মো:নূর-ই আলম,র্কো-অডিনেটর,চাঁদপুর জেলা : ইতিহাস-ঐতিহ্যের শহর চাঁদপুর। ১৭৭৯ খ্রিঃ ব্রিটিশ শাসনামলে ইংরেজ জরিপকারী মেজর জেমস রেনেল তৎকালীন বাংলার যে মানচিত্র এঁকেছিলেন তাতে চাঁদপুর নামে এক ছোট্ট জনপদের নাম উল্লেখ ছিল। চাঁদপুর শহরের নামকরণে রয়েছে নানা মতভেদ। বার ভূঁইয়াদের আমলে চাঁদপুর অঞ্চল বিক্রমপুরের জমিদার চাঁদ রায়ের দখলে ছিল। এ অঞ্চলে তিনি একটি শাসনকেন্দ্র স্থাপন করেছিলেন। ইতিহাসবিদ চাঁদপুরের কৃতি সন্তান জে এম সেন গুপ্তের মতে, চাঁদরায়ের নামানুসারে এ অঞ্চলের নাম হয়েছে চাঁদপুর। আবার কারো কারো মতে, কোরালিয়ার চাঁদ ফকিরের নাম অনুসারে চাঁদপুরের নামকরণ বলে ধারণা করা হয়। ১৮৭৮ সালে প্রথম চাঁদপুর ‘মহকুমার’ সৃষ্টি হয়। ১৮৯৬ সালের ১ অক্টোবর চাঁদপুর শহরকে পৌরসভা হিসেবে ঘোষণা করা হয়। ১৯৮৪ সালে চাঁদপুর জেলা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। ১৯৬০ খ্রিঃ পর্যন্ত চাঁদপুর এক সময় ত্রিপুরা বিভাগের অধিনে ছিল। চাঁদপুর মহকুমায় ৫ টি থানা ছিল। চাঁদপুর, ফরিদগঞ্জ, হাজীগঞ্জ, কচুয়া ও মতলব।রূপালী ইলিশের শহর চাঁদপুরের নতুন নাম ‘দ্যা সিটি অব হিলসা’। অর্থাৎ ইলিশের বাড়ি চাঁদপুর। চাঁদপুর দেশের প্রথম ব্র্যান্ডিং জেলা হিসেবে দেশে সুনাম অর্জন করেছে। ইলিশ রপ্তানি, ইলিশ বাণিজ্যের এক সম্ভাবনার নাম এই চাঁদপুর শহর। পদ্মা, মেঘনা আর ডাকাতিয়ার মিলন মেলায় চাঁদপুরের সৌন্দর্য আরো বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রতিদিন শত-সহস্র ভ্রমণ প্রিয়সী মানুষ মোলহেড, ত্রি-মহনার অপরূপ সৌন্দর্যে নিজেদের মনকে রাঙিয়ে তোলেন।নদী মাতৃক দেশ আমাদের প্রিয় বাংলাদেশ। যতগুলো বড় নদী দেশের আনাচে-কানাচে রয়েছে তাদের মধ্যে বড় দুটিই চাঁদপুরের পাশ দিয়ে বয়ে গেছে। সেই অপরূপ পদ্মা, মেঘনার মহামিলন দেখতে দূর-দূরান্ত থেকে দর্শনার্থীরা ছুটে আসেন চাঁদপুর জেলার সৌন্দর্য উপভোগে ডাকাতিয়া ও মেঘনায় অসংখ্য মানুষের জীবিকার উৎস রয়েছে। ব্যবসা-বাণিজ্যের অন্যতম ক্ষেত্র চাঁদপুর। নদী বন্দর হওয়ায় বেশীরভাগ মালামাল নৌপথে আসে চাঁদপুরে। ব্যবসায়ের জন্য প্রসিদ্ধ স্থান চাঁদপুর পুরান বাজার। বর্তমানে ইতিহাস, ঐতিহ্যের শহর চাঁদপুর দেশে এখন রোল মডেল। ব্র্যান্ডিং ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে প্রয়োজন কিছু ভাল মানুষ আর তাদের কাজের।
সেই অভাবটা পূরণে প্রশাসনের সাথে সাথে সাধারণ মানুষেরও উচিত এগিয়ে এসে নিজের শহরকে পরিষ্কার-পরিছন্ন রেখে তা বিশ্বের দরবারে তুলে ধরা।