এসেছিল নিজেকে প্রমাণ করে পেশাগত জীবনে প্রবেশ করার। কিন্তু বৈশ্বিক মহামারী করোনার থাবায় পরিকল্পনা এলোমেলো হয়ে গেল তার। ঘরে বসে চাকুরীর প্রস্তুতি নিতে নিতে একদিন তার মনে হলো এভাবে আর নয়। নিজেকে একটু অন্যভাবে প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা করা যাক।
তারপর তার মনে হয় যে শুধু সে নয়, তিনি প্রতিষ্ঠিত হবেন উনার প্রাক্তন স্কুল শিক্ষিকা মাকে সাথে নিয়ে। কারণ তার মায়ের অনেক প্রতিভা থাকার পরেও নিজেকে মেলে ধরতে পারেন নি সময় ও সুযোগের অভাবে।
একদিন তামেরা তার মাকে বললেন, ”তুমি তো আমাদের কখনো বাইরের খাবার কিনে খেতে দিতে না, ভেজাল ও অস্বাস্থ্যকরের জন্য। সবসময় বিভিন্ন মজার মজার খাবার বানিয়ে খাইয়েছো আমাদের। এখন আমরা কি পারি না সকলের জন্যই ভেজালমুক্ত খাবারের ব্যবস্থা করতে? সবাই তো পারে না বানিয়ে খেতে, বাধ্য হয়ে জেনে শুনেই ভেজাল ও অস্বাস্থ্যকর খাবার খায়।”
মেয়ের পরামর্শকে অগ্রাহ্য করতে পারেন নি শবনম জাহান। এরপর দিনরাত অক্লান্ত পরিশ্রম করে পরিকল্পনাকে বাস্তবে রূপ দিতে লেগে পড়েন তামেরা, তৈরী হয় প্রিয়ঙ্গু, যার ট্যাগলাইন ই থাকে স্বাদে মানে ১০০ ভাগ খাঁটি।
মায়ের বানানো সবচেয়ে সুস্বাদু পণ্যগুলো একের পর এক সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে সকলের সামনে আনতে থাকেন তামেরা এবং তার খাঁটি পণ্যগুলো সকলের মাঝে বেশ সাড়া ফেলতে সক্ষম হয়। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে অর্ডার আসতে থাকে কয়েকদিনের মাঝেই।
প্রিয়ঙ্গু এর বেশ কিছু পণ্যের মধ্যে অন্যতম হলো দেশীয় মৌসুমী ফলের জেলি ও জ্যাম, যেটাতে কোনো রকম কৃত্রিম রং, প্রিজারভেটিভ বা কেমিক্যাল কিছুই ব্যবহার করা হয় না। শুধুমাত্র ফলের রস ও চিনি দিয়ে তৈরী করা হয় যাতে ফলের পুষ্টিগুণ বজায় থাকে। আপেল কমলার জেলি সকলে খেয়ে থাকলেও টাটকা দেশি ফল দিয়েও যে কত মজাদার ও স্বাস্থ্যসম্মত জেলি ও জ্যাম বানানো যায় তা প্রমাণ করেছেন শবনম জাহান তার ৩০ বছরের জেলি ও জ্যাম বানানোর অভিজ্ঞতা দিয়ে। এছাড়াও রয়েছে বিভিন্ন রকম হালুয়া, পাঁপড়, মুখরোচক পদ এবং ঐতিহ্যবাহী হাতে কাটা সেমাই পিঠা।
আর সেইসব পণ্যকেই সকলের কাছে তুলে ধরছেন তামেরা নিজের বুদ্ধিমত্তা ও পরিশ্রমের মাধ্যমে। তার করা আকর্ষণীয় প্যাকেজিং, ব্র্যািন্ডিং এবং মার্কেটিং পলিসি প্রিয়ঙ্গু এর খাঁটি পণ্যকে জনপ্রিয় করে তুলছে সকলের মাঝে। এটাই ছিল ইজ্ঞিনিয়ার তামেরা তাসনিমের উদ্যোক্তা হয়ে ওঠার গল্প
মাশাআল্লাহ্
ধন্যবাদ,আমাদের সাথে থাকার জন্য।
ধন্যবাদ
শুভ কামনা রইল
ধন্যবাদ,সাহসী কর্মী।